ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগের জন্য ফ্রান্সের প্রতি আহ্বান মোমেনের

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

বিনিয়োগের জন্য ফ্রান্সের প্রতি আহ্বান মোমেনের

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া ব্যবসাবান্ধব সহজ আইনের কথা বিবেচনা করে দেশের অবকাঠামো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও আইসিটি খাতে বিনিয়োগ করতে ফরাসী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যবসাবান্ধব এফডিআই আইন, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, সহজে রেমিটেন্স প্রেরণ এবং অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক বেতনে দক্ষ জনশক্তির সহজলভ্যতা বজায় থাকায় ফরাসী কোম্পানিগুলো বিনিয়োগের একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে ঢাকাকে পছন্দ করতে পারে। -খবর বাসসর। মঙ্গলবার এক বার্তায় বলা হয়, সোমবার প্যারিসে ফরাসী সিনেট আয়োজিত বাংলাদেশ-ফ্রান্স ইকোনমিক ফোরামে বক্তব্য দেয়ার সময় মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। অর্ধ-দিবসব্যাপী চলা এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স উভয় দেশের বেসরকারী খাতের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলোপমেন্ট অথোরিটি (বিআইডিএ), বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথোরিটি (বিইজেডএ), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথোরিটি এবং সংশ্লিষ্ট ফরাসী সংস্থাগুলো অংশ নেয়। অর্থনৈতিক কূটনীতির বিষয় তুলে ধরতে এবং বাধ্য হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের ওপর ফের আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করতে ইউরোপের চার দেশ সফরের অংশ হিসেবে মোমেন বর্তমানে চার দিনের সফরে প্যারিসে রয়েছেন। মন্ত্রী মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে বাংলাদেশের সাফল্য এবং উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার রোডম্যাপের কথা উল্লেখ করে নিশ্চিত করেন যে সকলকে সঙ্গে নিয়েই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে, কেউই পিছিয়ে পড়ছে না। ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন, ফ্রান্স সিনেটের সিনেটর জ্যাকি ডেরোমেডি ও আর জেরোমি ডুরেই এবং ফ্রেঞ্চ মিনিস্ট্রি অব ইউরোপ, ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাস, ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি, বিজনেস ফ্রান্স ও এমইডিইএফ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এর আগে মন্ত্রী মিনিস্ট্রি ফর ইউরোপ এবং ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি জিন ব্যাপ্টিস্ট লেমোইনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি ফ্রান্সের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের দায়িত্ব আছেন। বৈঠকে মোমেন রোহিঙ্গা সঙ্কট ইস্যুটি তুলে ধরে ফ্রান্স ও অন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর প্রতি রোহিঙ্গাদের যতদ্রুত সম্ভব তাদের নিজ ভূমি রাখাইন রাজ্যে নিরাপদে ও সম্মানজনকভাবে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগের জন্য অনুরোধ জানান। এ সময় তিনি গত এক দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরে সেখানে বিনিয়োগের জন্য ফ্রান্সের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই ফরাসী বিনিয়োগের সাফল্যের উদাহরণ তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ সরকার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য যে সুযোগ দিচ্ছে তা পত্যক্ষ করার জন্য ফরাসী ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক অবস্থান গ্রহণের জন্য স্টেট সেক্রেটারি লিমোইনে ফরাসী সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানান ও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানান, তিনি আগামী বছরের গোড়ার দিকে ফ্রান্সের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে তারা সম্মত হন। বাংলাদেশ-ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ফ্রেঞ্চ সিনেটে পৌঁছালে ফ্রান্স-সাউথ ইস্ট এশিয়া ইন্টার-পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের সভাপতি সিনেটর জ্যাকি ডারমোনি তাকে অভ্যর্থনা জানান।
×