ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাবকাপ ফুটবল

তৃতীয় আসরের পর্দা উঠছে আজ চট্টগ্রামে

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

তৃতীয় আসরের পর্দা উঠছে আজ চট্টগ্রামে

জাহিদুল আলম জয়, চট্টগ্রাম থেকে ॥ এই বুঝি সুদিন এলো। না, কথার কথা নয়; সত্যিই বাংলাদেশের ফুটবলে সুদিন ফিরতে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বলজ্বলে নৈপুণ্য সে স্বাক্ষরই বহন করছে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্সের পর এবার চট্টগ্রাম মাতানোর অপেক্ষায় বাংলার তরুণেরা। সেই সঙ্গে থাকবেন আরও পাঁচ দেশের তারকা ফুটবলাররা। হ্যাঁ বলা হচ্ছে, শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলের কথা। আজই চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে পর্দা উঠছে তৃতীয় আসরের। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) অনুমোদনক্রমে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহযোগিতায় ও চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে ও কৃতী ক্রীড়া সংগঠক শহীদ শেখ কামালের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য হচ্ছে এই আন্তর্জাতিক আসর। দুই বছর পরপর হওয়া এই আসরের এবার তৃতীয়পর্ব। ২০১৫ সালে প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় আসরে বাজিমাত করে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাব। মজার বিষয় হচ্ছে, এবার প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের মুখোমুখি হওয়ার মধ্য দিয়েই টুর্নামেন্টের পর্দা উঠছে। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৭টায়। ঢাকা আবাহনীর টুর্নামেন্টে থাকা না থাকা নিয়ে নাটকীয়তা কম হয়নি। এর প্রভাবও পড়েছে ভালমতো। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত খেলার পর ক্রীড়াপ্রেমীরা ধরেই নিয়েছিলেন, আন্তর্জাতিক এই আসরে বাংলার ছেলেরাই দাপট দেখাবে। কিন্তু আটটি দলের মধ্যে দেশের মাত্র দুই দল খেলায় বেশিরভাগ ফুটবলারকেই বাইরে থাকতে হচ্ছে। আবাহনী শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় সংখ্যাটা আরও কমেছে। এ কারণে অনেকের মতে, আসরের ঔজ্জ্বল্য অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। শুক্রবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পা রাখার পরই চারিদিকে ফিসফাস শোনা গেল। একদল ফুটবলপ্রেমী আলোচনা করছিলেন, এই ধরনের আসরে যদি নিজেরদের খেলোয়াড়রা উপেক্ষিত থাকে, তাহলে টুর্নামেন্ট করে কি লাভ। একজন বললেন, টুর্নামেন্টের সূচীতে কিছুটা পরিবর্তন আনা যেতে পারত। বাংলাদেশ দল অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। এর পরপরই হচ্ছে শেখ কামাল কাপ। খেলা কিছুদিন পিছিয়ে দিলে হয়তো দলগুলো নিজেদের আরও গুছিয়ে নিতে পারত। টুর্নামেন্টের গ্রুপিং হয়েছে ঢাকাতে। এরপর চট্টগ্রামে হয়েছে ট্রফি প্রদর্শনী ও দলগুলোর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। এবার মাঠের লড়াইয়ের অপেক্ষা। ‘এ’ গ্রুপে আছে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাব, ভারতের মোহনবাগান এ্যাথলেটিক ক্লাব, লাওসের ইয়ং এলিফেন্ট ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। প্রথমে ‘বি’ গ্রুপের দলগুলো ছিল বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস, ভারতের চেন্নাই এফসি, মালয়েশিয়ার তেরাঙ্গানো এফসি ও বাংলাদশের ঢাকা আবাহনী। কিন্তু শেষক্ষণে ঢাকা আবাহনী নাম প্রত্যাহার করলে তাদের বদলে নেয়া হয়েছে ভারতের আরেক ক্লাব গকুলাম কেরালাকে। দুই গ্রুপের শীর্ষ দু’টি করে দল সেমিফাইনালের টিকেট পাবে। ফাইনালের টিকেট পাওয়ার লড়াইয়ে সেমিতে মুখোমুখি হবে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘বি’ গ্রুপ রানার্সআপ এবং ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন-‘এ’ গ্রুপ রানার্সআপ। দু’টি সেমিফাইনাল হবে ২৭ ও ২৮ অক্টোবর। আর শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল হবে ৩০ অক্টোবর। এবারের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ মানি ১০ হাজার ইউএস ডলার। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫০ হাজার ইউএস ডলার ও রানার্সআপ দল পাবে ২৫ হাজার ডলার। আগের দুই আসরের চেয়ে এবারের আসরটি আরও জমকালো হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান সমন্বয়ক চেয়ারম্যান তরফদার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ‘শেখ কামাল বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবল এনেছিলেন। তার নামে ২০১৫ সালে প্রথম টুর্নামেন্ট করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। প্রথম আসরটি বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। ক্লাব পর্যায়ে বাংলাদেশে এত বড় টুর্নামেন্ট আর কখনও হয়নি। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন দিগন্ত পা রাখে। ফিফা এএফসি টায়ার ট্যু’র মর্যাদা পেয়েছে।’
×