ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাব্বির ঝড়ে হারের পথে সিলেট

প্রকাশিত: ১২:১৭, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

রাব্বির ঝড়ে হারের পথে সিলেট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ২১তম আসরের প্রথম রাউন্ডের চার ম্যাচের তিনটিই ড্র হওয়ার পথে আছে। তবে একটি ম্যাচে জয়-পরাজয় দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো। সেই ম্যাচটিতে বরিশালের কাছে সিলেট হেরে যেতে পারে। আড়াইদিনের কম সময়েই এই হার হতে পারে। তা হবে সিলেটের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়া পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির ঝড়ো বোলিংয়েই। তিনিই যে সিলেটকে ডুবিয়ে দিয়েছেন। রাব্বির ঝড়ে দ্বিতীয় স্তরের এই ম্যাচটিতে ৬৮ রানেই সিলেটের প্রথম ইনিংস খতম হয়ে যায়। হারের পথেও আছে সিলেট। চট্টগ্রামের বিরুদ্ধে বল হাতে প্রথমদিনেই ঝলক দেখানোর পর ব্যাট হাতেও ৬৩ রান করে দ্যুতি ছড়ান ঢাকামেট্রোর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম স্তর ॥ প্রথম স্তরের ঢাকা-রাজশাহীর ম্যাচটি জমে উঠেছে। প্রথম ইনিংসে ঢাকা ২৪০ রান করার পর দ্বিতীয় দিন শেষে রাজশাহী ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে। জহুরুল ইসলাম অমি ৫৭ ও ফরহাদ রেজা ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৬৭ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয়দিন খেলা শুরু করে রাজশাহী। জহুরুল (৬৪) আর বেশি দূর যেতে পারেননি। বাকিরাও ব্যর্থ হন। তাতে করে ১৯৭ রানের বেশি করতে পারেনি রাজশাহী। সুমন খানের (৫/৫০) গতিতেই কাত হয় রাজশাহী। এরপর ঢাকার ব্যাটসম্যানরা আবার ব্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রান করে। তাইবুর রহমান অপরাজিত ৬৭ রান করেছেন। রকিবুল হাসান ৬৫ রান করেন। রাজশাহীর চেয়ে ২৪৯ রানে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা। আজ আর কিছু দূর গিয়ে যদি ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ঢাকা, এরপর রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে নেমে যদি ব্যর্থ হন, তাহলে ম্যাচটিতে ঢাকা জিতে যেতে পারে। তবে যেভাবে এগিয়ে গেছে খেলা, তাতে ড্রর সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে। রংপুর-খুলনার মধ্যকার ম্যাচটি নিশ্চিতভাবেই ড্রর দিকে এগিয়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত দুই দলের একদলও দ্বিতীয় ইনিংসে যেতে পারেনি। প্রথমদিন বৃষ্টিতে খেলা হয়নি। দ্বিতীয় দিন রংপুর ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করেছিল। তানভির হায়দার ৪০ ও সোহরাওয়ার্দী শুভ ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয়দিন তানভির ও সোহরাওয়ার্দী দুইজনেই হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। তানভির ৬৪ ও সোহরাওয়ার্দী ৫০ রান করে আউট হন। রংপুর যে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রান করে, এ দুইজনই দলকে ২১২ রান পর্যন্ত নিয়ে যান। দুইজন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে ৮৮ রানের জুটি গড়েন। রংপুরের ইনিংস শেষ হওয়ার পর খুলনার ইনিংস শুরু হয়। তার আর শেষ হয়নি। দুই ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি (৭৬) ও ইমরান উজ্জামানের (৭১) হাফসেঞ্চুরিতেই বড় সংগ্রহ গড়ার পথে চলে যায় খুলনা। ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান করে তৃতীয় দিন শেষ করে খুলনা। ইমরুল কায়েস ২৯ রান করে সৌম্য সরকারকে (৮*) নিয়ে ব্যাট করছেন। ৩৫ রানে পিছিয়ে আছে খুলনা। দুইদলের কেউই এখনও দ্বিতীয় ইনিংস শুরু না করায় ম্যাচটি নিশ্চিত ড্রর পথেই যাচ্ছে। দ্বিতীয় স্তর ॥ বৃষ্টির বাগড়ায় রাজশাহীতে সিলেট-বরিশাল ম্যাচটির প্রথমদিন ভেসে যায়। দ্বিতীয় দিন খেলা শুরু হতেও ৩টা বাজে। তার মানে চারদিনের খেলায় ১২ সেশনের জায়গায় ৫ সেশন বৃষ্টিতেই শেষ হয়ে যায়। বাকি থাকে ৭ সেশন। মানে সোয়া দুই দিনের খেলা। তাতেও সিলেটের হার দেখা যাচ্ছে। কামরুল ইসলাম রাব্বি (৬/২৪) এমন অসাধারণ বোলিংই করেছেন যে সিলেটের প্রথম ইনিংস ৮৬ রানেই গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় দিন ৩১ ওভার খেলা হয়। তাতে ৩ উইকেটে ৬৮ রান করে সিলেট। তৃতীয় দিন আর ১৮ রান যোগ করতেই ৭ উইকেটের পতন হয়। দিনের প্রথম ওভারেই ২ উইকেট শিকার করে নিয়ে ধস শুরু করেন রাব্বি। এরপর বরিশাল নিজেদের প্রথম ইনিংস খেলতে নেমে ফজলে মাহমুদের ৭০ ও শাহরিয়ার নাফীসের ৬৩ রানের পর ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান করতেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। ১৪৫ রানে এগিয়ে থাকে বরিশাল। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয়দিন শেষ হওয়ার আগেও ২ উইকেট হারিয়ে বসে সিলেট। ২৭ রান করে দিন শেষ করে। তাতে করে ১১৮ রানে এখনও পিছিয়ে রয়েছে। এই রান করাই কষ্টসাধ্য! সেখানে বৃষ্টি বাগড়া না দিলে সারাদিনে হার এড়ানো খুবই কঠিন। দেখা যাক, শেষপর্যন্ত সিলেট হার এড়াতে পারে কিনা। ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম বিভাগ ম্যাচটিও ড্র’র পথেই হাঁটছে। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে ২৯০ রান করার পর ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় দিনে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৬ রান করে। শামসুর রহমান ২৬ ও মার্শার আইয়ুব ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন। শামসুর (৫৫) হাফসেঞ্চুরি করলেও মার্শাল স্বেচ্ছায় অবসর নেন। পরে মাহমুদুল্লাহ ব্যাট হাতে নেমে ৬৩ রানের ইনিংস উপহার দেন। জাবিদ হোসেন (৮১*) ও শহিদুল ইসলাম (৮২*) ইনিংস বড় করছেন। তাতে করে ঢাকা ৭ উইকেট হারিয়ে এখনই ৩৪৯ রান করে ফেলেছে। ৫৯ রানে এগিয়েও রয়েছে। মিনহাজুল আবেদীন আফ্রিদি ৩ উইকেট নেন। ম্যাচে দুই দলের এক দলও দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নামেনি। বোঝাই যাচ্ছে, ম্যাচটি নিশ্চিত ড্রর পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। স্কোর ॥ তৃতীয় দিন শেষে ॥ ঢাকা ও রাজশাহী প্রথম স্তরের ম্যাচ-ফতুল্লায় ॥ ঢাকা প্রথম ইনিংস ২৪০/১০; তাইবুর ৮৮*, রনি ৬৩; তাইজুল ৪/৯২, শফিউল ৩/৪৩ ও দ্বিতীয় ইনিংস ২০৬/৬; ৮০ ওভার (তাইবুর ৬৭*, রকিবুল ৬৫; তাইজুল ৩/৮২। রাজশাহী প্রথম ইনিংস দ্বিতীয় দিন শেষে ১৭৩/৬; জহুরুল ৫৭*, মুশফিক ৭৫, ফরহাদ ১৪*; সুমন ৩/৪০ ও তৃতীয়দিন ১৯৭/১০; ৭৭.৫ ওভার; জহুরুল ৬৪, ফরহাদ ১৬, শফিউল ১০; সুমন ৫/৫০, সাকিল ৩/৪৭। রংপুর-খুলনা প্রথম স্তরের ম্যাচ-খুলনায় ॥ রংপুর প্রথম ইনিংস দ্বিতীয় দিন শেষে ১৬৯/৫; ৭২ ওভার (নাঈম ৪৮, তানভির ৪০*, সোহরাওয়ার্দী শুভ ৩১*, মাহমুদুল ২৭; আল আমিন ২/৪৪, রাজ্জাক ২/৫১ ও তৃতীয়দিন ২২৭/১০; ১০০.১ ওভার; তানভির ৬৪, সোহরাওয়ার্দী ৫০; রাজ্জাক ৪/৮১)। খুলনা প্রথম ইনিংস ১৯২/৩; ৬৭ ওভার (রবি ৭৬, ইমরান ৭১, ইমরুল ২৯*, সৌম্য ৮*)। চট্টগ্রাম-ঢাকা মেট্রো দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ-মিরপুরে ॥ চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস ২৯০/১০; তামিম ৩০, সাদিকুর ৫১, তাসামুল ৯০, অংকন ৩০, মাসুম ২৭; আরাফাত ৬/৮৭, মাহমুদুল্লাহ ৩/৪০)। ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস দ্বিতীয় দিন শেষে ৬৬/২; ২৪ ওভার (শামসুর ২৬*, মার্শাল ২১* ও তৃতীয়দিন ৩৪৯/৭; ১২২ ওভার; শহিদুল ৮২*, জাবিদ ৮১*, মাহমুদুল্লাহ ৬৩, শামসুর ৫৫; মিনহাজুল আফ্রিদি ৩/১০৩)। সিলেট-বরিশাল দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ-রাজশাহীতে ॥ সিলেট প্রথম ইনিংস দ্বিতীয় দিন শেষে ৬৮/৩; ৩১ ওভার (জাকির ৩২*, তৌফিক ১৬, কাপালী ৮*; রাব্বি ২/১৩ ও তৃতীয়দিন ৮৬/১০; ৪৩.১ ওভার; কাপালী ১৮; রাব্বির ৬/২৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস ২৭/২; ১১ ওভার; ইমতিয়াজ ১৪*, রাহাতুল ১১)। বরিশাল প্রথম ইনিংস ২৩১/৮; ইনিংস ঘোষণা; ৫৮.৩ ওভার (ফজলে মাহমুদ ৭০, শাহরিয়ার ৬৩, রাফসান ৩৩; রেজাউর ৩/৭৪, কাপালী ২/১৫)।
×