ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গরিবের ডাক্তার ব্রি.জে. (অব) আবদুল মান্নান

প্রকাশিত: ০৮:৫২, ১২ অক্টোবর ২০১৯

 গরিবের ডাক্তার ব্রি.জে. (অব) আবদুল মান্নান

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতির এক কৃষক পিতার সন্তান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মান্নান। পেশায় একজন ডাক্তার। পদের অহংকার প্রভাব, খ্যাতি কোন কিছুই তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। চাকরি জীবন থেকেই তিনি প্রভাব, খ্যাতি এবং অর্থের পেছনে না দৌড়ে আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। দরিদ্র মানুষকে স্বেচ্ছাসেবায় চিকিৎসা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। গত ২০ বছর ধরে কালিয়ার দরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যেই তিনি ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন। গরিবের ডাক্তার উপাধি খ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল মান্নান বাড়িতে আসার খবর পেলেই বিভিন্ন এলাকা থেকে দরিদ্র রোগীরা ছুটে যান তার কাছে। নিজ বাড়িতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে দরিদ্র রোগির বিনা পয়সায় চিকিৎসা। তিনি পেশায় সিএমএইচ ও আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ ঢাকা এর বিভগীয় প্রধান (অর্থপেডিক)। মাঝে মধ্যে তিনি দরিদ্র রোগীদের বিনা মূল্যে ওষুধ বিতরণ এবং অপারেশনের কাজও করে থাকেন। সম্প্রতি তিনি বেড়াতে এসেছিলেন নড়াগাতির নিজ বাড়িতে। তিনি বেড়াতে আসায় বাড়ির চিত্র হয়েছিল ভিন্ন। দেখে বোঝার উপায় ছিল না এটি বাড়ি না হাসপাতাল। গোটা বাড়িটাই যেন একটি হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছিল। রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেবার সময় কথা হয় গরিবের ডাক্তার উপাধি খ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল মান্নান এর সঙ্গে। তিনি তার পুত্রবধূ ডাঃ নাফিসা মাহামুদকে নিয়ে বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। দরিদ্র রোগীরা তাকে ভালবাসার টানে ছুটে এসেছে তার কাছে। পুত্রবধূকে নিয়ে বিনামূল্যে চিকৎসাসেবা দিচ্ছেন তিনি। শুধু দরিদ্র রোগীরাই নয় সর্বস্তরের রোগীরাই ভিড় করে তার কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, শুধু গ্রামেই নয় তার কর্মস্থল ঢাকাতেও তিনি দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেন। নামমাত্র খরচে তিনি গ্রাম থেকে ঢাকায় যাওয়া রোগীদের জন্য অপারেশনের ব্যবস্থা করে দেন। পায়ে ব্যথা নিয়ে কালিয়া চিকিৎসা সেবা নিতে এসেছিলেন রহিমা বেগম। তিনি বলেন, বিনা পয়সায় এত বড় একজন ডাক্তার দেখাতে পারবে তা তিনি ভাবেননি কখনও তাই তিনি ছুটে এসেছেন এখানে, অপরদিকে এক বৃদ্ধা বেগম বলেন অন্য ডাক্তার দেখালে রোগ ভাল হয় না এই ডাক্তার রোগ ভাল করতে পারে। বাঔসোনা থেকে আসা আতাউর রহমান, সুমন হাচান, সাদিয়া বেগমসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, তাদের নয়নের মণি এই ডাক্তার কখনও কোন টাকাপয়সা নেন না, সর্বদা বিনা পয়সায় রোগী দেখেন মাঝে মধ্যে বিনা পয়সায় ওষুধও বিতরণ করেন। তিনি তার কর্তব্যের জায়গা থেকেই স্বেচ্ছাসেবায় এ কাজ করে থাকেন। দরিদ্র মানুষদের সঠিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করাই তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা। স্বেচ্ছাসেবায় চিকিৎসাসেবার এ ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি সকলের সহযোগিতা এবং দোয়া প্রার্থনা করেন। -রিফাত-বিন-ত্বহা, নড়াইল থেকে
×