ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আবরার হত্যার দায় স্বীকার করে আসামি জিওনের আদালতে জবানবন্দী

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১২ অক্টোবর ২০১৯

আবরার হত্যার দায় স্বীকার করে আসামি জিওনের আদালতে জবানবন্দী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার দায় স্বীকার করে আরও এক আসামি আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। শুক্রবার বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাতুল ইসলাম জিওনের দেয়া জবানবন্দীতেও উঠে এসেছে আবরার হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা। জিওনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল আবরার হত্যার দায় স্বীকার করে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন। এদিকে আবরার হত্যার ঘটনায় শামীম বিল্লাহ নামে আরও এক এজাহারনামীয় আসামিকে শুক্রবার সাতক্ষীরা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ নিয়ে আবরার হত্যার ঘটনায় মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার হলো। অন্যদিকে আবরার হত্যা মামলায় আটক বুয়েট ছাত্র অমিত সাহা ও হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। শুক্রবার জিওনকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে হাজির করেন আবরার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। জিওন বিচারকের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। জবানবন্দী গ্রহণ শেষে বিচারক জিওনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্যদিকে শুক্রবার আবরার হত্যা মামলায় আটক আসামি অমিত সাহা ও তোহাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান শুনানিতে অংশ নেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক দুই আসামিকেই পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আবরার হত্যা মামলায় আটক বুয়েট ছাত্র মিজানকে শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান মিজানকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মিজানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৭তম ব্যাচের ইলেক্ট্রিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদকে। সেদিন রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলা থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানায়, আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ বাদী হয়ে ৭ অক্টোবর লালবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পরপরই গ্রেফতার করা হয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেলকে (২৪)। তিনি বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১৩তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সহ-সভাপতি মুহতামিম ফুয়াদ ১৪তম ব্যাচের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার। বুয়েটের ১৫তম ব্যাচের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল ১৬তম ব্যাচের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাতুল ইসলাম জিওন নেভাল আর্কিটেকচার মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। ছাত্রলীগ কর্মী মুনতামির আল জেমি, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মোজাহিদুর রহমান ইলেক্ট্রিক এ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মেহেদী হাছান রবিন মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। এজাহারে নাম না থাকা চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হচ্ছে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), অমিত সাহা (সিই), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোর্সেস, ১৬তম ব্যাচ) ও শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং)।
×