ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল ভার্সিটিতে আলোচনা

দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার অবকাঠামো ও দক্ষ জনবল সীমিত

প্রকাশিত: ১২:০৪, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার অবকাঠামো ও দক্ষ জনবল সীমিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্যালিয়েটিভ কেয়ার হ্রাস করতে পারে নিরাময়-অযোগ্য রোগে আক্রান্ত অন্তিমশয্যায় শায়িত রোগীদের শারীরিক বেদনা। জোগাতে পারে মানসিক সমর্থন, স্বস্তি ও বাস্তবকে মেনে নেয়ার শক্তি, আধ্যাত্মিক শান্তি। আর সেইসঙ্গে রোগীর পরিবারের জন্যও সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি তাদের জীবনে নতুন দিন আনে না; কিন্তু তাদের প্রতিদিনে যোগ করে নতুন জীবন। প্যালিয়েটিভ কেয়ার স্বাস্থ্যসেবা এমন একটি ক্ষেত্র, যার প্রয়োজনীয়তা বর্তমান বছরগুলোতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এটি এমন একটি উদ্যোগ যা জীবন সংশয়ী রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবারের জীবনের মানোন্নয়ন করে। প্যালিয়েটিভ কেয়ার রোগী এবং রোগীর পরিবারের ব্যথা নিরাময়, উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ, মানসিক ও সামাজিক সহায়তা প্রদানে জোর দিয়ে থাকে। এটি বিভিন্ন ধরনের রোগের শেষ পর্যায়ে যেমন, হৃদপি-, ফুসফুস, বৃক্ক এবং যকৃত ও ক্যান্সার রোগীদের কষ্ট হতে মুক্তি প্রদানে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রদানের অবকাঠামো, সুযোগ সুবিধা ও দক্ষ জনবল সীমিত পরিসরে রয়ে গেছে। বিশ্ব প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবস উপলক্ষে শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডাঃ সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেডিসিন অনুষদের ডিন ও প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জিলন মিঞা সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের কার্যক্রম, হোম কেয়ার রিপোর্ট উপস্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এটুআই কর্তৃক তৈরিকৃত সফটওয়্যার ও ওয়েব পেজ-এর শুভ উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও ছিল একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, এটি এমন একটি উদ্যোগ যা জীবন সংশয়ী রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবারের জীবনের মানোন্নয়ন করে। প্যালিয়েটিভ কেয়ার রোগী এবং রোগীর পরিবারের ব্যথা নিরাময়, উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ, মানসিক ও সামাজিক সহায়তা প্রদানে জোর দিয়ে থাকে। এটি বিভিন্ন ধরনের রোগের শেষ পর্যায়ে যেমন, হৃদপি-, ফুসফুস, বৃক্ক এবং যকৃত ও ক্যান্সার রোগীদের কষ্ট হতে মুক্তি প্রদানে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রদানের অবকাঠামো, সুযোগ সুবিধা ও দক্ষ জনবল সীমিত পরিসরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশে বছরের যে কোন সময় প্রায় ৬ লাখ মানুষের প্রশমন সেবার প্রয়োজন। প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রাপ্যতার বিচারে পৃথিবীর ৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৯তম। সারাদেশে বিক্ষিপ্তভাবে মাত্র অল্পকিছু স্থানে এই সেবার প্রচলন আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার ২০০৮ সাল থেকে এ সেবা প্রদান করে আসছে। অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর মাধ্যমে হাতে কলমে শেখানো হবে প্রান্তিক রোগীদের ব্যথা ও অন্য উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ, উপর্যুক্ত কথোপকথন এবং সার্বিক সেবার বিভিন্ন বিষয়। চিকিৎসাসেবা কর্মীরা নিরাময় অযোগ্য রোগীদের গভীর কষ্ট এবং দুর্দশা পর্যবেক্ষণ করেন, তার যথাযথ যতœ নেয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করি, তাদের দক্ষতা শুধু ব্যথা কমানো নয়, বরং এর গভীরে কী হচ্ছে, তা কিভাবে বর্ণনা করতে হবে এবং রোগী ও তার পরিবারকে কিভাবে আশা যোগাতে হবে সে ক্ষেত্রেও দক্ষতা বাড়ানো দরকার।
×