ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘কিংবদন্তির ভাগীরথীর’ মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশিত: ১১:২৬, ২২ অক্টোবর ২০১৯

‘কিংবদন্তির ভাগীরথীর’ মোড়ক উন্মোচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা অবলম্বনে মনি হায়দার রচিত ‘কিংবদন্তির ভাগীরথী’ উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচন হয় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সোমবার বিকেলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক ছিলেন প্রাবন্ধিক গবেষক ড. সরকার আবদুর মান্নান ও নাট্যজন মাসুম রেজা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালীর অহঙ্কার, পাশাপাশি এই যুদ্ধে তৎকালীন পাকবাহিনীর বর্বরতা খুবই বেদনাদায়ক। মনি হায়দার সেই বর্বরতারই এক খ-চিত্র তুলে ধরেছেন তার ‘কিংবদন্তির ভাগীরথী’ উপন্যাসে। একাত্তরে মহকুমা শহর পিরোজপুরের উপকণ্ঠে এক রমনী ভাগীরথীর জীবনে যে মর্মান্তিক, নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটেছিল তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। কেবল তিক্ত সর্বনাশ হয়, জীবনটাও নির্মম পাশবিক খেলায় জান্তব যন্ত্রণায় বিসর্জন দিয়েছিল সেই মহীয়সী। পাকিস্তানী আর্মি তখন আমাদের কন্যা, ভগ্নি, জননীকে পিরোজপুর শহরে গাড়ির পেছনে বেঁধে ইটপাথরের রাস্তার ওপর দিয়ে টেনে টেনে পৈশাচিক উল্লাসে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ভাগীরথীকে ধরে এনে পিরোজপুর সরকারী স্কুলে পাকিস্তানী আর্মির ক্যাম্পে আটকে রাখে। তার ওপর যখন তখন চলত শারীরিক নির্যাতন। এই নরকের মধ্যেও ভাগীরথী ভুলতে পারেনি তার চার বছরের প্রিয় পুত্র লালশ্যামকে। ভাগীরথীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের এ্যামবুশে অনেক পাকিস্তানী সৈন্য মারা যায়। ফলাফল ভাগীরথীর মৃত্যুর পরোয়ানা। কি নৃশংস যন্ত্রণায় ভাগীরথী তিলে তিলে মৃত্যুবরণ করেছিল ‘কিংবদন্তির ভাগীরথী’ উপন্যাসে সেই মৃত্যুযন্ত্রণার মর্মভেদী আর্তচিৎকার তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বেহুলাবাংলা প্রকাশিত ‘কিংবদন্তির ভাগীরথী’ উপন্যাসটি উৎসর্গ করা হয়েছে পাকিস্তানী বাহিনীর নির্মম আগ্রাসনে ১৯৭১ সালে বাংলার লাখ লাখ মা-বোন-স্ত্রী জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, হারিয়েছেন পবিত্র সম্ভ্রম, সেইসব মহান মহীয়সীদের স্মৃতির প্রতি।
×