ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিএমপিতে অভিযানের জন্য আর্থিক প্রণোদনা!

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ৬ অক্টোবর ২০১৯

সিএমপিতে অভিযানের  জন্য আর্থিক প্রণোদনা!

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বিরুদ্ধে আর্থিক প্রণোদনায় সফল অভিযানের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু থানার কাজে ঢিলেমি চলছে। তবে পুলিশের অভিযানের ওপর দেশের কোন বিভাগীয় শহরে এ ধরনের প্রণোদনার ব্যবস্থা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তাই নয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে এ ধরনের প্রণোদনায় অভিযানের সফলতা তুলে ধরা হলেও জেলা পুলিশের ক্ষেত্রে এ ধরনের সুযোগে কেন নেই তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। এমনকি ক্ষোভ জন্মাচ্ছে বিভিন্ন মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের মাঝে। দেশে এ ধরনের কোন প্রচলিত বিধানও নেই এমন অভিযোগ করেছে জেলা পুলিশের কয়েক উর্ধতন কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, সর্বশেষ গত জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের সফল অভিযানের নামে ১৮ সেপ্টেম্বর সিএমপি’র সেবা তহবিল হতে মোট ১৩০ জন পুলিশ সদস্য ও সিভিল স্টাফদেরে নগদ ১৪ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। যা বিভিন্ন অভিযানে সফলতার জন্য পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের প্রদান করা হয়েছে বলে সিএমপি সূত্রে জানা গেছে। অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও ভাল কাজের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সফল অভিযানের জন্য আর্থিক ও লিখিত সদন প্রদানের কথা বলা হচ্ছে সিএমপি থেকে। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি দেশের অন্যসব মেট্রো এলাকার ও জেলা পুলিশ সফল অভিযান করছে না। নাকি অপরাধ অনুসন্ধানে ও নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেতন পাচ্ছে না। আরও অভিযোগ উঠেছে সেপ্টেম্বর মাস শেষ না হতেই মাঝামাঝি সময়ে ওই মাসের সফলতা বা বিফলতার তালিকা কিভাবে হলো। এসব সভায় পুলিশ কমিশনার নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, সকল থানা ও ডিবি’কে যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়া সকল জোনের ডিসিদের স্ব স্ব জোনে মাদক ও ছিনতাই প্রতিরোধে অধিকতর তৎপর হওয়ার পরামর্শ দেন। অভিযান পরিচালনায় ডিসিদের তদারকি করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। রুজুকৃত মামলা ও অভিযোগসমূহের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশি সেবা নিশ্চিত করতে বলেন। আরও অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্যরা সরকারী বেতনস্কেলে গ্রেড অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন কিন্তু কেন তাদের সেবা তহবিল হতে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে এমন সেবা তহবিল কি জেলা পুলিশের নেই। এছাড়াও দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরগুলোতে কেন এমন প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে না। কেন বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। জেলা পুলিশ ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের মেট্রেপলিটন পুলিশকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পুলিশ রেশন নিচ্ছে, সরকারী কোয়ার্টারেও থাকছে, যারা অভিযান করছে তারা সোর্স মানিও পাচ্ছে। সরকারী গাড়ি অভিযানে ব্যবহার করছে, বেসরকারী গাড়ি কেবলমাত্র তেল খরচে ব্যবহার করছে এমনকি বেসরকারী গাড়ির চালকের বেতনও দিচ্ছে না এমন অভিযোগ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক দিনের। সর্বশেষ সিএমপি’র সেবা তহবিল হতে ২৮ জন পুলিশ সদস্য ও সিভিল স্টাফদের নগদ ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সিএমপি কমিশনারের দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মাল্টিপারপাস শেডে সিএমপি কমিশনার মোঃ মাহাবুবর রহমানের সভাপতিত্বে সেপ্টেম্বর মাসের কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিএমপি কমিশনার সিএমপিতে কর্মরত সকল স্তরের পুলিশ সদস্যদের সমস্যার কথা শোনেন এবং তাৎক্ষণিক সমাধান দেন। বিভিন্ন সমস্যর কথা শুনে তিনি সিএমপি’র সেবা তহবিল থেকে ২৮ জন পুলিশ সদস্য ও সিভিল স্টাফদের নগদ ৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। অভিযোগ উঠেছে তাৎক্ষণিক সমস্যার কথা বলা হলেও আগে থেকেই তালিকা করা হয়েছে যেসব পুলিশ সদস্যদের আর্থিক ভাবে সহায়তা করা হবে। কারণ এ ধরনের মাসিক অপরাধ সভায় শুধু নগদ অর্থই নয় সনদও প্রদান করা হয়। এছাড়াও একই দিন বেলা ১২টার সময় সিএমপি’র কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সফলতার নামে গত জুলাই ও আগস্ট মাসের মাসিক অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় জুলাই মাসে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেফতার ও ভাল কাজের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন স্তরের ৫৯ জন পুলিশ সদস্য ও সিভিল স্টাফদের নগদ ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়। এ সভায় যাদের আর্থিক ও সনদের মাধ্যমে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তারা হলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) দেবদূত মজুমদার, পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন, ডবলমুরিং থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান। এদিকে, আগস্ট মাসে পুলিশী কাজে বিভিন্ন স্তরের ৪৩ জন পুলিশ সদস্য ও সিভিল স্টাফদের নগদ ১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়। এরা হলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক, সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) দেবদূত মজুমদার, বায়জীদ থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আতাউর রহমান খন্দকার, ডবলমুরিং থানার এসআই সুমিত বড়ুয়া। এ সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এ্যান্ড অপারেশন) আমেনা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম মোস্তাক আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
×