ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিলন সুপার সিঙ্গার বিজয়ী দীপ্তি সরকার

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

 সিলন সুপার সিঙ্গার বিজয়ী দীপ্তি সরকার

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ একজন শিল্পী গল্পের সেই নাইটিঙ্গেল পাখির মতো, সারারাত গান গেয়ে যে ফোটায় রক্তগোলাপ। সঙ্গীতশিল্পী হয়ে ওঠার পেছনে থাকে কত স্বপ্ন, শ্রম ও সাধনা। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক নারীই আছেন, বিয়ের পর নিজের আর সব ইচ্ছার সঙ্গে গানের প্রতি ভালবাসাটিকেও বেঁধে ফেলেন সংসারজীবনের আঁচলে। অথচ তাদের অনেকেই হয়ে উঠতে পারতেন সুরের পাখি। প্রয়োজন ছিল শুধু একটু উৎসাহ ও সমর্থনের। সেই মঞ্চটাই তৈরি করে দিতে চেয়েছে সিলন সুপার সিঙ্গার, গৃহিণীদের নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম মিউজিকাল রিয়্যালিটি শো। আর তাতে চ্যাম্পিয়ন হলেন খুলনার গৃহিণী দীপ্তি সরকার। দীপ্তি পেয়েছেন ২০ লাখ টাকার পুরস্কার। বিজয়ীর নাম ঘোষণার পর থেকেই কিছু বলতে পারছিলেন না বিজয়ী দীপ্তি। আনন্দের বাঁধভাঙ্গা জল কিছুতেই বাধা মানছিল না। অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, আমি যেন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি এই আয়োজনে। অতি সাধারণ একজন গৃহিণী ছিলাম, সেই পরিচয়টাই বদলে দিয়েছে সিলন সুপার সিঙ্গার। আমি আর কখনই গান ছাড়ব না। গান নিয়েই এগিয়ে যাব। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাময়ী গৃহিণী সঙ্গীতশিল্পী খুঁজে বের করার প্রয়াস ছিল সিলন সুপার সিঙ্গারের। সারাদেশ থেকে ১৫ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে সাত মাস আগে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। গতকাল শুক্রবার এনটিভিতে প্রচারিত হয়েছে এর গ্র্যান্ড ফিনালে। সেরা পাঁচজনের মধ্যে চারজনই পেয়েছেন পুরস্কার। প্রথম রানারআপ সুমনা রহমান পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা। যৌথভাবে দ্বিতীয় রানারআপ ফাহমিদা নাসরিন প্রীতি ও শায়নি শিঞ্জন দু’জনে মিলে পেয়েছেন ৬ লাখ টাকা। প্রিয়াঙ্কা দাশসহ সেরা ১১তে জায়গা করে নেয়া বাকি ৭ জন পেয়েছেন ১ লাখ টাকা করে। জমকালো আয়োজনের গ্র্যান্ড ফিনালেতে ৫ জনই সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। বিশেষ অতিথি শিল্পী ছিলেন কিংবদন্তি রুনা লায়লা। তিনি দুটি গান পরিবেশন করার পাশাপাশি সেরা পাঁচের গান শোনার পর প্রতিক্রিয়া জানান। নিজের মুগ্ধতার কথা বলেন। এছাড়া আয়োজনে ছিল অভিনেত্রী পূর্ণিমার নাচ। প্রতিযোগিতার তিন মূল বিচারক ফাহমিদা নবী, পার্থ বড়ুয়া এবং তারিন জাহানও অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সিলন সুপার সিঙ্গারেও অংশ নেয়া সফল কর্মজীবী নারীদের মধ্যে চারজন গৃহিণীর গানও ছিল পুলিশ কর্মকর্তা ইথি, চিকিৎসক দৃষ্টি, শিক্ষিকা শিলা এবং সমাজকল্যাণ কর্মী মিতু। দাম্পত্য জীবনের নানা মজার দিক নিয়ে তিনটি নাটিকা অনুষ্ঠানে দেখানো হয়। আয়োজনের উদ্দেশ্য তুলে ধরে আবুল খায়ের গ্রুপের ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং পরিচালক নওশাদ করিম চৌধুরী বলেন, এই শিল্পীরা প্রমাণ করে দিয়েছেন একটু উৎসাহ পেলে নিজের হারিয়ে ফেলা শিল্পীসত্তাটাকে কি দারুণভাবেই না পুনরাবিষ্কার করতে জানেন। আমাদের গৃহিণীদের কত বাধা পেরোতে হয় প্রতিটা মুহূর্তে, তাও আমরা নতুন করে জেনেছি। আয়োজনের সম্প্রচার সহযোগী এনটিভির অনুষ্ঠান প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ বলেন, এই আয়োজন থেকে হারিয়ে যেতে বসা এই গানের পাখিরা সঙ্গীতচর্চা অব্যাহত রাখার উৎসাহ ফিরে পেয়েছেন; এটাই এই আয়োজনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আশাকরি আবুল খায়ের গ্রুপ ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখবে।
×