ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাংকিং খাতে বিকল্প অর্থায়ন ব্যবস্থা জরুরী

প্রকাশিত: ১২:০৯, ৩ অক্টোবর ২০১৯

ব্যাংকিং খাতে বিকল্প অর্থায়ন ব্যবস্থা জরুরী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ উন্নত দেশগুলোতে ক্রাউড ফান্ডিং বা বিকল্প অর্থায়ন ব্যবস্থা খুবই জনপ্রিয়। মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক বড় জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে অর্থসংগ্রহ করে ফান্ড গঠন করা হয় এই মাধ্যমে। ছোট ও বড় প্রকল্পের জন্য বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছ থেকে অর্থ নেয়া এ পদ্ধতিতে। এই অর্থায়নের মাধ্যমে বিশ্বের বহু প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা সফলতা পেয়েছে। তবে এ ধরনের অর্থায়নে কিছু ঝুঁকি এবং সমস্যা রয়েছে। এমনকি ক্রাউড ফান্ডিং পোর্টালে হ্যাকিংয়েরও ঝুঁকি রয়েছে। ক্রাউডফান্ডিংয়ে কোন নীতিমালা এখনও করা হয়নি। কিন্তু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ব্যাংকের আস্থা এবং গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করে এই বিষয়টি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। গতকাল বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে ‘ক্রাউড ফান্ডিং এ্যান্ড ইটস ইমপ্লিকেশনস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) আয়োজনে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম-এর মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মহাঃ নাজিমুদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিআইবিএম-এর অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। তিনি তার বক্তব্যে ব্যাংকিং খাতে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেন। গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। চার সদস্যের একটি গবেষণা দল এ গবেষণা সম্পন্ন করেন। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র প-িত; বিআইবিএম-এর প্রভাষক রাহাত বানু এবং জাপানের দশিশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক বিঞ্চু কুমার অধিকারী। গবেষণায় প্রাইমারি এবং সেকেন্ডোরি দুই ধরনের তথ্যের ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণায় দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিআইবিএম-এর প্রকাশনা থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে। গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিআইবিএম-এর নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস.এম. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিআইবিএম-এর ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা; বিআইবিএম-এর সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধূরী; বাংলাদেশ ব্যাংক-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি। বিআইবিএম-এর নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস.এম. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রকল্পের শুরুতে অর্থায়ন ঘাটতি মেটাতে ক্রাউড ফান্ডিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এ ধরনের অর্থায়নে কিছু ঝুঁকি এবং সমস্যা রয়েছে। এমনকি ক্রাউড ফান্ডিং পোর্টালে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ক্রাউড ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে মূল বিষয় বিশ্বস্ততা। যা খুব সহজে অর্জন করা সহজ নয়। এখনও এ বিষয়ে কোন রেগুলেশন তৈরি করা হয়নি। তবে এখনই উপযুক্ত সময় ক্রাউড ফান্ডিং বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। বিআইবিএম-এর মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মহাঃ নাজিমুদ্দিন বলেন, ভবিষ্যতে ক্রাউডফান্ডিং ব্যাংক ফান্ডের একটি উৎস হিসাবে পরিগণিত হতে পারে। উন্নত দেশগুলো অনেক দক্ষতার সঙ্গে এই উৎসটি ব্যবহার করে বহু প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা সফলতার সঙ্গে তৈরি করেছেন। এমনকি বাংলাদেশেও কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ক্রাউডফান্ডিং এর মাধ্যমে প্রত্যায়ন করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর আছে অপার সম্ভাবনা।
×