ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অটো এবং হাসকিং চালমিলের বরাদ্দ বৈষম্যের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৮ অক্টোবর ২০১৯

 অটো এবং হাসকিং চালমিলের বরাদ্দ বৈষম্যের অভিযোগ

হারেজুজ্জামান হারেজ, সান্তাহার ॥ সরকারী চাল সংগ্রহে উপজেলা ও জেলা খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অটোমেটিক এবং হাসকিং চালমিলের বরাদ্দে ব্যাপক বৈষম্য করার অভিযোগ তুলেছেন হাসকিং চালমিল মালিকগণ। খাদ্য অধিফতরের সংগ্রহ বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের শুধু চকচকে চালের কারণে অটো প্রীতি নয়, নেপথ্যে মোটা অঙ্কের পিসি লেনদেন মূল কারণ বলে অভিযোগ হাসকিং চালকল মালিকদের। তারা বলেন, অলিখিত পিসি চুক্তিতে কাগজ-কলমে অটো চালমিলের ছাঁটাই ক্ষমতা বেশি দেখানো হয়। যে মালিক যত বেশি দেয় তার তত বাড়ে। বোরো মৌসুম-২০১৮, আমন মৌসুম-২০১৮-১৯ এবং ২০১৯ এর বোরো মৌসুমের জেলা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের করা মিল ভিত্তিক বিভাজন তালিকার তথ্য যাচাই করে হাসকিং চালকল মালিকদের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ২০১৮ এর বোরো সংগ্রহ মৌসুমে আদমদীঘি উপজেলার মোট পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা দেখানো ছিল ৩০ হাজার ১০৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১২ অটো চালমিলের পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা দেখানো হয় ১৯ হাজার ১৮৯ মেট্রিক টন। তাদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ১১ হাজার ৮৭ মেট্রিক টন। মোট বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ৩৯৭ মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ সালের আমন সংগ্রহ মৌসুমে এক লাফে উপজেলার পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয় ৫৩ হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টনে। ১২ অটোমিলের পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা দেখানো হয় ৪২ হাজার ৭৪১ মেট্রিক টন। তাদের বরাদ্দ দেয়া হয় ৬ হাজার ১৮১ মেট্রিক টন। মোট বরাদ্দ ছিল ৭হাজার ৭৬৭ মেট্রিক টন। এই আমন মৌসুমে উপজেলায় অতিরিক্ত বরদ্দ দেওয়া হয় ১হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১২অটোমিলে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১হাজার দশমিক ৪০০ মেট্রিক টন। পক্ষান্তরে হাসকিং মিলে সর্বনিম্ন ৩০০ কেজি বরাদ্দ দেয়ার রেকর্ড গড়েছেন। ২০১৯ সালের বোরো সংগ্রহ মৌসুমে উপজেলার পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা দেখানো হয়েছে ৪৮ হাজার ৮ মেট্রিক টন। ১২ অটোমিলের পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা দেখানো হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৭১ মেট্রিক টন। তাদের বরাদ্দ দেয়া হয় ১০ হাজার ৬৪২ মেট্রিক টন। মোট বরাদ্দ ১৪ হাজার ৪৪৭ মেট্রিক টন। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ শাহানশাহ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দেখিয়ে দেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বিভাজন করার জন্য বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি চালকল মালিকগণের আবেদন পর্যালোচনা করে প্রস্তাব অনুমোদন করেন। তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত বিভাজন করা হয়। এ কারণে আর্থিক লেনদেন হবার কোন সুযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু খাদ্য বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানান, বিভাজন কমিটি শুধু নামেই। কাগজিক কোন প্রমাণ নেই। কমিটির নাম ভাঙ্গিয়ে সব কিছু করেছেন জেলা-উপজেলার দুই কর্মকর্তা। অটো মিলের কাগজ-কলমে লাইসেন্সের অতিরিক্ত উৎপাদন দেখান এবং সে হিসাবে বেশি বরাদ্দ দেয়ার মূল কারণ ২৫ পার্সেন্ট।
×