ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কাউন্সিলর রাজিব ১৪ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ১৩:৩১, ২১ অক্টোবর ২০১৯

 কাউন্সিলর রাজিব ১৪ দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা গ্রেফতারকৃত সুলতান তারেকুজ্জামান রাজিবের বিরুদ্ধে রবিবার রাতে ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। সন্ধ্যায় র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জনকণ্ঠকে জানান, রাজিবকে নিয়ে র‌্যাব-১ এর কার্যালয় থেকে বের হয়ে ভাটারা থানায় নেয়া হয়। সেখানে মামলা দায়েরের পর তাকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে রাজিবকে ২০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে নেয়া হলে আদালত ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর আগে শনিবার রাতভর অভিযানে বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার বাসা থেকে সাতটি বিদেশী মদের বোতল, তিন রাউন্ড গুলিভর্তি একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। এছাড়া মোহাম্মদপুরে তার বাড়ি থেকে শুধুমাত্র ৫কোটি টাকার চেক ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। একই সময় মোহাম্মদপুরের চাঁনমিয়া হাউজিংয়ে রাজিবের ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে অভিযানের সময় সহযোগিতা না করা এবং আলামত নষ্ট করার অভিযোগে তার অফিস সহকারী সাদেক আহমেদকে তিন মাসের কারাদ- দিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ নিয়ে মোহাম্মদপুরের দুই ওয়ার্ড কমিশনারকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এদিকে গ্রেফতারের পর তারেকুজ্জামান রাজিবকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত মাসের মাঝামাঝি ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর যুবলীগের অনেক নেতার মতো গা-ঢাকা দিয়েছিলেন রাজিব। আত্মগোপনে থাকার মধ্যে শনিবার দিনগত রাতে বসন্ধুরায় ৮নং সড়কের ৪০৪ নং আমেরিকা প্রবাসী এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজিবকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেঃ কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, সি ব্লকের আফতাব উদ্দিন রোডের ওই বাড়ির অষ্টম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে রাজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও ওই বাসায় তল্লাশি করা হচ্ছে। সেখান থেকে সাতটি বিদেশী মদের বোতল, তিন রাউন্ড গুলিভর্তি একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। বসুন্ধরায় ওই তল্লাশি শেষে মোহাম্মাদপুরের তার কার্যালয় ও মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর সড়কের ৩৩ নম্বর প্লটে রাজিবের ডুপ্লেক্স বাড়িতে তাকে নিয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব। রাজিবের মোহাম্মদপুরের বাসা ও কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযানে ৫ কোটি টাকার একটি চেকও উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুইটি মামলাও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় আলামত ধ্বংস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে অসহযোগিতার দায়ে রাজিবের পিএ সাদেককে ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার ভোর রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই আদেশ দেন। অন্যদিকে রাজিবকে নিয়ে অভিযান শেষে রবিবার ভোরেরদিকে র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম সাংবাদিকদের জানান, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি এবং দখলদারিত্বের মতো সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে রাতভর মোহাম্মদপুরে তার বাসা ও কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। আপাতত তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা হবে। তিনি জানান, অর্জিত আয়ের উৎস এবং অর্থ পাচারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং এই অর্থ তিনি কোথায় খরচ করেছেন দেখা হবে। যদি এখানে মানিলন্ডারিংয়ের কোন বিষয় থাকে তবে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, রাজিবের সহযোগী এবং তার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এমন আত্মীয় বা অনাত্মীয় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা তো আসলে তার বৈধ আয়ের কোন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তার যে একটি রাজকীয় বাড়ি রয়েছে এ বাড়িটির বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। বাড়ির প্রত্যেকটা আসবাবপত্র থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জিনিস বিদেশ থেকে আমদানি করে এনেছে। এসব সম্পদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বলে আমাদের মনে হয়েছে। তার যে আয়, তার সঙ্গে এটা সঙ্গতিহীন। অর্থাৎ অবৈধ আয় দিয়ে তিনি এসব করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, জমি কেনাবেচা করে এমন তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজিবের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছেন তারা। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে মূলত জমি দখলের কাজটি সে করত। কোন ভুক্তভোগী জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে এলে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব। রাজিবের মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ের ডুপ্লেক্স বাড়িতে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যেসব ডকুমেন্ট ছিল, সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পরে তার একজন সহযোগীর আত্মীয়ের বাসা থেকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, একটি এ্যাকাউন্টে গত ২৬ আগস্ট ৫ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন তিনি। সেখানে খোঁজ নিয়েও প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, কাউন্সিলর হওয়ার আগ পর্যন্ত তার দৃশ্যমান কোন ধরনের ব্যবসা বা পেশা ছিল না। বর্তমানে সিটি করপোরেশন থেকে যে সম্মানী পান, সেটা তার একমাত্র প্রধান আয়। এছাড়া যে অবৈধ লেনদেনের বিষয়গুলো রয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বেরিয়ে আসবে। র‌্যাবের ধারণা, আগে থেকেই সতর্ক থাকায় কাউন্সিলর রাজিব আর্থিক লেনদেনের আলামত সরিয়ে ফেলেছেন। সারোয়ার আলম জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজিবকে বসুন্ধরার ওই ফ্ল্যাট থেকে বের করে রাত সোয়া ২টার দিকে তাকে নিয়ে মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর সড়কের ৩৩ নম্বর ভবনে রাজিবের বাসায় প্রায় দেড় ঘণ্টা অভিযান চলে। সেখান থেকে ভোর ৪টার দিকে রাজিবকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুরের চাঁনমিয়া হাউজিংয়ে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। সেখানে অভিযানের সময় সহযোগিতা না করা এবং আলামত নষ্ট করার অভিযোগে অফিস সহকারী সাদেক অহমেদকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এদিকে কাউন্সিলর অফিসে অভিযানের সময় রাজিবের বড় ভাই আখতারুজ্জামান রাসেল সাংবাদিকদের জানান, ওর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। অল্প বয়স থেকে সে রাজনীতিতে জড়িত। এলাকার মানুষ জানে সে কত জনপ্রিয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সে নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। এখন তাকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। যুবলীগ থেকে বহিষ্কার ॥ শনিবার রাতে রাজিব গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করার কথা জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। তিনি জানান, চলমান অভিযানে যুবলীগের কেউ দুর্নীতি বা অন্য কোন কারণে গ্রেফতার হলে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা ছিল আমাদের। সেই মোতাবেক রাজিবকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রাজিব এর আগেও একবার সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করায় মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলীয় প্রার্থী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে হারিয়ে নির্বাচিত হন তিনি। সাবেক এক প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ রাজিব মোহাম্মদপুর এলাকায় যুবলীগের রাজনীতি দিয়েই রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু। অল্পদিনেই ওই নেতাদের সান্নিধ্যে মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নেন। অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্রীয় যুবলীগের এক নেতাকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন রাজিব। যুবলীগের সাইনবোর্ড আর কাউন্সিলরের পদটি ব্যবহার করে এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজিব। এর আগে ১১ অক্টোবর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানকে গ্রেফতার করে। মোহাম্মদপুর এই বহুল বিতর্কিত কমিশনার মিজানকে সাতদিনের রিমান্ড শেষে রবিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। রাজিবের উত্থান ॥ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, প্রায় ছয় বছর আগে মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির একটি বাড়ির নিচতলার গ্যারেজের পাশেই ছোট্ট এক কক্ষে সস্ত্রীক ৬ হাজার টাকা ভাড়া থাকতেন তারেকুজ্জামান রাজিব। তখনও তিনি কোন ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন না। এখনও করেন না। এখন মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর সড়কের ৩৩ নম্বর প্লটে রাজিবের ডুপ্লেক্স বাড়িতে সস্ত্রীক থাকেন। রাজিবের দামী গাড়ির প্রতি নেশা ছিল। সে অনুযায়ী মার্সিডিস, বিএমডাব্লিউ, ক্রাউন প্রাডো, ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮, বিএমডাব্লিউ স্পোর্টস কারসহ নামী দামী সব ব্র্যান্ডের গাড়িই এসেছে রাজিবের হাতে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, কাউন্সিলর রাজিবের বাবা তোতা মিয়া হাওলাদার মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটি ও চাঁন মিয়া হাউজিং এলাকায় তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। এর মধ্যে রাজিব মেজো। পেশায় রাজমিস্ত্রি বাবার সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি রাজিব মোহাম্মদীয়া সুপার মার্কেটে টং দোকানও করেছেন। এই মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, অবৈধভাবে প্লট ও জমি দখল করে বিক্রি করে টাকা কামিয়েছেন রাজিব। এ ছাড়া দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বিত্তের মালিক হয়েছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদপুর, বেড়িবাঁধ, বসিলা এলাকার পরিবহনে চাঁদাবাজি রাজিবের নিয়ন্ত্রণে। অটোরিক্সা, লেগুনা, ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও বাস থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা তোলে তার লোকজন। পাঁচ বছর ধরে এলাকার কোরবানির পশুর হাটের ইজারাও নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন রাজিব। ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা থেকে কাউন্সিলর হওয়া রাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মোহাম্মদপুরের কাঁটাসুরের নামার বাজারের দখল এখন তার হাতে। কাউন্সিলর হওয়ার পর সাবেক কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বজলুর রহমানকে হটিয়ে বাজারের দায়িত্ব নেন তিনি। উন্নয়নের কথা বলে বাজার কমিটির সেক্রেটারি মিন্টু আলম খানের সহযোগিতায় ১৫৭টি দোকানের মালিকের কাছ থেকে প্রায়ই আড়াই কোটি টাকা নিয়েছেন রাজিব; কিন্তু কোন কাজই করেননি। জানা গেছে, রহিম ব্যাপারী ঘাট মসজিদের সামনে আব্দুল হক নামের এক ব্যক্তির ৩৫ কাঠার একটি প্লট যুবলীগের কার্যালয়ের নামে দখল করেছেন রাজিব। এর আগে ওই জমির পাশেই জাকির হোসেনের সাত-আট কাঠার একটি প্লট দখল করে রেখেছিলেন তিনি। পরে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে জমি উদ্ধার করেন জাকির। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশের ময়ূর ভিলার মালিক রফিক মিয়ার কয়েক কোটি টাকা দামের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে রাজিব ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। পাবলিক টয়লেট নির্মাণের মাধ্যমে জমিটি দখল করা হয়। সেখানে পাঁচটি দোকান তুলে ভাড়া দিয়ে টাকা নিচ্ছে তারা। ঢাকা রিয়েল এস্টেটের ৩ নম্বর সড়কের ৫৬ নম্বর প্লটের মালিক ছিলেন আব্দুল করিমের স্ত্রী। সেই প্লটটি কাউন্সিলর রাজিবের ক্যাডার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জীবনসহ কয়েকজন মিলে দখল করে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা বিক্রি করেছে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের সামনে আল্লাহ করিম মসজিদ ও মার্কেটের নিয়ন্ত্রণও রাজিবের হাতে। কাউন্সিলর হওয়ার পর মসজিদ ও মার্কেট পরিচালনা কমিটির সভাপতি করেন তার স্ত্রীর বড় ভাই ইকরাম হোসেনকে। অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি হয়েই ইকরাম মসজিদ মার্কেটের আয় নানাভাবে হাতিয়ে নেন। মার্কেটের ৩৯টি দোকান বিক্রি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টাও করছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, রাজিবের চাচা ইয়াসিন হাওলাদার চাঁদ উদ্যানের ৩ নম্বর রোডের রহিমা আক্তার রাহি, বাবুল ও মোঃ জসিমের তিনটি প্লট দখল করেছেন। এ নিয়ে মামলাও হয়েছে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী হানিফ মিয়া অভিযোগ করেন, চাঁদ উদ্যানের আড়াই কাঠার একটি প্লট তিনি বায়না করেছিলেন। কিন্তু ইয়াসিন হাওলাদার ও তার ছেলে বিপ্লব হাওলাদার বাবু জমির মালিকের কাছ থেকে জোর করে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। প্রতিবাদ করায় তার ওপর হামলাও করেছিল তারা।
×