ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্গাপূজা ঘিরে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ৫ অক্টোবর ২০১৯

 দুর্গাপূজা ঘিরে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, দুর্গাপূজা ঘিরে দেশজুড়ে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে র‌্যাব সদস্যদের পাহারার পাশাপাশি থাকবে রোবস্ট প্যাট্রোলিং (একসঙ্গে অনেক গাড়ি নিয়ে টহল)। শুক্রবার রাজধানীর বনানী পূজামন্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান। র‌্যাব ডিজি জানান, সারাদেশে ৩১ হাজারের বেশি মণ্ডপে পূজা উদ্যাপন হচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে সকল প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপে যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে সুইপিংয়ের কাজ করা হয়েছে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গীরা যেন কোন ধরনের অপতৎপরতা চালাতে না পারে সেজন্য র‌্যাব তৎপর রয়েছে। পাড়া-মহল্লার মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হবে। সন্দেহভাজন এলাকাতে ব্লক রেইড পরিচালিত হবে। র‌্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ জানান, সারাদেশের র‌্যাবের কমান্ডিং অফিসার ও ক্যাম্প অফিসারদের সঙ্গে পূজা উদযাপন কমিটির বৈঠক হয়েছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপে নারীরা যেন হেনস্থার শিকার না হন সেই নির্দেশনা দিয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক জানান, ইভটিজিং স্পষ্টত যৌন হয়রানি। নারীরা যেন কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হন সে বিষয় আমরা লক্ষ্য রাখব। প্রতিমা বিসর্জন হওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি র‌্যাব সদর দফতর থেকে মনিটরিং করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিসর্জন পর্যন্ত আমাদের মনিটরিং অব্যাহত থাকবে। বিসর্জনও নির্বিঘœ করতে আমাদের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। র‌্যাবের মহাপরিচালক জানান, সারাদেশে ৩১ হাজার ৮০০ মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ১১ হাজার মণ্ডপে পূজার আয়োজন হতো। এ থেকে বোঝা যায়, বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত এবং বর্তমান সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়নের সুফল সবাই সমানভাবে ভোগ করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে র‌্যাবের চলমান অভিযানে যারা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে তাদের কোন তালিকা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে র‌্যাব ডিজি জানান, শুদ্ধি অভিযানের বিষয়টি অনেক বড় বিষয়। এর সঙ্গে শুধু র‌্যাব ফোর্স জড়িত নয়। প্রধানমন্ত্রী এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। দুর্নীতিবিরোধী সামগ্রীক এ অভিযানে অনেক এজেন্সি জড়িত। আর এ অভিযানে র‌্যাব সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছে। তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে সরকারের নির্দেশে যখন যেখানে প্রয়োজন হবে তখনই অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন র‌্যাব মহাপরিচালক। সাবেক ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য (ক্যাসিনোর বিস্তারের দায় পুলিশের একার নয়) প্রসঙ্গে জানতে চাইলে র‌্যাব ডিজি জানান, এটা আসলে আমি জানি না উনি বলেছেন কিনা। একজন অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে উনার এই ধরনের মন্তব্য করার কথা নয়। এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। আপনারা জানেন, র‌্যাবের কিন্তু ম্যান্ডেট সীমিত। আমরা মাত্র সাতটা ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করি। আমাদের সর্বশেষ ম্যান্ডেট, সরকার যখন যা নির্দেশ দেবে। সুতরাং সরকার নির্দেশিত না হলে সাধারণত আমরা ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কাজ করি না। সম্রাটের অবস্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে র‌্যাব প্রধান জানান, আমি স্পেসিফিক কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না। আমরা ধের্য ধরি, সমস্ত কিছুর উত্তর পাওয়া যাবে। র‌্যাব ডিজি জানান, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিবিরোধী যে উদ্যোগ নিয়েছেন এটা সুদূরপ্রসারী। এর ফল দেশের মানুষ পাবেন, সার্বিক উন্নয়নে এর প্রভাব পড়বে। এর সুফল প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পাবে। সে জন্য আমরা অপেক্ষা করি, অধৈর্য হওয়ার কারণ নেই। এর আগে গত শনিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, এটুক আমি ক্লিয়ার করে দিতে চাই- যেহেতু অভিযানটি র‌্যাব শুরু করেছে এবং আমরা বলছি ক্যাসিনোর এগুলো র‌্যাবই করবে। ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের চারটি ক্লাবে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চালায় র‌্যাব। চারদিন পর পুলিশও ওই এলাকায় চারটি ক্লাবে অভিযান চালায়। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের অভিযান চালাতে দেখা যায়।
×