ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোম্পানির তালিকাচ্যুতি নিয়ে ডিএসইকে হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২০ অক্টোবর ২০১৯

কোম্পানির তালিকাচ্যুতি নিয়ে ডিএসইকে হুঁশিয়ারি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারের কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতির বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত বছরের দুই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতি নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের স্বেচ্ছাচারিতায় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা বাড়ার কারণে এবার সতর্ক অবস্থান নিয়েছে কমিশন। তাই পুনরায় নতুন করে তালিকাচ্যুতি নিয়ে ডিএসইকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে সংস্থাটি। সবার আগে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইং নামের কোম্পানি দুইটিকে তালিকাচ্যুতি করেছিল। তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ যথারীতি কোম্পানি দুইটির লেনদেন চালানোর পক্ষে ছিল। তালিকাচ্যুতির পরদিন আর ডিএসইতে লেনদেন হয়নি। এমনকি ওটিসি মার্কেটেও কোম্পানি দুইটি স্থান হয়নি। হঠাৎ করেই দুটি কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে যায়। তাদের বিনিয়োগের টাকা কিভাবে ফেরত পাবে সেটাও ডিএসই থেকে স্পষ্ট করা হয়নি। ফলে রাতারাতি পথে বসে যায় দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারী। কোম্পানি তালিকাচ্যুতি হলেও সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় উদ্যোক্তারা। তাই বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে ডিএসই কর্তৃপক্ষ পক্ষান্তরে উদ্যোক্তাদের বাজার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের শেয়ারধারী দুই পরিচালকের একান্ত ইচ্ছাতেই তালিকাচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুই পরিচালকের একজন বর্তমান আওয়ামী সরকার বিরোধী মতবাদে বিশ্বাসী হলেও তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরই পরিচালনা পর্ষদে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন। সরকারদলীয় আরও একজন প্রভাবশালী পরিচালকও তাতে সমর্থন দেন। তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বিপুল উৎসাহ নিয়ে দুই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতি করা হয়। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আতঙ্ক বেড়ে যায়। দুই কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতি করেই ডিএসই থেমে থাকেনি। আরও ১৪টি কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নির্বাচিত করেন। কোম্পানিগুলোকে বারবার সতর্কবাতা প্রদান করেন। সবমিলেও জেড ক্যাটাগরির শেয়ারধারীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে সার্বিক শেয়ারবাজারে। আজও যার রেশ রয়ে গেছে শেয়ারবাজারে। পরবর্তীতে কোম্পানির তালিকাচ্যুতি নিয়ে বিএসইসিতে প্রতিবেদন জমা দেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। বাজার পরিস্থিতি ও ডিএসইর প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিএসইর কাছে বিস্তারিত জানতে চায়। আর যেনতেনভাবে তালিকাচ্যুতির বিপক্ষে মত দেন। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি তালিকাচ্যুতির পূর্বে বিনিয়োগকারীর স্বার্থে প্রয়োজনীয় আইনগুলো আগে পরিপালনের নির্দেশ দেয় বিএসইসি। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক আইনের আওতায় একটি সংশোধিত প্রস্তাব আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতেও বলেছে ডিএসইকে। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর ১৪টি কোম্পানিকে কোন যুক্তিতে ভিত্তিতে ডিএসই তালিকাচ্যুত করতে চায়Ñ এর আইনী ব্যাখ্যা চেয়েছিল ‘বিএসইসি’। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর ডিএসই ওই চিঠির জবাব দেয়। ডিএসই’র জবাবের ভিত্তিতে বিএসইসি উপরোক্ত নির্দেশনা দেয়। বিএসইসি বলছে, লিস্টিং আবেদনের শর্ত অনুযায়ী কোম্পানিগুলোতে কোন ধরনের অসঙ্গতি বা ঘাটতি কিংবা কোন আইনের লঙ্ঘন হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে তারপর ব্যবস্থা নিতে হবে।
×