ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী রাওয়া বইমেলা উদ্বোধন

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ৫ অক্টোবর ২০১৯

 রাজধানীতে দুই দিনব্যাপী রাওয়া বইমেলা  উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রযুক্তির এই অবিশ্বাস্য উন্নতির কারণে অনেকে মনে করছে যে মুদ্রিত বইপত্রের ভবিষ্যত বোধহয় ভাল নয়। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ই-বুক প্রকৃতির যান্ত্রিক বইপত্র ছড়িয়ে পড়লেও মুদ্রিত গ্রন্থের প্রতি আকর্ষণ কিছুই কমেনি। ই-বুক মুদ্রিত বইকে বাজার থেকে উধাও করবে এ রকম মনে করার কোন কারণ নেই। নতুন প্রজন্ম এই বইমেলা থেকে উৎসাহিত হবে, বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং বই পড়ার অভ্যাস ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে, এই আশা করা যায়। আমি মনে করি, আপনারা যদি নিয়মিত এই বইমেলার আয়োজন করেন, এর পরিসর বাড়বে, এটি বিস্তৃত হয়ে বইপ্রেমিদের চাহিদা পূরণ করবে- রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে শুক্রবার সকালে দুই দিনব্যাপী ‘রাওয়া বইমেলা ২০১৯’ উদ্বোধনের সময় একথা বলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। ষষ্ঠবারের মতো রাওয়া ক্লাব আয়োজিত এ বইমেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী ও ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম আবু জাফর চৌধুরী পিএসসি (অব)। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাওয়া চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নূরুল আফসার (অব)। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এ বি সিদ্দিকী(অব)। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, দুই দিনব্যাপী বইমেলার যে আয়োজন রাওয়া করেছে তার জন্য তাদের আমি জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বইমেলার আয়োজন করে বাংলা একাডেমি ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। গ্রন্থমেলার পরিসর প্রতিবছর বাড়ছে, বই বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে, প্রকাশকের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলা একাডেমির বইমেলার বাইরেও প্রকাশকরা একক বা যৌথভাবে নানা সময়ে বইমেলার আয়োজন করে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা শহরে বইমেলার নানা রকম আয়োজন দেখা যায়। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, বইয়ের সমাদর বিন্দুমাত্র কমেনি এবং ই-বুক মুদ্রিত বইকে বাজার থেকে উধাও করবে এ রকম মনে করার কোন কারণ নেই। আপনারা এই বইমেলার আয়োজন করে একটা উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি আপনাদের বইমেলার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি এখানে দাঁড়িয়ে বলার অধিকারটুকু যাদের কল্যাণে আমি পেয়েছি সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি, সে সময় আমার নির্যাতিত মা-বোনদের প্রতি এবং সর্বোপরি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি যাদের কল্যাণে আজ এই ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ ভূখন্ডে বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি কিংবা আপনারা এই যে বইমেলার আয়োজন করেছেন বাংলা ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে সেই মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি জানাই আমার শ্রদ্ধা ও সালাম। এর আগে ফিতা কেটে দুই দিনব্যাপী বইমেলার উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। এর পর শুরু হয় উদ্বোধনী বক্তব্য। কোরান তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম আবু জাফর চৌধুরী ডিজি(পি) পিএসসি (অব) তার বক্তব্য রাখেন। আলোচনা শেষে অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন এম আবু জাফর চৌধুরীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন রাওয়া চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নূরুল আফসার (অব)। এরপর চারটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে অতিথিরা। বই চারটি লিখেছেন যথাক্রমে ফারিয়া রুমি ও কর্নেল শাহাদাৎ, এটিএম নজরুল ইসলাম (‘আমি পাইলট হতে চাই’) ও কর্নেল মোহাম্মদ শাহ্ জাহান মোল্লা পিএসসি (অব) (‘জাফলং রণাঙ্গনে’)। মেলায় সর্বমোট ৫০টি বইয়ের স্টল রয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা লেখকদের এবং ১০টি খ্যাতনামা প্রকাশনীর স্টল রয়েছে। বইমেলা আজ শনিবার পর্যন্ত চলবে এবং সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত।
×