ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আজ শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

আজ শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন আজ। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানম-ির বঙ্গবন্ধু ভবনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেটের হাত থেকে রক্ষা পাননি বঙ্গবন্ধুর এই শিশুপুত্র শেখ রাসেল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নরপিশাচরা নিষ্ঠুরভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ওপর প্রকাশিত একটি স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে স্মারক প্রকাশনা ‘হƒদয় মাঝে শেখ রাসেল’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। গ্রন্থটির উপদেষ্টা সম্পাদক এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি এবং গ্রন্থের সম্পাদক ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও প্রকাশক ইয়াসিন কবির জয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং প্রধানমন্ত্রীর স্ক্রিপ্ট রাইটার মোঃ নজরুল ইসলাম অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। আজ শেখ রাসেলের ৫৬তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে জয়ীতা প্রকাশনী সংস্থা শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে গ্রন্থটি প্রকাশ করে। ৯২ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটিতে প্রায় এক শ’টি ছবি স্থান পেয়েছে। যার অধিকাংশ ছবিই দুর্লব। মৃত্যুকালে শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীরা তাকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় তাদের অপচেষ্টা শতভাগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। শহীদ শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবুদ্ধিবোধ সম্পন্ন মানুষদের কাছে ভালবাসার নাম। অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকার বঞ্চিত শিশুদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম-গঞ্জ-শহর তথা বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ জনপদ-লোকালয়ে শেখ রাসেল আজ এক মানবিকসত্তায় পরিণত হয়েছে। মানবিক চেতনাসম্পন্ন মানুষরা শেখ রাসেলের বিয়োগ দুঃখ বেদনাকে হƒদয়ে ধারণ করে বাংলার প্রতিটি শিশু-কিশোর তরুণের মুখে হাসি ফুটাতে আজ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত ১৫ আগস্টে নিহত সব শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। এছাড়াও দলের অন্যান্য সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে আজ বিকেল ৪টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দাবা, চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী, এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচী যথাযোগ্যভাবে পালন করার জন্য দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশের সব শাখা সংগঠনকেও অনুরূপ কর্মসূচী পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। ল্যাবরেটরি স্কুল ॥ এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইউলেসা’র যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে স্কুল মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনার হত্যাকারীরা দেশের ইতিহাসের চলার পথ স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। সেই দিন তাদের নগ্ন থাবা থেকে রেহাই পায়নি এই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র শেখ রাসেলও। শেখ রাসেল ছিল একজন মেধাবী, পরিশ্রমী ও নিয়মানুবর্তী ছাত্র এবং সব শিশু-কিশোরের জন্য আদর্শ। তার পদচারণায় ধন্য হয়েছে এই স্কুলের মাটি। শেখ রাসেল মানে- গতি, থেমে না থাকার স্বপ্ন। আমাদের অন্তরে, চলার পথে আর অপার সম্ভাবনায় রাসেল আজও বেঁচে আছে। সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে হবে আজকের তরুণদের। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেলিনা বানুর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাহিত্যিক-সাংবাদিক আনিসুল হক, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দা তাহমিনা আখতার, উপাধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার, ইউলেসা’র সভাপতি নাইম আহমেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান সরকার লিটু প্রমুখ। এতে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং শহীদ শেখ রাসেলের সহপাঠী বন্ধুরা।
×