ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব অভিযোগের বিচার বিশ্লেষণ চলছে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২০ অক্টোবর ২০১৯

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব অভিযোগের বিচার বিশ্লেষণ চলছে ॥ নাসিম

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ১৯ অক্টোবর ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সব অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ চলছে। অভিযুক্ত প্রত্যেকের কেস টু কেস ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলের শক্তিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় শক্তি। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় জয়লাভ করবে। আমাদের মহান নেত্রীকে পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে, দেশের উন্নয়নের ধারাকে আরও গতিশীল করতে এবং নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগকে সুশৃৃঙ্খল রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াত আমাদের মহান নেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। তাই সকলকে এক সঙ্গে থাকতে হবে। তিনি শনিবার দুপুরে জেলা শহরের নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারী কলেজ অডিটোরিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন। মোহাম্মদ নাসিম নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপি গত নির্বাচনের ভুল থেকে অনেক শিক্ষা নিয়েছে। মনে রাখবেন, বিএনপি-জামায়াত একটা অপশক্তি। বিগত দিনে এই বিএনপি-জামায়াতের অপশক্তি আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীদের হাত-পায়ের রগ কেটেছে, অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে, ঘরে আগুন দিয়েছে। আমাদের মহান নেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর উত্তরাঞ্চল সফরে বাধা দিয়েছে। কিন্তু তিনি আমাদের এমনই মহান নেত্রী যিনি বারবার মৃত্যু আলিঙ্গন করে আজ রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জেল জুলুম, নির্যাতন, খুনের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তিনি নেতাকর্মীদের নৈতিক গুণাবলি সম্পন্ন হয়ে দলের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি কোন দিন বিএনপি-জামায়াত দেশের ক্ষমতায় যায়, তবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, স্বাধীনতার পক্ষের নেতাকর্মীদের কাউকে বাঁচিয়ে রাখবে না। তাই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, দলের জন্য স্লোগান হবে, কোন ব্যক্তিস্বার্থের জন্য কোন স্লোগান হতে পারে না। কেন আমরা নিজেকে বিক্রি করে দলের ক্ষতি করছি? এখন বিএনপি-জামায়াত ঘাপটি মেরে আছে। যদি পুনরায় বিএনপি জামায়াতের আসলে আমাদের সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আওয়ামী লীগের হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, বারবার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন নেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ শুনে শুনে আমি বিস্মিত। ক্যাসিনো স¤্রাটের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, দলে অনেক অপশক্তি ঢুকে গেছে। প্রয়োজনে আগাছা পরিষ্কার করা হবে। তিনি বলেন, শুধু দলের খবর রাখলে হবে না, জনগণের খবর রাখতে হবে। আগামী কাউন্সিলগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রত্যেক কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের জায়গা দেয়া হবে। যারা শুধু ক্ষমতার অপব্যবহার করে, প্রভাব খাটাবেন তাদের কোন কাজ হবে না। শুধু দলে ভারি করে লাভ নেই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের চাওয়ার কিছু নেই। একদিন আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি করে ছিলাম। সেদিনও বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হবে কিনা জানতাম না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করেছেন। আমাদের সম্মান দিয়েছেন। বিএনপিকে-জামায়াতকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আবরার হত্যার ঘটনায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবরার হত্যা মামলাটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরের কেন এত আন্দোলন? জনগণ আন্দোলন চায় না, জনগণ পেটের ভাত চাই। ফাঁকা আওয়াজ তুলে, ষড়যন্ত্র না করে আপনারা (বিএনপি) দেশের উন্নয়নে সরকারকে সহযোগিতা করুন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপির সার্বিক সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ড. সাইদুর রহমান খান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ডাক, টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপিসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
×