ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল ডিভাইস এ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো শুরু কাল

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

ডিজিটাল ডিভাইস এ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো শুরু কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘ডিজিটাল ডিভাইস এ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো’। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রকল্প ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির যৌথ উদ্যোগে আগামী ১৪ অক্টোবর (সোমবার) থেকে শুরু হবে এই আয়োজন। তিন দিনের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এক্সপোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। তিন দিনব্যাপী প্রদশর্নী সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বিনামূল্যে এই প্রদর্শনীতে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও অনলাইনে নিবন্ধন বা স্পট রেজিস্ট্রেশন করে প্রবেশ করতে হবে। এক্সপোর বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস এ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপোতে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দেয়া হবে। পাশাপাশি যেসব দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন করছে, তাদের জন্য থাকবে পৃথক জোন। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কোন স্বপ্ন নয় বরং বাস্তবতা। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা আমরা সবাই ভোগ করছি। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করে আমরাও উন্নতির মহাসড়কে অগ্রসরমান। প্রদর্শনীর বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক্সপোতে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি জ্ঞানকে বাড়িয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন থাকবে। থাকবে নিত্যনতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সেøাগানে এবারের প্রদর্শনীতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি পণ্য প্রদর্শন করা হবে। ডিজিটাল ডিভাইস এক্সপোর্টিং কান্ট্রিতে পরিণত হতে চাই। দেশে প্রতিবছর হাজারও ডিজিটাল ডিভাইস আমদানি করতে হয়। তাই আমরা চাই এমন একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে যা আমাদের ডিজিটাল ডিভাইস রফতানির দেশে পরিণত করবে। আর এই আয়োজন সেই স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর অনেক দেশের রোল মডেল। প্রযুক্তির প্রদর্শনী নিজেদের সক্ষমতা প্রকাশ করে। দেশে এখন হাইটেক পার্কের সফলতা দৃশ্যমান। হাইটেক পার্কের কল্যাণে জেলা-উপজেলা এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরাও প্রযুক্তির সুফল পাচ্ছেন। এক্সপো থেকে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। ফোরজি প্রযুক্তি ছাড়িয়ে পৃথিবী এখন ফাইভজি প্রযুক্তির দিকে ধাবমান। দ্রুত বদলে যাওয়া প্রযুক্তি বিশ্বের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে এই এক্সপো মাইলফলকের ভূমিকা রাখবে। দেশেও ফাইভজি চালু করার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে চূড়ান্ত নীতিমালা প্রকাশ করা হবে। নীতিমালার আলোকে ফাইভজি লাইসেন্স ইস্যু হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, ডিজিটাল ডিভাইস এ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপোর মাধ্যমে দেশে বিনিয়োগ তৈরি হবে। কারণ এই এক্সপোতে বিদেশী নাম করা বহু প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। তারা দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ বাড়াতে বিশেষ সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যাতে দেশী বিদেশী কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী হন। এমনিতেই তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ এই মুহূর্তে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। আমরা ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসাবে বিশ্বে উপস্থাপন করতে চাই। সরকারের এই ভিশন বাস্তবায়নে আইসিটি খাত দক্ষ জনবলও তৈরি হচ্ছে। হাইটেক পার্কগুলো পুরোপুরি অপারেশনে এলেই দেশ অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে। আমরা যদি তুলনামূলক হিসাব দেখি তাহলে দেখা যাবে, ২০১৪ সালে দেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো ১৫০ জিবিপিএস। বর্তমানে যার পরিমাণ ৮৫০ জিবিপিএস’র (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) বেশি ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে এর পরিমাণ ছিল ৩৫০ জিবিপিএস। একই বছরের আগস্টে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২১ জিবিপিএসে। এই হারে ব্যান্ডউইথ বাড়তে থাকলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ এক টেরাবাইটে (১০২৪ জিবিপিএস) পৌঁছবে। আগামী জানুয়ারিতে ব্যান্ডউইথের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে এক হাজার ২শ’ জিবিপিএস। দেশের তরুণরা অনেক মেধাবী। এই তরুণ সমাজের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাবে। বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস বানিয়ে রফতানি করা সম্ভব হবে। আবার অনেকেই বিশ্বমানের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ দেশ উন্নয়নে অবদান রাখবেন। সরকারের ভিশিন ২০২১ সালের মধ্যে দেশ পুরোপুরিভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ হবে। আমাদের তরুণ-তরুণীরা সরকারের লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। আইডিয়া প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানান, এক্সপোর নামকরণ দেখেই বোঝা যায় এবারের প্রদর্শনীকে আমরা নিত্যনতুন আবিষ্কার ও উদ্ভাবন দিয়ে সাজিয়েছি। সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থীদের সেরা উদ্ভাবনগুলো এখানে প্রদর্শন করা হবে। স্বনামধন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নাম দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করবে। পৃথিবী জানবে ছোট এই দেশটিও প্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্সপোর নলেজ পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। যাদের কাছে আমাদের আশা ভরসা, তারাই স্বপ্রণোদিতভাবে এই এক্সপোর অংশ হচ্ছে। প্রযুক্তির আশীর্বাদ হিসেবে প্রতিটি মানুষের জীবনকে সহজ করছে।
×