ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দূরবীনে দূরের পাহাড়

প্রকাশিত: ১২:৫১, ৪ অক্টোবর ২০১৯

দূরবীনে দূরের পাহাড়

মানুষ প্রকৃতিকে চায়ের কাপে পান করার পক্ষপাতী। আর এ কারণেই প্রকৃতির বিবিধ উপাদান তার কাপে চায়ের নির্যাস হয়ে আসে। চায়ের ঘ্রাণ যখন নাকে আসে তখন মনে হয় চোখে পাহাড় ভাসে। পাহাড়ের সঙ্গে চায়ের একটা নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। চা যেন পাহাড়-কন্যা। পাহাড়ের চা সমতলে জন্মেছে তা শোনা যায়নি এখনও। চা খেতে খেতে পাহাড়ের প্রেম উছলে পড়ে। কেউ চা চেয়ে পেতে দেরি হলেই চায়ের পিপাসায় কাতর মানুষ বলতে বাধ্য হয়, কিহে, চা আনতে সিলেট গেলে নাকি? যারা অসুখী, যারা ভোগে পরশ্রীকাতরতায় তাদের কাছে সব সময়ই দূরের পাহাড়গুলোই নীল মনে হয়। অর্থাৎ এই অসুখীদের জন্য প্রাচীনকাল হতেই পাহাড়ের নীলাভ রহস্য অতৃপ্তির একটা কারণ হয়ে রয়েছে। আর তাই বেদনার পাহাড় চেপে বসে বুকে, মনের ঘরে। রূপকথার চাঁদের বুড়িকে দেখতে গিয়ে চাঁদের পাহাড়কে পড়ে চোখে। চাঁদের পাহাড় তাই সিনেমা হয়ে শেষমেশ মনোরঞ্জন করতে এলো মানুষের। পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। পর্বত অধিক খাড়া। পাহাড় ততটা নয়। সমুদ্র সমতল হতে অনধিক এক হাজার ফুট উঁচু ভূমিকে পাহাড় বলে। পাহাড় শ্যামল হতে পারে, পাহাড় সবুজ তরুতে মায়াভরা হতে পারে। কিন্তু পর্বত শ্যামল নয়, পাথুরে এবং তরুহীন। পাহাড়ের বুকে জমা আছে ধোঁয়া, জমা আছে কান্না। পাহাড় তাই নদীর জন্ম দেয়, জন্ম দেয় ঝর্ণার। পাহাড়ের উষ্ণ জলে ছুটে চলে প্র¯্রবণ। পাহাড়ের নদী কর্ণফুলী, পাহাড় হতে ছুটে চলে ডাকাতিয়া, সাঙ্গু। পাহাড় তাই নদীমাতা। রাজার পাহাড় রানীর পাহাড় বাংলাদেশের এক ক্ষীণতনু নদী ঢেউফা। চমকে চপলা এ নদীর বুকজুড়ে জেগে ওঠা চরের পাশেই বিশাল উঁচু টিলা যাকে বলে রাজার পাহাড়। এর কোল ঘেঁষে নানা কারুকার্যে সাজানো উপজাতিদের এলাকা বাবেলাকোনা। ছবি আঁকা গ্রামের মতোই সৌন্দর্যম-িত এ স্থানটি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। মুখে মুখে প্রচলিত রয়েছে, প্রাচীনকালে কোন এক রাজার বাসস্থান ছিল এখানে আর সেই স্মৃতিতে এ পাহাড়ের নাম হয়েছে স্থানীয়দের কাছে রাজার পাহাড়। কিন্তু এ পাহাড়ের আগের সেই সৌন্দর্য এখন আর নেই। ডিসি হিল বা ডিসির পাহাড় চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট হতে এক কিলোমিটার দূরে উত্তরে নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দিরের উল্টোদিকে অবস্থিত পাহাড়টাই হলো ডিসি হিল। ইংরেজ শাসনামলের গোড়ার দিকে এখানে চাকমা রাজার বাড়ি ছিল। পরবর্তীতে এখানে চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনারের বাংলো স্থাপিত হওয়ায় কালক্রমে এই পাহাড় ডিসি হিল নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর বন্ধু চট্টগ্রামের হাবীবুল্লাহ্ বাহারের নানাবাড়িতে তামাকুম-ী লেনে থাকাকালিন এখানে প্রায়ই আসতেন অবসর কাটাতে। জাতীয় কবির এই আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে দশ এপ্রিল দুহাজার পাঁচ সালে ডিসি হিলের নতুন নামকরণ করা হয় নজরুল স্কয়ার। উনিশ শ’ সত্তর এর দশকের শেষভাগ থেকেই এখানে পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ উৎসব আয়োজিত হয়ে আসছে। বিপ্লবীর পাহাড় যেদিন চট্টগ্রামের নোয়াপাড়ার মাস্টারদা সূর্যসেন পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাবে কুকুর এবং ভারতীয়ের প্রবেশ নিষেধ লেখা দেখতে পেলেন সেদিনই ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের দামামা বেজে ওঠে রক্তে। তারই ধারাবাহিকতায় ইংরেজদের কাছ থেকে বিদ্রোহের মাধ্যমে উনিশ শ’ তিরিশ সালের বাইশে এপ্রিল বিপ্লবীরা যখন চট্টগ্রামকে কিছুদিনের জন্যে মুক্ত করে জালালাবাদ পাহাড়ে অবস্থান করছিল সে সময় সশস্ত্র ইংরেজ সৈন্যরা তাঁদের আক্রমণ করে। দুই ঘণ্টার প্রচ- যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর সত্তর থেকে এক শ’ জন এবং বিপ্লবী বাহিনীর চৌদ্দ জন সদস্য শহীদ হন। এদের মধ্যে হরিগোপাল বল (টেগরা), প্রভাস বল, নরেশ রায়, ত্রিপুরা সেন, বিটু ভট্টাচার্য, মতি কানুনগো, অশোক দত্ত, নির্মল লালা, জিতেন দাশগুপ্ত, মধুসূদন দত্ত, পুলিন ঘোষ ও অর্ধেন্দু দস্তিদারের নাম উল্লেখযোগ্য। এই জালালাবাদ পাহাড়ই বিপ্লবীদের পাহাড়। রঙধনু পাহাড় মহাচীনের ঝাংগিয়ে দাংজিয়া ল্যা-ফর্ম জিওগ্রাফিক্যাল পার্ক বিশ্বের বিস্ময় বলেই আজ পরিগণিত। উত্তর-পশ্চিম চীনের এই অঞ্চল এখন জনপ্রিয় পর্যটক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কেবলমাত্র রঙধনু পাহাড়’ এর কারণেই। এই এলাকায় পা রাখা মাত্রই চোখ ধাঁধিয়ে যায় বর্ণিল সাত রঙের তরঙ্গ বন্যায়। বেগনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লালের বাহার যেন এখানে বাকরুদ্ধ করে দেয়। এতোসব মুগ্ধতা জাগানিয়া দৃশ্য আকাশে নয়, রঙিন পাহাড়ের গায়েই। শুধু একটা পাহাড় নয়, গোটা একটা পাহাড় শ্রেণি সাত রঙের বাহারে সেজে আছে। কৃত্রিমভাবে তৈরি নয়, প্রকৃতির আজব খেয়ালে রঙধনু পর্বত সত্যিই তৈরি হয়েছে চীনে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ওই রঙিন পাহাড় তৈরি হতে সময় লেগেছে অন্তত চব্বিশ মিলিয়ন বছর। তবে পাহাড়ের গায়ে ওই বিচিত্র রঙের এই সমাহার বেলে পাথরের কারণেই। হিমালয় গঠনের অনেক আগে থেকেই এই পাহাড় তৈরি শুরু হয়েছিল। বালু-পাথরে জমাট বাঁধার সময়ে তাতে মিশে গিয়েছিল বিভিন্ন রঙের খনিজ, গাছপালার অবশেষ ইত্যাদি। সেই মিশ্রণগুলোই এই রঙিন দুনিয়া তৈরি করে। পাহাড়ের প্রাথমিক বর্ণ ছিলো লাল। পরবর্তীতে অন্য বর্ণগুলো একটির পর একটি তৈরি হয়। ম্যাজিক পাহাড় আইয়ারস রকের অপর নাম ম্যাজিক বা যাদুর পাহাড়। এর ভৌগলিক অবস্থান অস্ট্রেলিয়ায়। বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্যের জন্যেই অনেকে একে ম্যাজিক পাহাড়ও বলে থাকে। দেখতে ডিমের মত আকৃতির এ পাহাড়টির উচ্চতা তিনশ আটচল্লিশ মিটার, দৈর্ঘ সাত কিলোমিটার এবং প্রস্থ দুই কিলোমিটার। পাহাড়টির স্বাভাবিক রং লাল তবে সুর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় ঘটে অদ্ভূত যত ঘটনা। সকালে সুর্যের আলোর বিচ্ছুরণ পাহাড়ের উপর পড়লেই মনে হয় যেন আগুন ধরেছে এর গায়ে। বেগনী ও গাঢ় লাল রংয়ের শিখা বের হয়ে আসে পাহাড় থেকে। কেবল সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্ত নয় সারাদিন জুড়ে চলে রঙ বদলের এই মোহনীয় খেলা। প্রথমে হলুদ থেকে কমলা, পরে লাল ও মাঝে মাঝে বেগনী কখনওবা গুমোটকালো। অসম্ভব রহস্যের আনাগোনা পাহাড়টি জুড়ে। এ্যাডামস পিক বা আদম পাহাড় রহস্যময় আদম চূড়ার অবস্থান শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের শ্রীপাডা নামক প্রদেশে। খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম- এই চার ধর্মের অনুসারীদের কাছে অতি পবিত্র এই পাহাড়ের চূড়াটি। লাখ লাখ বছর ধরে চলে আসা যে রহস্য আজও মানুষ জানতে পারেনি তা হলেÑ চূড়ার যে স্থানে হযরত আদমের পায়ের চিহ্ন বলে কথিত, সেই স্থানে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সূর্যের আলো, আর মে থেকে নবেম্বর পর্যন্ত মেঘের ঘনঘটা বা বৃষ্টি পড়ে না। এমন আরও অনেক রহস্য আছে এই চূড়াটিকে কেন্দ্র করে। অতি চমৎকার এই চূড়াটি বছরের পর বছর অবিকল রয়ে গেছে। এর সৌন্দর্য এতটুকু ম্লান হয়নি। এ কারণে চূড়াটি বিশ্বের মানুষের কাছে পবিত্র বলে পরিচিত। পনরশ পাঁচ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে এসেছিলেন পর্তুগিজ এক নাগরিক। তিনি এ পাহাড়কে বলেছেন ‘পিকো ডি আদম’ বা ‘আদমের শৃঙ্গ’। সেই থেকে পাহাড়ের নাম আদম পাহাড়। হিন্দুরা মনে করে চূড়ায় অবস্থিত পদচিহ্নটি শিবের পায়ের, খ্রিস্টানরা মনে করে এটা যিশুর পায়ের ছাপ, বৌদ্ধরা মনে করে এটা বুদ্ধের পায়ের ছাপ। সবার ধর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় জায়গাটি সবার কাছেই শ্রদ্ধার। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ওই পায়ের চিহ্নটি সত্যিই রহস্যময়, আকারেও বিশাল। পাহাড়ের চূড়ায় আছে একটি সমতল ক্ষেত্র। সর্বপ্রথম আঠারো শ’ ষোল সালে লেফটেন্যান্ট ম্যালকম এই স্থান পরিমাপ করেন। এতে দেখা যায়, এর দৈর্ঘ্য চুয়াত্তর ফুট এবং প্রস্থ মাত্র চব্বিশ ফুট এবং মোট আয়তন সতেরো শ’ ছিয়াত্তর বর্গফুট। এর চূড়ায় রয়েছে একটি বিশাল পাথরখ- যার উচ্চতা আট ফুট। ওই পাথরের ওপরেই রয়েছে ওই পদচিহ্ন, যা দৈর্ঘ্যে আটষট্টি ইঞ্চি এবং প্রস্থে একত্রিশ ইঞ্চি। পাহাড়ের চূড়ায় যেখানে পদচিহ্ন রয়েছে সেখানে পৌঁছা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। তবে অনেক পর্যটকই ঝুঁকি নিয়ে সেখানে গিয়েছেন। তাঁরা নিজের চোখে ওই পায়ের ছাপ দেখে বিস্মিত হয়েছেন। পাহাড়ের ধর্মীয় গুরুত্ব সনাতন সম্প্রদায়ের কাছে সীতাকু-ের পাহাড় অনেক অনেক আগে সতীকু- নামে পরিচিত ছিল। এই সীতাকু- পাহাড়ের তিন শ’ পঞ্চাশ বর্গকিলোমিটারের এক বিশাল অংশের পাহাড়ি এলাকা জুড়ে আছে এক তীর্থক্ষেত্র। পাশাপাশি এখানে দুই পাহাড়ের শীর্ষস্থানে আছে দুটি মন্দিরের অবস্থান। একটি বিরুপাক্ষ মন্দির অন্যটি চন্দ্রনাথ মন্দির। চন্দ্রনাথ মন্দিরটি সমতল ভূমি থেকে তেরো শ’ ফুট উচ্চে পাহাড়ের শীর্ষদেশে অবস্থিত। এ মন্দির তথা পাহাড় একে অন্যে মিলেমিশে একাকার হয়ে চন্দ্রনাথ ধাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করে । প্রতি বছর শ্রী শ্রী শিবরাত্রি ব্রত উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রধান তীর্থস্থান হিসেবে খ্যাত চন্দ্রনাথ ধামে বসে মানুষের মিলনমেলা। আবার, মহেশখালীর মৈনাক পাহাড়ের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে আদিনাথ শিবের কাহিনী। লোককাহিনী অনুসারে মহেশখালীর মৈনাক পাহাড়ে শিবের আবির্ভাব ঘটে ত্রেতাযুগে। রাম-রাবণের যুদ্ধে শিবের আশির্বাদ লাভের জন্য রাবণ কৈলাশে যান শিবকে আনার জন্য। দেবতাদের অনুরোধে শিব রাবণকে শর্ত দেন যে, বিরতিহীনভাবে নিয়ে যেতে পারলে তিনি লঙ্কায় যেতে রাজি আছেন। শর্ত মেনে শিবকে মাথায় নিয়ে রাবণ যাত্রা শুরু করে। কিন্তু প্র¯্রাবের জন্য মৈনাক পাহাড়ে রাবণের যাত্রাবিরতি ঘটে। এতে শর্তভঙ্গ হওয়ায় শিব, মৈনাক পাহাড়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহেশখালী দ্বীপ এবং সমুদ্রের মাঝখানে আদিনাথ পাহাড়টির নাম মৈনাক পাহাড়। আদিনাথ মন্দিরটি সমুদ্রস্তর থেকে দুই শ’ আটাশি ফুট উঁচু মৈনাক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। নাথ সম্প্রদায়ের ইতিহাস থেকে জানা যায় হিন্দু-মুসলমানদের সেতুবন্ধন হিসেবে মন্দিরটি ইতিহাসের সাক্ষী। উপমহাদেশের আদি তীর্থস্থান হিসেবে প্রত্যেক হিন্দু এখানে পূজা করে। তাই মন্দিরের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মন্দির কমপ্লেক্সে আছে একটি মসজিদ ও একটি রাখাইন বৌদ্ধ বিহার। তাই অনেকে মন্দিরটিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক মনে করেন। পাহাড়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বৌদ্ধদেরও সুখস্মৃতি। ইতিহাস হতে জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব পাঁচ শ’ আশি হতে পাঁচ শ’ আটাশ সালের এই সময়ে, তৃতীয় ধন্যাবতী যুগের প্রথম রাখাইন রাজা চান্দা সুরিয়ার শাসনামলে তাঁর আমন্ত্রণে সেবক আনন্দকে নিয়ে তথাগত গৌতম বুদ্ধ আরাকানে এসেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। গৌতম বুদ্ধের সঙ্গে ছিলেন আরো পাঁচ শ’ শিষ্য। সেখানে এক ধর্ম সম্মেলনে সেবক আনন্দকে উদ্দেশ করে গৌতম ব্দ্ধু বলেছিলেন, ‘হে আনন্দ! ভবিষ্যতে পশ্চিম সমুদ্রের পূর্ব উপকূলে পাহাড়ের ওপর আমার বক্ষাস্থি স্থাপিত হবে। তখন এর নাম হবে ‘রাং-উ’।’ ‘রাং-উ’ রাখাইন শব্দ যার শাব্দিক অর্থ বক্ষাস্থি। ‘রাং-উ’ হতেই আজকের রামুর উৎপত্তি। সেই অনুসারে রামুর এই পাহাড়কে বলে রাংকুট পাহাড়। মৌর্য বংশের তৃতীয় স¤্রাট অশোক কর্তৃক স্থাপিত চুরাশি হাজার ধাতু চৈত্যের মধ্যে রামুর রাংকুট বিহারের এ চৈত্যটি অন্যতম। পাহাড়ের সঙ্গে ইতিহাসে জড়িয়ে আছে খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসও। ইতিহাসে বলে, পুরনো জেরুজালেম শহরের প্রাচীরের বাইরে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত একটি স্থানের নাম গলগাথা। নিউ টেস্টামেন্ট অনুসারে, এখানেই জগতত্রাতা যিশুখ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়। জায়গাটির অদূরে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। পরবর্তীতে যিশুর ক্রুশবিদ্ধ ও সমাধিস্থ করার স্থানকে ঘিরে গড়ে ওঠে খ্রীস্টানদের সবচেয়ে প্রাচীন উপাসনালয় সেপলক্যার চার্চ।
×