ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লিভারপুলকে থামাল ইউনাইটেড

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২২ অক্টোবর ২০১৯

লিভারপুলকে থামাল ইউনাইটেড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে লিভারপুল। নতুন মৌসুমে এখন পর্যন্ত কোন ম্যাচেই হার দেখেনি জার্গেন ক্লপের দল। শুধু তাই নয়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে টানা ১৭ ম্যাচে জয়ের রেকর্ডও গড়েছিল অলরেডরা। তবে এর বেশি এগুতে পারেনি মানে-ফিরমিনোরা। অবশেষে লিভারপুলের জয়রথ থামিয়ে দিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। রবিবার ওল ট্র্যাফোর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে প্রিমিয়ার লীগের হাইভোল্টেজ ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে লিভারপুল। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো পয়েন্ট হারিয়েছে অলরেডরা। প্রতিপক্ষের মাঠে এদিন এ্যাডাম লালনার শেষ মুহূর্তের গোলে কোন রকমে ড্র করে ম্যাচ শেষ করে লিভারপুল। ইংলিশ ফুটবলে সবচেয়ে সফল দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। লীগে সর্বোচ্চ ২০ বারের চ্যাম্পিয়ন তারা। যদিওবা ২০১২-১৩ মৌসুমের পর আর কোন লীগ শিরোপা জিততে পারেনি ম্যানইউ। অন্যদিকে, শিরোপার জয়ের ক্ষেত্রে ইউনাইটেডের পরেই অবস্থান লিভারপুলের। অলরেডদের লীগ শিরোপা জয়ের সংখ্যা ১৮। তবে দ্বিতীয় সেরা দলটি সর্বশেষ লীগ শিরোপা জিতেছিল কবে জানেন? ১৯৮৯-৯০ সালে! অর্থাৎ গত তিন দশক ধরে শিরোপা-খরায় ভুগছে তারা। গত মৌসুমে অবশ্য শিরোপা ঘুচানোর দারুণ সুযোগ এসেছিল অলরেডদের। প্রিমিয়ার লীগের শেষদিনের শেষ ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে গেছে তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের। ম্যানচেস্টার সিটির কাছে পেরে উঠতে পারেনি জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা। যে কারণে লিভারপুল-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের লড়াই মানেই বাড়তি উত্তেজনা। তবে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হওয়ার আগে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী ছিল না। যদিও সোলসজায়েরের ডাকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউনাইটেডের কাছ থেকে এদিন বাড়তি কিছু আশা করা হয়েছিল। ইনজুরির কারণে লিভারপুলের জার্সিতে মাঠে নামতে পারেননি মিসরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহ। আক্রমণভাগে মিসরীয় এই ফরোয়ার্ডের অনুপস্থিতি দারুণভাবে অনুভূত হয়েছে। যদিও কাফ ইনজুরি কাটিয়ে দুই মাস পর গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকারকে স্বাগত জানিয়েছে লিভারপুল। সোলসজায়ের তার ফর্মেশন পরিবর্তন করে ৩-৫-২ পদ্ধতিতে দল সাজিয়েছিলেন। মূলত লিভারপুলের দুই ইন-ফর্ম ফুল-ব্যাক ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ড ও এ্যান্ডি রবার্টসনকে মোকাবেলা করার জন্যই এই পরিবর্তন। লীগ টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটির কিছু সুযোগও এই ফর্মেশনে দারুণভাবে রুখে দিয়েছে ইউনাইটেড। প্রথমার্ধে লিভারপুলের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি সৃষ্টি করেছিলেন সাদিও মানে। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে বল পেয়ে মানের কাট ব্যাক থেকে অবশ্য রবার্তো ফিরমিনো ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে খুব কাছে থেকে পরাস্ত করতে পারেননি। আন্তর্জাতিক বিরতির আগে দুটি ম্যাচে ইউনাইটেড কোন গোল করতে পারেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে এসেছে শক্তিশালী লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচে। ডিভোক ওরিগিকে রুখতে গিয়ে ভিক্টর লিন্ডেলফের বিপরীতে রেফারি মার্টিন এ্যাটকিনসন কোন ফাউল ধরেননি। সেই সুযোগে ড্যানিয়েল জেমসের নিখুঁত ক্রস থেকে রাশফোর্ড এ্যালিসনকে পরাস্ত করলে ৩৬ মিনিটেই এগিয়ে যায় ম্যানইউ। যদিও গোলটি নিশ্চিতের জন্য ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হয়। টাচলাইনে লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপকে তখন বেশ হতাশ মনে হয়। মিনিটখানেক পর মানের গোলটি ভিএআর’র কারণে হ্যান্ডবল নিশ্চিত হওয়ায় বাতিল করা হলে সফরকারীদের হতাশাই শুধু বেড়েছে। বিরতির পরও ক্লপ তার খেলার কৌশলের কোন পরিবর্তন আনেননি। তারপরও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ লিভারপুলের পক্ষেই ছিল। কয়েকটি গোলের সুযোগও সৃষ্টি করেছিল তারা। তবে ইউনাইটেডও কাউন্টার এ্যাটাক থেকে রাশফোর্ড ও ফ্রেডের ব্যর্থতায় ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারেননি। ম্যাচ শেষে ২০ মিনিট আগে বদলি বেঞ্চ থেকে উঠে আসেন লালনা। এবারের মৌসুমে এর আগে একটি ম্যাচে মাত্র ১০ মিনিট খেলেছিলেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। ৮৫ মিনিটে এ্যান্ডি রবার্টসনের দারুণ এক ক্রস থেকে লালনা গোল করলে সমতায় ফিরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এরপর আর কোন গোল না হয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ে দুই দল। এই ড্রয়ের ফলে ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে লীগ টেবিলের শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে লিভারপুল। কিন্তু আক্ষেপ রয়ে গেল অলরেডদের। লীগে টানা ১৮ ম্যাচ জিততে না পারার। তবে ম্যাচ জিততে না পারার হতাশাটা বেশি ছিল ইউনাইটেডের। ৯ ম্যাচে মাত্র ১০ পয়েন্ট নিয়ে ইউনাইটেড রেলিগেশন অঞ্চল থেকে মাত্র দুই পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের ১৩তম স্থানে রয়েছে।
×