প্রীতিভাজন কবি-আইউব সৈয়দ
আন্দর কিল্লায় গেলেই আমার মাতুলের কথা মনে পড়ে।
সে বছর মাতুলের সাথে গিয়েছিলাম একটি
বাড়ির ভুল ঠিকানায়। গিয়ে পড়লাম বিপদে
বার দুই দরজায় কড়া নাড়তেই
বেরিয়ে এলেন বাড়ির মালিক
তিনি রাগী চেহারার।
মাতুল জানতে চাইলেন, আপনিই তো হাশেম আলী?
মাতুলের কথা শেষ হতে না হতেই, লোকটি ভীষণ রেগে গিয়ে
দেখিয়ে দিলেন
দরজার ওপরে লেখা লোকটির নাম ও ঠিকানা বিশাল অক্ষরে লেখা
কবি সৈয়দ সানোক উল্লাহ।
ক্ষিপ্ত প্রায় ভদ্রলোক চিৎকার করে জানিয়ে দিলেন- ঐ যে দেখছেন
চলে যান শাহানা ভিলায়। নিমক হারামের বাড়িতে।
এক্ষণি বেরিয়ে যেতে হবে পাড়া থেকে। নয় তো ডাকবো পুলিশ
খুনী বলে হাতে তুলে দেবো পুলিশের।
লোকটি আরো কিছু বলার আগেই দেখি এদিকে আসছেন
আন্দর কিল্লার বিশিষ্ট মৎস্য শিকারি। হাতে মাছ
ধরবার জাল নিয়ে কাছে আসতেই ক্ষিপ্ত প্রায় সেই সৈয়দ
সাহেব জানালেন ধীবর বাবুকে এই লোক দুটিকে
এক্ষুণি তোর জালে আটকিয়ে ফেলে দিখিব কর্ণফুলীতে
অথবা সাগরে।
তক্ষুণি আমি আর আমার প্রিয় মাতুল পালিয়ে এলাম সৈয়দ সাহেবের
বাড়ির সামনে থেকে। কিছুটা পথ এগিয়ে আসতেই- দেখি কিছু লোক
লাঠিসোটা হাতে আসছে ধরতে আমাদের। সেই সৈয়দ কবি আছেন সবার আগে। তিনি চিৎকার করে আমাদের নিকট থেকে জানতে চাইলেন, তোরা কি সেই লোক- থেমে বললে পুনরায় মামাকে দেখিয়ে
তুই তো সেই লোক তোরই তো ছবি ছাপা হয়েছিল।
কসাই টিক্কা খানের সাথে। দৈনিক সংগ্রামে?
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, উনি আমার মাতুল প্রিয় রোকানালী ওর ছবি
ছাপা হয়েছিল...
আমাকে থামিয়ে দিয়ে... লাঠিসোটা হাতে সকলেই বললো এক্ষুণি পালিয়ে যা
নয়তো দু’জনেই যাবি সাগরে।
সেই যে, পালিয়ে এলাম আন্দর কিল্লা থেকে
এখনো যাইনি যাবো কিনা চাটগাঁ, গেলে যদি চিনতে পারে
সৈয়দের লোক, সেই ভয়ে লুকিয়ে থাকি মাতুলের গোয়াল ঘরে।
আমরা দু’জন।