ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হিলিতে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৩৫ টাকা

প্রকাশিত: ১২:১০, ৩ অক্টোবর ২০১৯

হিলিতে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৩৫ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজার মনিটরিং এর প্রভাব পড়েছে হিলি স্থলবন্দরে। সেখানকার পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতিকেজি পেঁয়াজে দাম কমেছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। আর খুচরায় কমেছে ৪০ টাকা পর্যন্ত। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার রফতানি বন্ধের ঘোষণার পরপরই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে হিলি বন্দরের আড়তগুলো পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুদদার ও আড়তদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। এর প্রভাব পড়েছে হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলোতে। কমতে শুরু করেছে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি ও খোলা বাজারে যে পেঁয়াজ রবি, সোম ও মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা দরে, সেই পেঁয়াজ বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে বন্দরের আড়তগুলোতে প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এতে খুশি বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকাররা। আড়তগুলোতে দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে বন্দর এলাকার খোলা বাজারেও পেঁয়াজের কেজিতে কমেছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এতে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। তবে বন্দরের আড়তগুলোতে মজুদ করা পেঁয়াজ যদি বাজারে ছাড়া হয় এবং প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয় তবে দাম আরও স্বাভাবিক হয়ে আসবে এমনটাই আশা করছেন সাধারণ ক্রেতারা। হিলি স্থলবন্দরের আড়তদাররা জানান, রফতানি বন্ধ ঘোষণার পরপরই বন্দরের বেশিরভাগ আড়ত বন্ধ ছিল। সেই সঙ্গে বেড়েছিল ক্রেতা সমাগম। দুই একটি আড়ত খোলা থাকায় বেশি দামে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। তবে সব আড়ত বুধবার খোলা রাখায় পেঁয়াজের দাম কমে এসেছে বলে জানান তারা। তারা আরও জানান, আমদানিকারকরা আমাদের বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বলেছেন, তাই আমরা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আজ (বুধবার) তারা কম দামে বিক্রি করতে বলেছে আমরা তাই কম দামে বিক্রি করছি। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না এ বিষয়ে ফোনে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বাজার মনিটরিং এর জন্য নির্দেশনা আমাদের কাছে আছে। বুধবার দিনাজপুর সদরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের বৈঠক চলছে। সেই বৈঠকে যদি ব্যবসায়ীরা কম দামে পেঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে বাজার মনিটরিং এর প্রয়োজন হবে না। তবে যদি কম দামে বিক্রি না করে সেক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করা হবে। দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে ॥ সাতক্ষীরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, দেশে এখনও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে এবং কৃত্রিমভাবে পেঁয়াজের সঙ্কট সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুস সামাদ আল আজাদ। বুধবার বিকেলে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে দেশের অন্যতম পেঁয়াজ আমদানিকারী সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শন করে এ কথা বলেন তিনি। যুগ্ম সচিব আরও বলেন, দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে তাতে আগামী ১৫-২০ দিন সঙ্কট সৃষ্টির কোন কারণ নেই। আর এরই মধ্যে সরকার বিকল্প পন্থায় পেঁয়াজ আমদানির সব ব্যবস্থা করবে। এছাড়া বৃহস্পতিবার ভোমরা বন্দর দিয়ে আরও অন্তত ১৫শ’ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। যা সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফেরাবে। এ সময় সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল বলেন, ইতোমধ্যে ভোমরা বন্দরের আড়তগুলোতে মজুদ থাকা অধিকাংশ পেঁয়াজ বাজারে ছাড়া হয়েছে। এতে পেঁয়াজের মূল্য গতকালের তুলনায় কমেছে। এ সংক্রান্ত কোন সঙ্কট যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসন সব সময় মনিটরিং করছে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিমের সদস্যরা বন্দরের বিভিন্ন পেঁয়াজের আড়ত পরিদর্শন করেন এবং আড়তদারদের পেঁয়াজের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি না করে স্বল্প লাভে তা বাজারজাত করার নির্দেশনা দেন। এরপর তারা সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজারের পেঁয়াজের আড়ত পরিদর্শন ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলেন।
×