ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাটকাঠিতে লোকসান পোষাচ্ছেন চাষী

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৬ অক্টোবর ২০১৯

 পাটকাঠিতে লোকসান পোষাচ্ছেন চাষী

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বৃষ্টি হলে জলাধারে পানি বাড়বে এমন আশায় দেরি করে পাট কেটেছেন যশোর অঞ্চলের অনেক চাষী। কিন্তু সেভাবে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অল্প পানিতে পাট জাগ দিতে হয়েছে। ফলে ভালমতোন না পচায় পাটের আঁশের রং ভাল আসেনি। সোনালীর বদলে কালচে বর্ণ ধারণ করেছে। আর যেসব চাষীদের পাটের রং ভাল হয়নি তাদের ভাল বাজার দর মিলছে না। কম দামেই তাদের পাট বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে পাটের আঁশ থেকে কৃষক তেমন লাভবান না হলেও পাটকাঠি বিক্রির অর্থ তাদের লোকসান গোনার থেকে রেহাই দিচ্ছে। ফলন ভাল হওয়ায় প্রচুর পাটকাঠি পেয়েছেন কৃষক। সেটি বিক্রি করে ভাল দাম পাচ্ছেন তারা। একশ আঁটি পাটকাঠি ২ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। জানা গেছে, সরকারীভাবে এ বছর যশোরের বাজারে দেশী জাতের তোষা পাটের দাম মান ভেদে মণপ্রতি ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যেসব পাটের আশের রং ভাল হয়েছে সেগুলোর দাম ১৪শ’ ৫০ থেকে ১৫শ’ টাকা। আর যেসব পাটের রং কালচে বর্ণের হয়েছে সেসব পাটের বাজার দর ১৪শ’ ২৫ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এদিকে পাট চাষীদের দাবি, বাজারে পাটের দাম ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকার ওপর উঠছে না। বিশেষ করে যাদের পাটের রং ভাল হয়নি তারা পাটের কাক্সিক্ষত দাম পাচ্ছেন না। তবে এ বছর ভাল ফলন হওয়ায় পাটের আঁশ ছাড়ানোর পর পাটকাঠির পরিমাণ বেশি হয়েছে। যেটি বিক্রির অর্থ চাষীদের লোকসান বেশ খানিকটা পুষিয়ে দিচ্ছে। যশোর সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের আলমনগর এলাকার কৃষক ফারুক হোসেন জানান, এ বছর এক বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। পাট তোলার পর জাগ দিয়ে রোদে শুকানোর পর ১০ মণ পাটের আঁশ পেয়েছেন। কিন্তু অল্প পানিতে জাগ দেয়ার পর পাটের আঁশের রং কালো হয়ে গেছে। এ কারণে পাটের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছেন না। এ বছর এমনিতেই পাটের বাজার দর ভাল না। মণপ্রতি ১৩শ’ টাকার ওপরে দাম উঠছে না। তিনি বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে পাট চাষে দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কারণ জমি চাষ করা, সার ও নিড়ানির খরচের পাশাপাশি সেচ খরচটাও এবার বেশি হয়েছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জমিতে বার বার সেচ দিতে হয়েছে। তবে ফলন ভাল হলে পাটকাঠির পরিমাণটা বেশি হয়। যে কারণে পাটের বাজার দর কম হলেও পাটকাঠি বিক্রি করে পাট চাষের লোকসানটা পুষিয়ে নিতে পারব। দশ মণ পাটের আঁশ ছাড়ানোর পর প্রায় সাড়ে তিন শ’ আঁটি পাটকাঠি পেয়েছি। এসব পাটকাঠি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। বর্তমানে এক শ’ আঁটি পাটকাঠি ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিনিয়র কৃষি বিপনন কর্মকর্তার যশোর কার্যালয়ের জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, বাজারে উজ্জল সোনালী বর্ণের তোষা পাটের দাম ১৪শ’ ৫০ থেকে ১৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর যেসব পাটের রং একটু কালচে বর্ণের হয়েছে সেগুলোর দাম ১৪শ’ থেকে ১৪শ’২৫ টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে যশোর অঞ্চলের ছয় জেলায় এক লাখ ৬১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাষ হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে।
×