ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভুলতা-গোলাকান্দাইল ফ্লাইওভার

ক্যাসিনো ডন সেলিমের দখলে থাকা সওজের জমি উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৮:৫৭, ৬ অক্টোবর ২০১৯

 ক্যাসিনো ডন সেলিমের দখলে থাকা সওজের জমি উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ৫ অক্টোবর ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানের দখলের থাকা ভুলতা-গোলাকান্দাইল চারতলা বিশিষ্ট ফ্লাইওভারের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অংশের সওজের জমি দখলমুক্ত করেছে প্রশাসন। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী যুগ্ম সচিব, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান ফারুকীর নেতৃত্বে জাপান- বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং লিমিটেডের অবৈধ দখলে থাকা ১৫ শতাংশ জমির পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগমের সহায়তায় আরও কয়েকটি দোকান ঘরসহ পাকা স্থাপনা ভেঙ্গে দখলমুক্ত করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার ভূমি তরিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন, সহকারী উপ-পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন শামীম, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান, ইন্সপেক্টর শহিদুল আলম, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার এ মান্নান। এর আগে, গত সোমবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৩২ ফ্লাইটটি ছাড়ার আগ মুহূর্তে ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এর পর থেকেই ক্যাসিনো স¤্রাট সেলিম প্রধানের মালকানাধীন জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং লিমিটেডের অবৈধ দখলে সওজের ১৫ শতাংশ জমিতে পাকা স্থাপনার বিষয়টি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পত্রপত্রিকায় প্রকাশের পর অবৈধ দখলের বিষয়টি আবারও প্রশাসনের নজর কাড়ে। পরে শনিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী জাপান- বাংলাদেশ সিকিউরিটি এ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের পাকা স্থাপনা ভেঙ্গে উচ্ছেদ করা হয়। জানা গেছে, ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকা ক্রস করেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ের বাইপাস সড়কটি। এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে হাটবাজার থাকায় প্রতিদিন শত শত যানবাহন এবং হাজার হাজার মানুষের চলাফেরা করে। প্রতিদিনই এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হতো। নিত্যদিনের যানজটের কারণে ভোগান্তির যেন অন্ত ছিল না। এ যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের চার তলাবিশিষ্ট ফ্লাইওভারটি কাজ সম্পন্ন হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের একোয়ারভুক্ত মাত্র ১৫ শতাংশ জমি ক্যাসিনো ডন সেলিম মিয়া ওরফে সেলিম প্রধানের জবরদখলে থাকায় কাজটি অসমাপ্ত থেকে যায়। বেশ কয়েকবার ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন ওই জমিতে থাকা পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলেও বিশেষ ফোনের কারণে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। ফ্লাইওভারের গোলাকান্দাইল-সাওঘাট অংশে জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিংয়ের মালিক সেলিম প্রধানের দখলে থাকা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অংশের সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় ১৫ শতাংশ জমি। ওই জমিতে একটি মসজিদসহ পাকা স্থাপনা ছিল। জমিটুকু দখলে থাকায় সড়কের ওই অংশে মাত্র ১০ থেকে ১২ ফুট প্রশস্থ। সড়কের ওই অংশটুকু দিয়ে বড় ধরনের যানবাহন চলাফেলা করতে পারত না। এমনকি রিক্সা ও অটোরিক্সা চলাচল করা সম্ভব হতো না। জমি দখলমুক্ত করে সড়ক প্রশস্থ করায় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি এ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের এক কর্মকর্তা জানান, বাইরে থেকে কোম্পানীটির অবস্থা জরাজীর্ণ দেখা গেলেও ভেতরে রয়েছে বিলাস বহুল সব ইন্টেরিয়র ডিজাইন। এছাড়া ভেতরে আছে লাক্সারিয়াস সব আসবাবপত্র। তা দেখে যে কারুরই চোখ ছানাবড়া হবে।
×