ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ সামনে রেখে বই আড্ডা

প্রকাশিত: ১০:১৫, ৭ অক্টোবর ২০১৯

 বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ সামনে রেখে বই আড্ডা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ সামনে রেখে কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামালের ত্রয়ী উপন্যাস ‘অগ্নিমানুষ’, ‘অগ্নিপুরুষ’ ও ‘অগ্নিকন্যা’ বই নিয়ে এক আড্ডা হয় রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে রবিবার বিকেলে। শ্রাবণ প্রকাশনী আয়োজিত এ বই আড্ডায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন। বই নিয়ে আলোচনা করেন লেখক তুহিন ওয়াদুদ ও কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের বই আমাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুকে জানা এবং তার সংগ্রামী জীবনকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করবে। তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। একটি ইতিহাসকে উপন্যাসে রূপ দেয়া কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটি করেছেন কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামাল। তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষকে কেন্দ্র করে শ্রাবণ প্রকাশনীর বই আড্ডা এবং ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির উদ্যোগকে স্বাগত ও প্রশংসা করেন। কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন বলেন, আমি উপন্যাসের প্রেক্ষাপট ধরে বলতে চাই আমাদের সংগ্রাম, প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ফলে যে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি সেই সময়কে তুলে এনেছেন মোস্তফা কামাল এই ‘ত্রয়ী’ উপন্যাসে। তিনি ৪৭’র পরবর্তী সময় শুরু করেছেন অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীকে দিয়ে যেখানে বঙ্গবন্ধু রয়েছে প্রধান। এখানে ইতিহাসের পাশাপাশি উপন্যাসের আদল পেয়েছি। এই প্রজন্ম তাদের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট এই উপন্যাসের মধ্যদিয়ে বুঝতে পারবে। তুহিন ওয়াদুদ বলেন, মোস্তফা কামালের ‘অগ্নিকন্যা’ বইটি প্রকাশের পরপরই আমার বইটি পড়ার সুযোগ হয়েছে। এরপর পড়েছি ‘অগ্নি পুরুষ’। তিনি যখন তৃতীয় খ- বের করেছেন ‘অগ্নি মানুষ’, তারপর আমার মনে হয়েছে এটি একটি জায়গায় দাঁড়িয়েছে। ‘অগ্নি কন্যা’ বইটিতে দেখছি মতিয়া চৌধুরী ও তার পরিবারকে দেখছি। তাকে শুরুতে পুতুল নিয়ে খেলতে দেখেছি। উপন্যাসের শেষের দিকে আমরা তাকে একজন সংগ্রামী হিসেবে পেয়েছি। আমরা জানি যে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত যে কাল খন্ড আছে তার ঘটনা পরম্পরার কেন্দ্রবিন্দু কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যখন লেখক ‘অগ্নিকন্যা’ লিখেছেন তখন মতিয়া চৌধুরীকে ছাপিয়েও বঙ্গবন্ধু বড় হয়ে উঠেছে। ‘অগ্নি পুরুষ’ উপন্যাসে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান পুরুষ হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে। স্বকৃত নোমান বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী বঙ্গবন্ধুকে নায়ক থেকে খলনায়ক করার জন্য নানা অপপ্রচার হয়, বিশেষ করে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত। মোস্তফা কামালের ‘অগ্নিকন্যা’ উপন্যাসে মতিয়া চৌধুরীকে প্রধান রূপে উপস্থাপন করা হলেও সেখানে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান করা হয়েছে। মতিয়া চৌধুরী আলাদা কোন সত্ত্বা নয় তার কেন্দ্র বা মূল হচ্ছে বঙ্গবন্ধু। ত্রয়ী উপন্যাসের লেখক মোস্তফা কামাল বলেন, প্রায় ১৮ বছর ধরে আমি ইতিহাসভিত্তিক বই পড়েছি। আমি দেখেছি যে ১৯৪৭ থেকে ৭১ এই সময়টা আমাদের উপমহাদেশে ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি ইতিহাসের বইকে বলি কঙ্কাল। একজন কথাসাহিত্যিক সেটাকে রক্ত মাংস দিয়ে জীবন দান করে। আমি চেষ্টা করেছি জীবন দিতে। ৪৭ থেকে ৭১ এই ২৩ বছরের সময়কালের এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র বঙ্গবন্ধু। এই উত্তাল সময়টাকে ধরার চেষ্টা করেছি এই উপন্যাসে। স্বাগত বক্তব্যে শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্নধার রবিন আহসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে মোট ৪০টি বই নিয়ে এই আড্ডা হবে। আজ হচ্ছে দ্বিতীয় বই আড্ডা। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বঙ্গন্ধুকে নিয়ে যেসব বই আছে, মানুষ যেন সেসব বই সম্পর্কে আরও ভালভাবে কিছু জানতে পারে। এই জানার জন্য আমরা ভ্রাম্যমাণ বইমেলারও আয়োজন করেছি। বই আড্ডার দ্বিতীয় পর্বে ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতার আবৃত্তি।
×