ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গুলশানে কাল শুরু মেলা

রাজধানীতে তাঁত ও কারুপণ্য মিলবে এক ছাদের নিচে

প্রকাশিত: ১১:২২, ২২ অক্টোবর ২০১৯

রাজধানীতে তাঁত ও কারুপণ্য মিলবে এক ছাদের নিচে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঐতিহ্যবাহী তাঁত, কারুপণ্য মিলবে রাজধানীতে এক ছাদের নিচে। একই জায়গায় পাওয়া যাবে জামদানি শাড়ি, বেনারসি শাড়ি, টাঙ্গাইল শাড়ি, রাজশাহীর সিল্ক, শতরঞ্জি, বাঁশ বেতের পণ্য কিংবা পাহাড়ী কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য। ঐতিহ্যবাহী এসব পণ্য তাঁতপণ্য মেলা ‘হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল’ শুরু হচ্ছে রাজধানীর গুলশানে। আয়োজকরা মনে করছেন এই প্ল্যাটফর্মে তাঁতি ও ডিজাইনার উভয় অনেক কিছু শিখতে পারে। আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে চার দিনব্যাপী গুলশানের গার্ডেনিয়া গ্র্যান্ড হলে চলবে এই মেলা। যা শেষ হবে ২৬ অক্টোবর। এসএমই ফাউন্ডেশন ও এ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশ (এএফডিবি) যৌথভাবে দ্বিতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজন করছে। সোমবার রাজধানীর গার্ডেনিয়া গ্র্যান্ড হোটেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এবারের মেলার বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম এবং এএফডিবির সভাপতি মানতাশা আহমেদ মেলার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। ফেস্টিভ্যালের উদ্দেশ্য নিয়ে বলেন, গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ হিসেবে দৈনন্দিন জীবনে তাঁতপণ্যের ব্যবহার প্রদর্শন করা, তাঁতপণ্যের প্রচার এবং বাজারজাতের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তাঁতপণ্য প্রস্তুতকারক, শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনার এবং ক্রেতাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, আন্তর্জাতিক বাজারের সংযোগ স্থাপন এবং বাংলাদেশের এই পণ্যের বিলুপ্তি রোধ করাই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য। ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের ফলে বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে তাঁতপণ্য ও তাঁতিদের সার্বিক কল্যাণের মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আয়োজকরা মনে করছেন। গতবছর ৭টি সেক্টরের বিভিন্ন পণ্য তুলে ধরা হলেও এবার তা বেড়ে হয়েছে ১৫টি সেক্টর। তাই পণ্যের সমাহারও বেশি হবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা। এছাড়াও এই মেলা বিক্রি মূল্য উদ্দেশ্য না হলেও গত বার মেলাতেই ৩৫ লাখ টাকার বিক্রি হয়েছিল। আর বছরব্যাপী বিক্রির অনেক অর্ডার পেয়েছিল বিভিন্ন ব্যক্তিরা। এবারও বিক্রিতে যেমন সাড়া থাকবে তেমনি অর্ডার আরও বেশির আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁতিদের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় চিত্রশিল্পী ও ডিজাইনারদের তৈরি দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শন করা হবে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি এসব পণ্যের বুনন প্রক্রিয়াও দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবে। এ বছর হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল-২০১৯ এ মোট ৪৫টি স্টলে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের তাঁত ও কারুপণ্য প্রদর্শিত হবে। নক্সীকাঁথা, বেনারসি শাড়ি, টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি, সিরাজগঞ্জ শাড়ি-লুঙ্গি-গামছা, মণিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যদের কাপড়, খাদি, রাজশাহী সিল্ক, পাটজাত পণ্য, শতরঞ্জি পণ্য, বাঁশ-বেত পণ্য, পটচিত্র প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হবে। এএফডিবি সভাপতি মানতাশা আহমেদ বলেন, এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে সংযোগ স্থাপিত হয়। তাঁতি ও ফ্যাশন ডিজাইনার উভয় অনেক কিছু শিখতে পারে। আমরা এবারের উৎসবে পাটকেও বিশেষভাবে হাইলাইট করব। পাট দিয়ে যে কত কিছু হয় তা জানার প্রয়োজনীয়তা আছে মনে করেন তিনি। কণকচাঁপা চাকমা বলেন, আমাদের পাহাড়ীদের পণ্য সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়কে নিয়ে আসার দায়িত্ব আমার ওপর। আমাদের পাহাড়ীদের পণ্য নেয়ার ইচ্ছা থাকলেও রাজধানীতে সেই সুযোগ কম। সেখানে এটি একটি বড় মিলনমেলা। ফেস্টিভ্যালে লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ম্যাচমেকিং ইভেন্টের আয়োজন করা হবে। চার দিনব্যাপী এ ফেস্টিভ্যালের প্রথম দিন মেলার উদ্বোধন করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এছাড়াও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এসএমই ফাউন্ডেশনরে চেয়ারপার্সন কে এম হাবিব উল্লাহ উপস্থিত থাকবেন। দ্বিতীয় দিন ২৪ অক্টোবর শুধু বিদেশী দর্শনার্থীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বিদেশী দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তাসহ বিদেশী অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দিনটিকে ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ডে হিসেবে অবহিত করা হয়েছে। এদিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।
×