ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের গুঞ্জন

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ৬ অক্টোবর ২০১৯

পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের গুঞ্জন

ভারতের সংবিধানে দেয়া কাশ্মীরীদের অধিকার নিয়ে যখন দেশের জনগণকে একত্রিত হওয়ার ও বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, এমন সময় নিজের মসনদ নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। দেশটিতে নতুন করে গুঞ্জন উঠেছে সেনা অভ্যুত্থানের। খবর ডন, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য নিউজ ও জি নিউজের। বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া দেশটির সকল নিয়ম তোয়াক্কা না করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে না জানিয়ে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে, সরকারী নিয়ম তথা কার্যপরিধি, গণতান্ত্রিক সীমাবদ্ধতার কোনটিই মানা হয়নি। পরে এ বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে ফাঁস হলে তা স্বীকার করে সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের ডুবন্ত অর্থনীতি ভাসিয়ে তোলার রাষ্ট্রীয় স্বার্থেই সেনাপ্রধান নিজ তাগিদে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেন। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তাহলে কেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নেই? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি দেশটির নিরাপত্তার সর্বোচ্চ বিভাগ। একইদিনে সেনাবাহিনীর দুর্ধর্ষ ১১১ ব্রিগেডের ছুটি বাতিলের নির্দেশও দেন সেনাপ্রধান। শুক্রবার রাতের মধ্যে ওই ব্রিগেডের সব সৈন্যকে ব্যারাকে ফিরতে বলেন। কেন এই হঠাৎ নির্দেশ তার কোন ব্যাখ্যাও দেয়া হয়নি। এতেই গুঞ্জনের পালে আরও হাওয়া লেগেছে। কারণ পাকিস্তানের ইতিহাসে সেনাবাহিনী প্রতিবারই ওই ব্রিগেডকে ব্যবহার করেই সরকার পতন ঘটিয়েছে। তাহলে কি ইমরানের ভাগ্যেও একই পরিণতি অপেক্ষা করছে। উল্টো সেনাপ্রধানের সাফাই গেয়ে বলেছেন, সরকার-সেনাবাহিনী একসঙ্গেই পাকিস্তানের দিন ফেরাবে। গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার নিয়ম ভেঙ্গে রাওয়ালপিণ্ডির সেনা সদর দফতরে বুধবার ১৬ থেকে ২০ জনের একটি ব্যবসায়ী দলের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান। ওই বৈঠকের বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে অংশ নেয়া এক ব্যবসায়ী বলেন, পাকিস্তানের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দ্য ন্যাশনাল এ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ব্যবসায়িক নেতাদের হয়রানি করছে বলে সেনাপ্রধানের সামনে অভিযোগ তুলে ধরেন শিল্পপতিরা। ভেঙ্গে পড়া অর্থনীতির হাল ধরতে এবং হয়রানি বন্ধে সেনাবাহিনীকে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধও জানান তারা। জবাবে বাজওয়া সেনা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন, যারা শিল্পপতিদের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। এমনকি ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়লে ব্যবসায়িক নেতাদের সরাসরি তার সঙ্গেই সাক্ষাত করতে বলেছেন। এছাড়া গুঞ্জন উঠেছে কাশ্মীর ইস্যুতে ইমরান খানের পদক্ষেপকে ভালভাবে নেননি সেনাপ্রধান বাজওয়া। এ ব্যাপারে ইমরানের ওপর বেজায় খুশি নন তিনি। এ কারণে সেনাদের ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইমরান গদি হারাতে পারেন, এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ১১১ ব্রিগেডের ছুটি বাতিল ঘোষণা করায়। কেননা এর আগে তিনবার ১১১ ব্রিগেড ব্যবহার করে নির্বাচিত সরকার ফেলে দিয়েছে পাক সেনাবাহিনী। প্রতিবারই রাওয়ালপিন্ডিতে ওই ব্রিগেড মোতায়েন করা হয়েছিল। এবারও সেখানেই এই ব্রিগেড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন বাজওয়া।
×