ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদেশে তৎপর বিএনপি জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী

অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চক্রান্ত অশুভ শক্তির

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১২ অক্টোবর ২০১৯

  অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চক্রান্ত অশুভ শক্তির

শংকর কুমার দে ॥ আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতায় দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল ও অশান্ত পরিস্থিতি তৈরি করে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে ষড়যন্ত্রের ছক কষছে অশুভ চক্র। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ড সামনে রেখে ইতোমধ্যেই বিদেশে তৎপরতা শুরু করেছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ আটকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেছিল যে মহল তারাই এখন আন্তর্জাতিক মহলে সক্রিয়। সরকারের বিরুদ্ধে কোন ইস্যুতেই কোন সুবিধা করতে না পেরে আবরার হত্যাকা-ের ঘটনায় দেশে বাক স্বাধীনতা নেই আবার অভিযোগ সামনে এনে আন্তর্জাতিক মহলকে ভুল বোঝানো হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের ঘটনা অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার ইঙ্গিত পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। এ বিষয়ে তারা সতর্কবার্তাও দিয়েছে সরকারকে। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনয়নকারী সেই মহলটি আবরার হত্যাকা-ের ঘটনাটিকে রাজনৈতিক আবরণ দিতে চাইছে। ওই মহলটির সঙ্গে আছে বিএনপি-জামায়াতা-শিবির, যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, কিসের ছাত্রলীগ, কিসের দল, অপরাধীরা অপরাধীই, খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের আশ্বাস দেয়ার পরও ওই মহলটি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য ছাত্র সমাজসহ বিভিন্ন মহলের মধ্যে উস্কানি দিয়ে চলেছে। কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মতো আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনা নিয়ে সারাদেশে ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র বিক্ষোভ করে সরকারকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার ষড়যন্ত্রের ছক কষা হয়েছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের ঘটনাতে সরকার কঠোর হস্তে খুনীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলার পরেও এটা নিয়ে আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য হলো এই বিষয়টাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করা। ছাত্রদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার একটি নীলনক্সা প্রণীত হয়েছে বলেও মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের পর সরকার যথাযথ কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ সত্ত্বেও জাাতিসংঘ ও যুক্তরাজ্য খুবই দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিবৃতি প্রদানের বিষয়টি খুবই ইঙ্গিতপূর্ণ। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। বুধবার ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ডিকাব-টক অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান তিনি। যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের এক বার্তায় বলা হয়, বুয়েটে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও মর্মাহত। যুক্তরাজ্য বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রসঙ্গে নিঃশর্তভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এ ছাড়াও বিদেশী কয়েকটি দূতাবাসের দূতদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে সরকার বিরোধী একটি অশুভ মহল, যারা দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল ও অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্দোলনরত ছাত্রদের ১০ দফা দাবির প্রায় সব দাবিই নীতিগত মানার কথা বলেছেন কর্তৃপক্ষ। এরপরও আবরার ফাহাদ হত্যাকা-ের ঘটনায় বিদেশীদের এত দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও বিবৃতিদানের পেছনে কলকাঠি নাড়ার ইঙ্গিত বহন করছে। নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে পদ্মাসেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ আনয়নকারী সেই মহলটির তৎপরতায়, যাতে দেশে অস্থিতিশীল ও অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের কোন না কোন স্টেটে প্রায় প্রতিদিনই স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে গুলি করে পাখির মতো মানুষজন মারা হচ্ছে, ইউরোপের কোন না কোন দেশে মানুষজনকে গুলি করে, চাকু মেরে খুন করার ঘটনা ঘটছে, তারপরও এত দ্রুতগতিতে তো দূরের কথা কোন প্রতিক্রিয়াই দেখা যায় না। সরকার আবরারকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও হত্যাকান্ডের বিষয়টিকে যারা অন্য খাতে নিয়ে যেতে চাইছে, বা এটাকে রাজনৈতিক মোড়কে আবৃত করতে চাইছে- পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ও নিয়ন্ত্রণহীন না হওয়ার আগেই সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তাগিদ দিয়েছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
×