ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীতে  চলছে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ বাউফলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব। যে কোন সময়ের চেয়ে এ বছর মা ইলিশ শিকার বেশি হচ্ছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় মা ইলিশ শিকার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেঁতুলিয়া নিমদি এলাকার কয়েক ব্যক্তি জানান, প্রশাসনের লোকজন তেঁতুলিয়া নদীর যে সব পয়েন্টে টহল দেন, মূলত সে সব পয়েন্টে জেলেরা মাছ শিকার করেননা। আবার যে সব পয়েন্টে জেলেরা জাল ফেলে মা ইলিশ শিকার করেন, সেখানে প্রশাসনের লোকজন টহল দেননা। তাই ধারণা করা হচ্ছে, তাদেরকে ম্যানেজ করেই জেলেরা নদীতে মা-ইলিশ শিকার করছেন। শনিবার নিমদি লঞ্চঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে সামান্য দক্ষিন দিকে বেড়ি বাধের ওপর প্রায় ২৫-৩০ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। কাছে যেতেই কয়েকজন বলল, ‘ভাই, দ্যাহেন ক্যামনে ইলিশ ধরে।’ তখন ওই স্থানের আশপাশে ১২-১৪টি নৌকার জেলেরা ফেলে রাখা ইলিশ জাল তুলছে নদী থেকে। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় এ দৃশ্য দেখা গেল। এর ৫-৭ মিনিট পর নিমদি লঞ্চঘাট খাল থেকে আর ৫টি নৌকায় জাল নিয়ে জেলেদের একই পথে যেতে দেখা গেছে। দুপুর ১টা ৩মিনিটে দেখা গেল, নিমদি লঞ্চঘাটের প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিনে বড় ডালিমা এলাকায় তেঁতুলিয়ার বুকে জাল টানছে অনেক জেলেরা। এ সময় দাড়িয়ে থাকা উৎসুক লোকজন জানান, সব নৌকাগুলো নদীতে জাল ফেলে তেঁতুলিয়ার পূর্বপাড়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরের ছোট ছোট খালে আশ্রয় নেয় এবং সময় হলে জাল উঠায়। তারা আরো জানান, এ জেলেদের সাথে রাজনৈতিক দলের কিছু অসাধু নেতাদের যোগসূত্র রয়েছে। ইলিশ প্রজননের এ নিষেধাজ্ঞার সময় সংঘবদ্ধ ওই রাজনৈতিক দলের চক্রটি কোটি কোটি টাকা অবৈধ ভাবে ইলিশ শিকার করে আয় করে নেয়। নেতাদের নাম জানতে চাইলে বলেন, ‘সবাই তাদের নাম জানে। আমরা নাম বলে এলাকা ছাড়া হবো। বোঝেন না? কোষ্টগার্ড কিছু বলে না কেন? ওই নেতারাই কোষ্টগার্ডকে ম্যানেজ করে জেলেদের নদীতে নামিয়ে দিয়েছে। অবৈধ ভাবে শিকার করা ওই ইলিশ ৫০০থেকে সর্বোচ্চ একহাজার টাকায় বাড়ি বাড়ি ফেরি করে হালি বিক্রি করা হয়।’ এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার সময় জনকণ্ঠসহ স্থানীয় কয়েক সাংবাদিক তেঁতুলিয়া নদীর নিমদি লঞ্চ ঘাট গিয়ে দেখেন, কোস্টগার্ডের এইচপিপি বলেশ্বর নামের একটি বোট ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। ৮-১০ জন কোস্টগার্ড সদস্য পন্টুনের উপর বেঞ্চে বসে খোসগল্প করছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তারা একটু বিচলিত হন। বোটটির পিছনের দিকে একটি ছোট আকারের স্প্রিড বোট বাধা রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন জানালেন, বোটটির ভিতরে কাজ চলছে। তাই সাংবাদিকদের ভিতরে প্রবেশের অনুমোতি নেই। কোস্টগার্ডের ঢাকা হেড কোয়াটারের মিডিয়া অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবদুল হামিদ ০১৭৬৬৬৯০০৩৭ নম্বর মোবাইল ফোন থেকে জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতাকে কল করে বলেন, আপনারাও (সাংবাদিকরা) কোস্টগার্ডের কর্মকান্ড তদারকি করবেন। কোন অসঙ্গতি দেখলে আমাকে ফোনে জানাবেন’।
×