ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কেশবপুরে হনুমানের খাদ্য সঙ্কট

পেটের জ্বালায় বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হানা

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৭ অক্টোবর ২০১৯

 পেটের জ্বালায় বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হানা

কবির হোসেন, কেশবপুর ॥ বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমানের চরম খাবার সঙ্কট বিরাজ করছে। খাবারের অভাবে হনুমান প্রতিনিয়ত বাসাবাড়ি খাবারের দোকান এবং হাসপাতালে রোগীর জন্য নিয়ে যাওয়া খাবার হানা দিয়ে ছিনিয়ে খাচ্ছে। আর এই ক্ষুধার জ্বালায় মানুষের হাতে হনুমান প্রায়ই আহত ও নিহত হচ্ছে। সম্প্রতি মানুষের হাতে একটি শিশু হনুমান জখম হলে হনুমান দল ওই আহত বাচ্চা নিয়ে থানায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে হামলার প্রতিবাদ করেছে। কেশবপুরের বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান সম্প্রতি তাদের অধিকার আদায়ের জন্য কেশবপুর থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর মানুষের আঘাতে আহত হয় একটি শিশু হনুমান। এরপর হনুমান দল আহত শিশু হনুমানটিকে নিয়ে কেশবপুর থানা ঘেরাও করে। তারা প্রায় এক ঘণ্টা থানার গেটের সামনে অবস্থান করে অবরোধ করে। কেশবপুর থানার ওসি মোঃ শাহিন জানান, থানার গেটের সামনে একদল হনুমান অবস্থান করায় আমি গিয়ে দেখি দুটো মা হনুমান থানার দেয়ালের গায়ে আলাদা বসে আছে। তাদের একটার কোলে একটি রক্তাক্ত আহত শিশু হনুমান। তখন আমি বুঝতে পারি বাচ্চাটিকে কেউ আহত করেছে। আর আহত করার অভিযোগ জানাতেই হনুমান দল থানায় এসেছে। তিনি আরও জানান, ২০ থেকে ২৫টি হনুমান দলবদ্ধভাবে থানার গেটের সামনে ও ডিউটি অফিসারের কক্ষে অবস্থান নেয়। আমি হনুমান দলের সামনে দাঁড়িয়ে বাচ্চা হনুমানের ওপর হামলাকারীদের বিষয়ে দেখব বলে আশ্বাস দেই। প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থানের পর কিছু খাবার দিলে তা খেয়ে হনুমান দল থানা থেকে চলে যায়। সরকারীভাবে কেশবপুরের প্রায় ৫শ’ হনুমানের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অল্প পরিমাণ খাবার সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন হনুমানের খাবারের জন্য ২ হাজার ৬৬ টাকার খাবার বরাদ্দ থাকলেও দেয়া হয় মাত্র ১২শ’ টাকার মতো। খাবার বেশি না থাকায় ৮টি পয়েন্টের জায়গায় এখন মাত্র তিনটি পয়েন্টে খাবার দেয়া হচ্ছে। সরকারীভাবে যে পরিমাণ খাবার দেয়া হচ্ছে তাতে এক পয়েন্টের হনুমানেরও পেট ভরে না। প্রয়োজনীয় খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমেই কমে যাচ্ছে কেশবপুরের ঐতিহ্যবাহী বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান।
×