ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তারকাদের পূজার স্মৃতি

প্রকাশিত: ১৩:৪২, ৩ অক্টোবর ২০১৯

তারকাদের পূজার স্মৃতি

পূজার ঢাক আমার সঙ্গীত জীবনের বড় প্রভাব ॥ কুমার বিশ্বজিৎ পূজার আনন্দ এখন আর মণ্ডপে গিয়ে সেভাবে করা হয়ে ওঠে না। তবে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ ছিল ঢাক বাজানোর প্রতি। বড় ধরনের দুর্বলতা কাজ করত। পূজার ঢাক, মেয়েদের নূপুরের শব্দ আমার সঙ্গীত জীবনের বড় প্রভাব। এ জন্যই তোমরা একতারা বাজাইও না, দোতারা বাজাইয়ো না.. পূজা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কণ্ঠে ধারণ করি। আমার বেশিরভাগ গানে ঢাকঢোল রাখার চেষ্টা করি। পূজার সময় একবার মেলাতে হারিয়ে যাই ॥ শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় পূজা নিয়ে অনেক মজার স্মৃতি আছে শ্রাবন্তীর ঝুলিতে। বলেন, ‘পূজার স্মৃতির কথা বলতে হলে অবশ্যই বলতে হবে ছোটবেলার পূজার কথা। তখন তো অনেক আনন্দ হতো পূজায়। এখনও পূজার ছুটি শব্দটি শুনলে উত্তেজনায় লোম দাঁড়িয়ে যায়। পূজা আমাদের জন্য সেরা ও বড় উৎসব। ছোটবেলা থেকেই পূজা উপভোগ করতাম। বাড়ির সামনেই পূজা হতো। সাড়া রাত জেগে ঠাকুর দেখতাম। যখন একটু বড় হই আমাকে আর দিদিকে দূওে কোথায়ও পূজায় নিয়ে যেত না। তবে বাড়ির সামনের পূজাম-পে বেশ মজা করতাম। এবারের পূজায় পরিবার বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করব। ছোটবেলায় পূজার সময় একবার মেলাতে হারিয়ে গেছিলাম। তখন বয়স ৫-৬ বছর হবে। মেলার মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলাম। এমন সময় কান্না দেখে একটি পরিবার এগিয়ে আসেন এবং আমার পরিচয় যেনে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলেন। বাবা-মা খুব টেনশনে ছিলেন। চারদিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। সব সময় অপেক্ষায় থাকতাম পূজার নতুন জামা ও জুতার। কবে বাবা শপিং করতে নিয়ে যাবেন। পূজায় উপহার দিতে ও পেতে দুটিই ভাল লাগে। ছোটবেলায় দেখতাম বড় বড় তারকা পূজা উদ্বোধন করতেন। এখন আমিও করছি বিষয়টি খুব উপভোগ করি। পূজা সব সময় আমার কাছে একই। পূজায় পুজো পুজো গন্ধ, সিতুর খেলা ও অঞ্জলি দেয়া। প্রতি বছর পূজার জন্য অপেক্ষা করি। মাঝে মাঝে গাড়ি নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে পূজা দেখতে যাই। প্রতি বছর পূজার সময় ৮-১০টি প্রেমের প্রস্তাব পাই ॥ পায়েল মুখার্জি পূজার সময় অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। সবার সঙ্গে দেখা করা আনন্দ ভাগাভাগি করা। পূজার স্মরণীয় ও মজার ঘটনা হচ্ছে প্রেম ও চুমু। এটার অন্যরকম মজা। তা ছাড়া দশমীতে শাড়ি পরার মজাই অন্যরকম। নতুন জামা কাপড় পরা, সাজগোজ করা। পাড়ার ছেলেরা দেখবে। নতুন প্রেম হবে। তবে পূজার সময়ের প্রেম বেশি মনে পড়ে। প্রতিটি পূজায় প্রেম হয়। অনেক ছেলেই তখন লাইন মারে। আমিও চোখাচোখি করি। পূজায় নতুন নতুন প্রেম হয় আবার পূজার পর ভেঙ্গে যায়। পূজাই মানেই প্রেম। তাই পূজার উন্মাদনা অন্যরকম। কখনও কেউকে প্রেমের প্রস্তাব দেইনি। তবে প্রতি বছর পূজার সময় কম করে হলেও ৮-১০টি প্রেমের প্রস্তাব পাই। স্টেজে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হয় আর স্টেজের পাশে আমাকে নিয়ে প্রেমের প্রতিযোগিতা হয়। প্রচুর ছেলে বাড়ির সামনে কিংবা পূজাম-পের সামনে এসে তাকিয়ে থাকত। অনেক প্রমিকই ভেতরে ভেতরে প্রেম জমা রাখত। কেউ সাহস করে বলতে পারত না (হা...হা...)। পূজার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করতাম ॥ চঞ্চল চৌধুরী যখন পূজাটা উপভোগ করতাম, তখন অনেক ছোট ছিলাম। নতুন পোশাকের আনন্দ ছিল। সারা বছর অপেক্ষা করতাম পূজার জন্য, নতুন পোশাক পাব বলে এবং বার বার দর্জির দোকানে যেতাম। রীতিমতো দোকানদারও বিরক্ত হতেন। তার পরও যেতাম কারণ বছরে একবার নতুন পোশাক পাওয়া খুবই আনন্দের বিষয় ছিল। ছোটবেলার পূজা ছিল পোশাককে কেন্দ্র করে। দিনের পরিবর্তনে সেই শৈশব-কৈশোর পার হয়ে এসে এখন আমার সন্তান পূজা উৎসবের দিনগুলোতে আনন্দ করবে। এখন সেই আনন্দ পূরণ করার দায়িত্বটা আমার। এখন নিজের জন্য সেভাবে আনন্দ করা হয় না। ছোটবেলায় এক মাস আগ থেকে অপেক্ষা করতাম পূজার জন্য। সবাই সেলফি তুলতে চান ॥ মীম পূজার স্মৃতির কথা বলতে হলে অবশ্যই বলতে হবে ছোটবেলার পূজার কথা। তখন তো অনেক আনন্দ হতো। পূজায় মামাবাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম। মামার বাড়িতে পূজার আনন্দ একটু অন্যরকম হতো। পূজা মানেই সকলবেলা উঠে অঞ্জলি দেয়া। সারা দিন নতুন পোশাক পরে ঘুরে বেড়ানো এবং সবাই মিলে সারা দিন খুব মজা করি। এবার রাজশাহী পূজা করব। পূজার জন্য মঙ্গলবার রাজশাহী চলে আসি। তবে ছোটবেলার পূজা খুব মিস করি। পূজার সময় নতুন পোশাকের অপেক্ষায় থাকতাম, এখনও থাকি। তারকা হওয়ার আগের এবং পরের পূজার মাঝে কি কোন পার্থক্য দেখতে পান? ‘হ্যাঁ, কিছু পার্থক্য তো অবশ্যই আছে। আগে পূজার সময় মণ্ডপে ঘুরতাম, কেউ তেমন একটা চিনত না। কিন্তু এখন সবাই চেনে। সবাই ঘুরে ঘুরে তাকায়, কাছে আসে এবং কথা বলতে চায়। এখন তো আবার সেলফির যুগ। অনেকেই আমার সঙ্গে সেলফি তুলতে চান। অবশ্য এগুলো আমি বেশ এনজয়ই করি।’ পূজা মানেই ছেলেবেলা ॥ অপর্ণা ঘোষ ছোটবেলা ছাড়া স্মরণীয় পূজা আসলে নেই। সে সময়টাতেই পূজা বেশি উপভোগ করতাম। বড় হবার পর পূজায় মজা পাই না এবং ঢাকায় পূজার রেশ খুঁজেও পাই না। চট্টগ্রামের পূজা খুব ইনজয় করতাম। সেখানকার পূজা এখনও অনেক মিস করি। দুর্গাপূজা মানেই চট্টগ্রাম। পূজা মানেই আমার কাছে ছেলেবেলা। বাবার মৃত্যুর আগে পাঁচটি শাড়ি কিনে দেন ॥ উর্মিলা শ্রাবন্তী কর আমার জীবনে আর কোন দিন পূজা হয়ত বিশেষভাবে আসবে না। কারণ, বাবাকে হারিয়ে ভীষণ একা হয়ে গেছি। এখন পূজা আসলেই মন খারাপ হয়। বাবা মারা যাওয়ার আগে একটি স্মরণীয় স্মৃতি আছে। মৃত্যুর ছয় দিন আগে আমাকে পাঁচটি শাড়ি কিনে দেয়। সব শাড়িই ছিল আমার পছন্দের। যার কারণে পূজার সময়টা আমার জন্য এখন বেশ কষ্টের। এটি চিরজীবনের জন্য। নতুন পোশাক নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো ॥ শিপন মিত্র এবার পূজায় কোন কাজ করিনি। ডিফারেন্ট ভাবেই পূজার পরিকল্পনা করেছি। গত চার বছর পূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত ছিলাম। তবে এবার পরিবারসহ পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করতে কলকাতায় যাব। ছোটবেলায় পূজার উপহার পেতে খুবই ভাল লাগত। দশমীর সময় সালাম করলে বকশিশ পেতাম। সেই দিনগুলো খুব মিস করি। তারকা হওয়ার পর অন্যরকমভাবে সম্মান পাই। পূজাম-প গেলে সবাই খুব সম্মান করে। ছোটবেলায় কে কয়টি নতুন জামা পেল, কারটি বেশি সুন্দর প্রতিযোগিতা ছিল। খারাপ হলে অভিমান করা। এখন উপহার দিতে দিতে ক্লান্ত। কেউকে না দিতে পারলে অভিমান করে।
×