ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দলীয় অনুষ্ঠানে মেনন

বিএনপি-জামায়াত এখন ভারতবিরোধিতা নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টায়

প্রকাশিত: ১১:২৯, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

বিএনপি-জামায়াত এখন ভারতবিরোধিতা নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াত এখন তাদের ভারত বিরোধিতা এবং ধর্মবাদী রাজনীতি নিয়ে নতুনভাবে মাঠে নামার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। শনিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত দলীয় এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। তিনি বলেন, যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের প্রচার মাধ্যমসহ ইতোমধ্যে আবরারকে আগ্রাসন বিরোধী প্রথম শহীদ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তার পুনরুক্তি করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এতেই বোঝা যায় তারা আবরারের নিষ্ঠুর হত্যার বিচারের চাইতে তাদের লক্ষ্য হচ্ছে এটা নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যকে ফেনী নদীর পানি দেয়া নিয়ে তারা আপত্তি তুলেছে একথা উল্লেখ করে ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা বলেন, এটা স্পষ্ট করে বুঝতে হবে ত্রিপুরা রাজ্য আমাদেরকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ আশ্রয় দিয়েছিল। এমনকি তাদের জনগণের চাইতে আমাদের আশ্রয় গ্রহণকারী জনগণের সংখ্যা বেশি ছিল। তারা তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিল। তাদের একটা শহরের জন্য এক গ-ুষ পানি তাদের প্রয়োজন পড়ে, সেটা আমরা দিব না। সেটা হতে পারে না। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে যে আমরা এখনও পর্যন্ত তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়ে চুক্তিতে আসতে পারিনি এমন মন্তব্য করে মেনন বলেন, আমি মনে করি যদি বামফ্রন্ট থাকত অথবা জ্যোতি বসু থাকতেন এই সমস্যার সমাধান হতো। কিন্তু যারা সেদিন মমতা ব্যানার্জীর নির্বাচনের বিজয়ের পরে লাফালাফি করেছিলেন। তারা তার কাছ থেকে কিছুই আনতে পারেনি। আজকে বিএনপি তাদের দীর্ঘ শাসন আমলে তিস্তা কেন গঙ্গার পানিও আনতে পারেনি। অন্যদিকে যে গ্যাসের কথা তারা তুলেছেন যে গ্যাসের চুক্তি হয়েছে, সেই গ্যাসের বিষয়ে একই কথা প্রযোজ্য। তারাই বিএনপির আমলে এই গ্যাস ভারতকে দেয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল। আমরা সেদিন জাতীয় কমিটির মাধ্যমে বিবিয়ানা লং মার্চ করার মধ্য দিয়ে সেই গ্যাস রফতানি বন্ধ করতে বাধ্য করেছিলাম এবং শেখ হাসিনাও একইভাবে বলেছিলেন যে গ্যাস দেয়া যাবে না। আর আজকে সেখানে চুক্তি হয়েছে এলপিজি গ্যাস, প্রাকৃতিক গ্যাস নয়। সুতরাং জনগণের মধ্যে এই বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কোন লাভ আছে বলে মনে হয় না। তবে এটা ঠিক ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি সংবেদনশীলতা দেখাচ্ছি। ভারত সেটা এখনও পর্যন্ত দেখাতে পারছে না। আমাদের মনে হয় ভারতকে বুঝতে হবে কিছু পেতে গেলে অবশ্যই তাদের কিছু দিতেও হয়। এটা যদি তারা না বুঝে তাহলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আজকে যে উচ্চতায় পৌঁছেছে সেই সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই সেটা বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা আশা করব উভয় দেশের জনগণ পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে। শনিবার রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মতিঝিল থানা সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেনন বলেন, আমাদের এই মুহূর্তের কাজ হচ্ছে উন্নয়নের পক্ষে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা। সেই ইস্যুকে বাদ দিয়ে যারা সমস্ত জনগণের ইস্যুকে ঘুরিয়ে আজকে অন্যদিকে নিয়ে যেতে চায়, তারা আসলে জনগণের বন্ধু হতে পারে না।
×