ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এম এইচ উল্লাহ

শাস্তিযোগ্য অপরাধ

প্রকাশিত: ১১:২৭, ৩ অক্টোবর ২০১৯

শাস্তিযোগ্য অপরাধ

যে ওষুধ মানুষের জীবন রক্ষা করে- সে ওষুধই যদি হয় নকল তবে মানুষের জীবন রক্ষা তো হবেই না বরং উল্টো মানুষের জীবন অবসান হবে- এটা যে কত অন্যায় অপরাধ তা যদি যেসব অমানুষেরা এই কাজটি করছে তারা যদি তা একবার ভেবে দেখত! মানুষের রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে অথচ এই জরুরী ওষুধ নিয়ে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী মরণ খেলায় মেতে উঠেছে এদের বিবেক বলে কোনকিছু আছে কি? পৃথিবীর আদি থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের অসুখ হলে তা নিরাময়ের জন্য ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে আসছে- কিন্তু ওষুধের অপব্যবহারের ফলে অকালে অনেক প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। আর এক শ্রেণীর নরপশু ওষুধ নিয়ে ব্যবসা করে সম্পদ আহরণ করছে। এটা কোন্ ধরনের সভ্যতা? সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে রোগ চিকিৎসার জন্য নতুন নতুন ওষুধের আবিষ্কার হয়েছে- আর তাই ওষুধ সেবন করে মানুষ অনেক দুরারোগ্য ব্যাধির হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছে, সেই অমূল্য ওষুধকে বিতর্কিত করতে ও অন্যায়ভাবে অর্থ সম্পদ গড়ে তুলতে একদল নরপিশাচ আদাজল খেয়ে লেগে গেছে। পৃথিবীর উন্নত দেশে দুরারোগ্য ব্যাধি চিকিৎসার জন্য অনেক দামী উন্নত মানের ওষুধ আবিষ্কৃত হচ্ছে, ওইসব দামী ওষুধে নকল ‘স্টিকার’ লাগিয়ে অনৈতিকভাবে প্রচুর অর্থ উপার্জন করছে মানুষ নামের এক ধরনের নরপশু। আমাদের দেশে এই নকল ওষুধ বিক্রির প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনই এই নরপশুদের বিরদ্ধে শাস্তিমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এই অপরাধ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়বে। অপরাধ জগতে যেসব অপরাধ রয়েছে তন্মধ্যে খাদ্যে ও ওষুধে ভেজাল দেয়া সর্বোচ্চ অপরাধ আর এই অপরাধের শাস্তিও সর্বোচ্চ হওয়া উচিত। জেনে বুঝে যারা এভাবে মানুষ মারছে তারা বিনা শাস্তিতে যাক এই কথা কেউ মেনে নেবে না। তাই খাদ্যে ও ওষুধে ভেজাল দিয়ে যারা জেনে বুঝে মানুষ মারছে তাদের শাস্তি সর্বোচ্চ হওয়া উচিত। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে খাদ্য আর ওষুধে ভেজাল দেয়ার জন্য মৃত্যুদ-ের বিধান রয়েছে। আমাদের দেশে আইন করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করলে যারা এই অপকর্মটি করে যাচ্ছে তারা হয়ত এই জঘন্য কাজটি করতে দ্বিধাবোধ করবে। ওষুধ শিল্পকে দেখাশোনা করার জন্য সরকারের একাধিক সংস্থা রয়েছে যার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সকল সংস্থাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ভেজাল ওষুধ তৈরির কারখানা চিহ্নিত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা নিলে এই অপরাধটি কমতে পারে। সবচেয়ে আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা। জনগণ সচেতন হলে অপরাধ শনাক্ত করা খুব সহজ হয়ে পড়বে। তাই এ ব্যাপারে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ তার অধীনস্থ সকল বিভাগ যদি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে একযোগ হয়ে এই অপরাধ দমনে মাঠে নামে তবে অপরাধীরা পার পাবে না। ঘন ঘন মোবাইল কোর্ট করে অপরাধীদের শাস্তি দিলে ও জরিমানা করলেও ওষুধে ভেজাল দেয়ার অপরাধ কমবে বলে আশা করা যায়। মানুষকে সচেতন করতে হবেÑ যাতে মানুষ ভাল-মন্দ বিচার করতে পারে। জন-সহযোগিতার কোন বিকল্প নেই। তাই আর দেরি না করে এই অপরাধ দমনের জন্য একযোগে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত। কলাবাগান থেকে
×