ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

সূচকের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমছে

প্রকাশিত: ০৯:২২, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

সূচকের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতন হয়। সেই সঙ্গে দাম কমে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। একইসঙ্গে সেখানে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও কমেছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্সসহ বাকি দুটি সূচকেরও বড় পতন হয়। সূচকের এই পতনের মধ্যে বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৮৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এতে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাতও কমেছে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৩১৯ কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৫ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৩৯১ কোটি ৭৭ লাখ ৫৭ হাজার ৯০১ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৭২ কোটি ৫৫ লাখ ৮০ হাজার ৮২৫ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২৮ পয়েন্ট বা ২.৫৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮১০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২৫ পয়েন্ট বা ২.২০ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫১ পয়েন্ট বা ২.৮৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১১১ পয়েন্ট এবং ১৭০৪ পয়েন্টে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে ৫২ কোটি ৯৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৫০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৭ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৯৭ কোটি ৯৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪২ টাকা বা ৬৫ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৬৭ পয়েন্ট বা ২.৪৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৫৫ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স ২২২ পয়েন্ট বা ২.৪৩ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ২৩৫ পয়েন্ট বা ১.৭৮ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ২৫ পয়েন্ট বা ২.২৫ শতাংশ এবং সিএসআই ২১ বা ২.১৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮ হাজার ৯০০, ১২ হাজার ৮৮৭, ১ হাজার ৭৯ ও ৯৫৯ পয়েন্টে। গতসপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৫টির, দর কমেছে ২৪৭টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টির। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৩ দশমিক ৩১ পয়েন্টে, যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষেও দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৯০ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত কমেছে দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। খাতভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বরাবরের মতো সব থেকে কম পিই রেশিও রয়েছে ব্যাংক খাতের। সপ্তাহ শেষে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭ দশমিক ৩০ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৭ দশমিক ৩২ পয়েন্টে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের পিই কমেছে দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের পিই ১১ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট থেকে কমে ১১ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর পরের স্থানে রয়েছে টেলিযোগাযোগ খাত। এ খাতের পিই ১২ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট থেকে কমে ১২ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বীমা খাতের পিই রেশিও ১২ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১৬ দশমিক ৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রকৌশল খাতের ১৩ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট থেকে কমে ১৩ দশমিক ২৭ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট থেকে কমে ১৩ দশমিক ৩২, সেবা ও আবাসন খাতের ১৪ দশমিক ৭০ পয়েন্ট থেকে কমে ১৩ দশমিক ৯৬, খাদ্য খাতের ১৬ দশমিক ২০ পয়েন্ট থেকে কমে ১৫ দশমিক ১৮ এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৭ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১৭ দশমিক ৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাকি খাতগুলোর পিইও রেশিও ২০ পয়েন্টের ওপরে। এর মধ্যে-তথ্যপ্রযুক্তি ১৭ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে থেকে বেড়ে ২০ দশমিক ৩২ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ১৮ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ২০ দশমিক ৭৪, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ১৯ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ২৩ দশমিক শূন্য ৩, সিরামিক খাতের ২১ দশমিক ২৯ পয়েন্ট থেকে কমে ২০ দশমিক ৬২, চামড়া খাতের ২০ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট থেকে কমে ২০ দশমিক ২৭, বিবিধ খাতের ২৩ দশমিক ৬১ পয়েন্ট থেকে কমে ২৩ দশমিক ২০, সিমেন্ট খাতের ২৫ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট থেকে কমে ২৪ দশমিক ৮৯, পেপার খাতের ২৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট থেকে কমে ২৪ দশমিক ৫৯ এবং পাট খাতের ৪১৪ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট থেকে কমে ৩৯০ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
×