ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণায় অসন্তোষ

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণায় অসন্তোষ

বিভাষ বাড়ৈ ॥ অধিকাংশ দাবি পূরণের প্রেক্ষাপটে আন্দোলন দু’দিন স্থগিত করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। ফলে আগামীকাল নির্ধারিত সময়ে বুয়েটের নতুন শিক্ষা বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তার অবসান হয়েছে। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে জামায়াত-শিবিরসহ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর একচ্ছত্র প্রভাব থাকা বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘোষণায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের তৎপরতা নিয়ে। সাবেক ও বর্তমান ছাত্র নেতাসহ প্রগতিশীল শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ঘোষণায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে গোপনে তৎপর শিবিরসহ উগ্রবাদীদের চাওয়াই পূরণ হলো। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত সেই অন্ধকারের শক্তির স্বার্থ রক্ষা করবে। নির্বিঘেœ শক্তিশালী হবে প্রতিক্রিয়াশীল অন্ধকারের শক্তি। ‘স্বল্প সময়ে বাস্তবায়নযোগ্য’ পাঁচ দফা দাবি না মানলে বাংলাদেশ ভর্তি পরীক্ষা হতে না দেয়া হবে না বলে শুক্রবার রাতেই ঘোষণা করেছিলেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এরপর শনিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ দুপুরে দাবি মেনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো। মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের রবিবার (আজ) দুপুর ১২টার মধ্যে বুয়েট ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল থেকে বুয়েটের হলে হলে অভিযান শুরু করে প্রশাসন। ইতোমধ্যে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জামি-উস সানি ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেলের অফিস কক্ষ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পর যেসব কক্ষে প্রাক্তন ও চার সিটের যেসব কক্ষে দু-একজন করে ছাত্র থাকেন তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চলছে। এছাড়া আগামীতে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরেই চাওয়া পূরণ হওয়ায় ঘোষণা থেকে সরে এসেছেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে তারা ঘোষণা দিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের সম্মানের কথা চিন্তা করে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে আগামী দুই দিন আন্দোলন স্থগিত রাখছেন তারা। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা বলেছেন, আমরা পরীক্ষার্থীদের সম্মান জানিয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেব। আগামী দুই দিন ররি ও সোমবার আন্দোলন স্থগিত থাকবে। এরপর আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ১০ দফার আন্দোলন চলবে। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ মানুষের উদ্বেগের মধ্যে ছিল আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি। ঠিক সময়ে হতে পারবে কিনা তা নিয়ে ছিল উদ্বেগ। তবে শনিবারের ঘোষণায় সে চিন্তা কেটে গেছে। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল। তবে একই সঙ্গে তিনি উদ্বিঘœ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রভাব থাকা বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘটনা নিয়ে। অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল জনকণ্ঠকে বলছিলেন, বুয়েটে শিবির, হিজবুত তাহরীরের মতো সংগঠনগুলো ব্যাপকভাবে সক্রিয় আমরা তা দেখেছি। তাদের হাতে ইতোপূর্বে একাধিক শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন, অনেকে মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। ওই শক্তি সক্রিয় থাকে গোপনে। তাদের কাজ চলে গোপনে। তাই স্বাধীনতাবিরোধী উগ্রবাদীদের প্রভাব থাকা এমন একটি প্রতিষ্ঠানে যখন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হবে সেখানে ভয়ঙ্করভাবে শক্তিশালী হবে সেই অপশক্তিই। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ নয় বরং পরিশীলিত ছাত্র রাজনীতি করার পথ তৈরি করতে হবে। সেটা করলেই বরং একটি বিশ^বিদ্যালয় প্রগতিশীল সত্যিকারের আধুনিক মানুষ তৈরি করতে পারবে। এক প্রশ্নের জবাবে এ শিক্ষক নেতা বলেন, কোনভাবেই গণহারে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রগতিশীল মুক্তমনা মানুষকে অবশ্যই কাজ করতে হবে। অন্যথায় মৌলবাদী গোষ্ঠীর ভয়ঙ্কর উত্থান ঘটছে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সুযোগে। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে কাজ করতে হবে মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা বন্ধে। সতর্ক থাকতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। তবে যতকিছুই করা হোক মোট কথা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয় বরং পরিশীলিত ছাত্র রাজনীতির চর্চা আরও বেশি জরুরী। সেটাই নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে কেবল এ শিক্ষক নেতাই নন। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়েছে উগ্রবাদী গোষ্ঠী ছাড়া প্রতিটি ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। শিক্ষক নেতা ও বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকেই বুয়েটে নিরপেক্ষতার আড়ালে বুয়েট এ্যালামনাই এসোসিয়েন সরকার বিরোধীদের সহায়তা করে বলে অভিযোগ তুলেছেন। আতঙ্কে এই মুহূর্তে বুয়েটের কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ করে নিজের অসন্তোষের কথা প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছেন না। তবে শিক্ষকরা অনেকেই বলছেন, বুয়েটে কেবল এবারই প্রথম নয়। সরকারবিরোধী কোন একটা ইস্যু হলেই বুয়েটে সব সময় সক্রিয় হয় এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের কিছু ব্যক্তি। এর আগেও প্রগতিশীল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলা আন্দোলনে তারা এবারের মতোই এসে যোগ দিয়েছিল। তবে প্রগতিশীল শিক্ষার্থী দ্বীপকে যখন মৌলবাদীরা কুপিয়ে হত্যা করা ছাড়াও অনেককে জখম করার সময়েও তারা ছিলেন নীরব। তার আগে ছাত্রদলের হাতে নিহত সাবেকুন নাহার সনি হত্যার সময়েও নীরব ছিলেন তারা। খোদ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিও ইতোমধ্যেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, বুয়েটে আবরার হত্যাকা- ছাড়াও এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে, তখন শিক্ষক ও এ্যালামনাই এসোসিয়েশন কোথায় ছিলেন? তখন তারা কেন আন্দোলনে নামেননি? কেন এখন সকলে মিলে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন? এটি আমার কাছে রহস্যজনক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, সব ক্ষেত্রে রাজনীতিকে দোষ দিলে হবে না। রাজনীতি ছাড়া দেশ চলে? আপনি যা কিছু করবেন তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই চলে। কিন্তু রাজনীতিটা যেন সুষ্ঠু হয়, সুস্থ ধারার হয়। রাজনীতিকে যেন ক্ষমতার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কেউ কোন অপকীর্তি করতে না পারে। এর জন্য রাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আর এক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদেরও একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। দীপু মনি বলেন, বুয়েটে যেই ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে রাজনীতি হয়তো অপরাজনীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার সবকিছু হয়তো একটি ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আবাসিক হলগুলোতে র‌্যাগিং, বুলিংয়ের অপসংস্কৃতি ছিল দীর্ঘদিন ঘরে, যেটি পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই আছে এবং তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সেটি বন্ধ করার ক্ষেত্রে বুয়েটের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের আগে থেকেই যদি একটু উদ্যোগ থাকত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। জানা গেছে, বুয়েটের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একটি অংশ শিবিরকে সমর্থন দেয়ার বিপক্ষে। তারাও কেউ এই মুহূর্তে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চান না। তবে তারাও বুয়েট অধ্যাদেশ অনুসারে প্রতিষ্ঠিত এ্যালামনাই ফেডারেশনের বাইরে সক্রিয় এ সংগঠনের কর্মকা- নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে বুয়েটের অশিকাংশ শিক্ষকই সরকারবিরোধী ও মৌলবাদী আদর্শ ধারণ করেন বলে অভিযোগ আছে। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও তার সত্যতা বেরিয়ে এসেছে। বুয়েটের প্রগতিশীল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, বুয়েটে শিবিরসহ উগ্রবাদীরা নীরবেই সব সময় কাজ করে। তারা রুমে রুমে ধর্মীয় সভা, মসজিদে নামাজের পর আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে সক্রিয় থাকে। সরকারকে তাই এখন এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ উঠেছে সাবেক ও বর্তমান ছাত্র নেতাদের থেকে। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে বলে মন্তব্য জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। তার মানে এই নয় যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। আমি, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাই ছাত্র রাজনীতি করেছেন। মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলতে হবে এটা মানতে আমি রাজি নই। যখনই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হবে তখনই মৌলবাদীরা সুযোগ নেবে। অতীতে এটাই হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলে বুয়েট কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও মেননের মতো একই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। জাহাঙ্গীর কবির নানকও সাম্প্রদায়িক শক্তি নিয়ে বুয়েট প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তবে বুয়েটে যেন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করায় সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান না ঘটে, সেই বিষয়ে প্রশাসনকে নজর রাখতে হবে। বুয়েট কর্তৃপক্ষের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ। তিনি বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ- এটা কোনভাবেই সাপোর্ট করি না। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করলে সমস্যা আরও বাড়বে। তাছাড়া বুয়েট প্রশাসন সব সময়ই রাজনীতি মুক্ত ছিল। ছাত্র রাজনীতির প্রভাব কোন সময়ই বুয়েট প্রশাসনের ওপর ছিল না। সনি হত্যাসহ গত এক দশকের ঢাবি ও বুয়েটের প্রতিটি ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র দেব। তিনি বুয়েট কর্তৃপক্ষের ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে গোপনে উগ্রবাদীদের চাওয়াই পূরণ হচ্ছে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত সেই অন্ধকারের শক্তির স্বার্থ রক্ষা করবে। নির্বিঘেœ শক্তিশালী হবে প্রতিক্রিয়াশীল অন্ধকারের শক্তি। আমার কথা হচ্ছে ছাত্র রাজনীতির জন্য আজকের সমস্যা না। বরং ছাত্র রাজনীতি না থাকাই এর জন্য দায়ী। বুয়েট চলে পাকিস্তানী স্বৈরশাসনের আমলের একটি অধ্যাদেশ দিয়ে। এখানে এমনিতেই শিক্ষক-ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাহলে নতুন করে ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করার মানে হচ্ছে অন্ধকারের শক্তিকে আরও শক্তি যোগানো। নিষিদ্ধ নয় বরং রাজনীতি গণতান্ত্রিক চর্চা আরও উন্মুক্ত করতে হবে। ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও মনে করছেন এতে সমস্যা আরও প্রকট হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেউ কি নিশ্চয়তা দিতে পারবে যে, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে আর কোন সমস্যা হবে না? এতে সমস্যা আরও বাড়বে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকলে জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, যা প্রতিষ্ঠান ও দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। বুয়েট প্রশাসনের কাছে অনুরোধ থাকবে ভবিষ্যতে যেন বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। জয় আরো বলেন, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে মৌলবাদী, জঙ্গীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। এছাড়া প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা বেড়ে যাবে। যা মোটেও শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণ হবে না। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আমরা কখনও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পক্ষে ছিলাম না। কারণ দেশের সঙ্কট মুহূর্তে ছাত্র রাজনীতির ভূমিকা অনেক। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে এর ভুলত্রুটি থাকলে তা শুধরে নিয়ে সঠিক পথে আনা যায়। আমরা মনে করি ভুল থাকতেই পারে। সেই ভুল সুধরে নেয়া যায়। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর পথ প্রশস্ত হতে দেয়া হবে না। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকলে জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, যা প্রতিষ্ঠান ও দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার চালটি একটি চরম প্রতিক্রিয়াশীল উদ্যোগ বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কথিত ছাত্র রাজনীতি বন্ধ আছে সেখানেও প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ ও গোপনে ছাত্র শিবিরের তৎপরতা আছে। এছাড়া প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র সেখানে প্রবল মাত্রায় চালু থাকবে।
×