ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাঁধুনীকে বলে দিয়েছি রান্নায় পেঁয়াজ বন্ধ ॥ দিল্লীতে শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ১০:১৩, ৫ অক্টোবর ২০১৯

 রাঁধুনীকে বলে  দিয়েছি রান্নায়  পেঁয়াজ বন্ধ ॥  দিল্লীতে  শেখ হাসিনা

ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় পুরো উপমহাদেশজুড়ে হেঁসেলে হেঁসেলে যে দুঃস্বপ্ন নেমে এসেছে, সেদিকে ইঙ্গিত করে দিল্লীর এক অনুষ্ঠানে রসিকতার সুরেই কটাক্ষ হানলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে রফতানি বন্ধের মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত সরকার যেন প্রতিবেশীদের আগে থেকে জানিয়ে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগটুকু দেয়, সে আহ্বানও তিনি জানিয়েছেন। চারদিনের ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার নয়া দিল্লীর আইটিসি মৌর্য হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃৃতা দিচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজের। এক পর্যায়ে তিনি হিন্দী ভাষায় বলতে শুরু করেন, ‘পেঁয়াজ মে থোড়া দিক্কত হো গিয়া হামারে লিয়ে। মুঝে মালুম নেহি, কিউ আপনে পেঁয়াজ বন্ধ কর দিয়া! ম্যায়নে কুক কো বোল দিয়া, আব সে খানা মে পেঁয়াজ বন্ধ কারদো।’ (পেঁয়াজ নিয়ে একটু সমস্যায় পড়ে গেছি আমরা। আমি জানি না, কেন আপনারা পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলেন। আমি রাঁধুনীকে বলে দিয়েছি, এখন থেকে রান্নায় পেঁয়াজ বন্ধ করে দাও।) অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তৃতার সাড়া দেন হাসি আর করতালিতে। কেবল বাংলাদেশ নয়, কাঠমান্ডু থেকে কলম্বো- দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশকেই পেঁয়াজের যোগানের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক ভারতের ওপর নির্ভর করতে হয় অনেকাংশে। বৃষ্টি আর বন্যায় এবার পেঁয়াজের ফলন মার খাওয়ায় ভারত সরকার গত ২৯ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ১২০ টাকায় পৌঁছায়। প্রতিদিনের রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই সামগ্রীর এমন দামে ক্রেতাদের মনে তৈরি হয় উদ্বেগ, বাজারে তৈরি হয় অস্থিরতা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার মিসর, তুরস্ক ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির পাশাপাশি অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করতে পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান শুরু করে। টিসিবির মাধ্যমে সারাদেশে ট্রাকে করে ‘ন্যায্য মূল্যে’ পেঁয়াজ বিক্রি হয়। নিজেদের বাজার সামলাতে ভারত সরকার পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক গত বুধবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, তাদের প্রব্লেম। তাদের কোন প্রব্লেম হলে দে ডোন্ট কেয়ার এ্যাবাউট দেয়ার নেইবার। তারা দাম বাড়িয়ে দেয় অথবা ট্যাক্স বসায় অথবা এক্সপোর্ট ব্যান করে।’ আর শুক্রবার বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত আগে থেকে নোটিস দিলে বাংলাদেশ অন্য দেশ থেকে কেনার ব্যবস্থা করতে পারত। ভবিষ্যতে এমনকিছু করলে আগে জানালে ভাল হয়। ভারতের শিল্প ও রেলপথমন্ত্রী পিযূস গয়াল, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, এ্যাসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অব ইনডিয়ার (এ্যাসোচাম) সভাপতি বালকৃষাণ গোয়েঙ্কাসহ দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
×