ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২২ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ, আসছে বড় ধরনের কর্মসূচি

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ২০ অক্টোবর ২০১৯

২২ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ, আসছে বড় ধরনের কর্মসূচি

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ২২ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমাবেশের ডাক দিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমাবেশে প্রচুর লোক সমাগম করার চিন্তা রয়েছে ঐক্যফ্রন্টের। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরের নেতাকর্মীদের সমাবেশে আসার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও ঢাকার আসপাশের জেলাগুলো থেকেও সমাবেশে লোক আনতে চায় ঐক্যফ্রন্ট। অনুমতি না পেলেও সমাবেশ করবে তারা। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলছেন, সমাবেশের জন্য প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাইব না, তাদেরকে জানাব যে, আমরা সমাবেশ করছি। এই সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে ঐক্যফ্রন্ট। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ থেকে যে সকল কর্মসূচি আসতে পারে- তৃর্ণমূলের স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায় সভা-সমাবেশ। কেন্দ্রীয় নেতাদের জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় সফর, মানববন্ধন এবং পদযাত্রা। এ ধরণের কর্মসূচিতে যদি কোন কাজ না হয়, তাহলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেই কর্মসূচি হতে পারে লাগাতার হরতাল, অবরোধ ও ঘেরাও কর্মসূচি। সর্বশেষ তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাকও দিতে পারে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির জরুরি বৈঠক শেষে সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। এসময় সমাবেশের অনুমতি না পেলে ঐক্যফ্রন্ট কী করবে এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, অনুমতি না দেওয়া হবে সংবিধানের লঙ্ঘন। সংবিধানের মৌলিক অধিকারের মধ্যে সভা-সমাবেশ করা ও বক্তব্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অনুমতি না দিলেও কাজ করে যেতে হবে। অনুমতির বিষয় সরকারের। অবস্থা বুঝে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন বলে জানান তিনি। ঐক্যফ্রন্টকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না দিলে কি করবেন জানতে চাইলে ডাকসুর সাবেক সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সভা-সমাবেশ করা সংবিধানে আমার মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারে যদি সরকার বাধা দেয় তাহলে সমস্ত দোষ পরবে সরকারের ঘাড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কি করব সেটা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেব। এনিয়ে এখন কিছু বলতে পারব না। সমাবেশের আগে বলা যাবে। আমরা সিরিয়াস সমাবেশ করার ব্যাপারে, আমাদের যদি সমাবেশ করতে না দেয়া হয় তাহলে আমাদের অধিকার খর্ব করার ব্যাপারে কি করব সেটা পরে জানাব। তিনি বলেন, আমরা সমাবেশ থেকে জুয়াতন্ত্র, জুয়া সরকার, মানুষ হত্যা করা সরকার, সন্ত্রাসী সরকার ও উন্নয়নের নামে দেশ বিক্রি করে দেয়া সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব। সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্র্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রস্তুতি চলছে। সমাবেশ হবে। সরকার যদি বাধা না দেয় তাহলে প্রচুর লোক সমাগম হবে আশা করা যায়। জনগণ উত্তর চায় বিএনপির কাছে, কামাল হোসেনের কাছে যে আমরা কি ভোট দিতে পারব? অনুমতি না দিলেও মাঠে যেতে হবে। বাচ্চা যদি কাঁদে মা খাবার না দিলে কেঁদেই যায়। ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির সিনিয়র নেতারা দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতি করছেন এটা তাদের দায়িত্ব। পথে থাকতে হবে, যেকোন মূল্যে সমাবেশ করা হবে। সরকার যদি অনুমতি না দেয় সেটা হবে তাদের বোকামি। সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমাদের তো প্রস্তুতি নিতে বেশি সময় লাগে না। সেটা গত ১২ তারিখে আমরা ঢাকায় দেখিয়েছিলাম অনুমতি ছাড়াই কত তাড়াতাড়ি কত মানুষ জোগাড় করা যায়। ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন যায়গায় ইতোমধ্যে বলা হয়েছে। কি বার্তা দেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখান থেকে আপাতত কিছু প্রোগ্রাম যাবে। পরবর্তী প্রোগ্রাম যেগুলো যাবে সেগুলো ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে হবে। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। সমাবেশ নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রাহমান মান্না বলেন, আমরা চেষ্টা করব যত বেশি সংখ্যক লোককে সমাবেশে উপস্থিত করা যায়। অনুমতি না দিলে কি করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অনুমতি চাইব না তাদেরকে জানাব যে আমরা সমাবেশ করছি। দেখি কি করা যায়, আমরা চেষ্টা করব সমাবেশ সফল করার।
×