ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

৩ অক্টোবর, ১৯৭১;###;শাহাব উদ্দিন মাহমুদ

আমাদের সবার নামই তো এক-বাঙালী!

প্রকাশিত: ১১:২৩, ৩ অক্টোবর ২০১৯

আমাদের সবার নামই তো এক-বাঙালী!

১৯৭১ সালের ৩ অক্টোবর দিনটি ছিল রবিবার। বিমানবাহিনীর নির্ভীক অফিসার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুলতান ও তার পার্টি দুঃসাহসী অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম শহর থেকে মাইল খানেক দূরেই মদুনাঘাটের ট্রান্সফরমার ধ্বংস করে দেয়। বহুসংখ্যক বৈদ্যুতিক পাওয়ার লাইনও উড়িয়ে দেয়া হয়। এতে কাপ্তাই থেকে বিদ্যুত সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে বন্দরের জাহাজ ধ্বংসের পর দুঃসাহসী এ হামলায় শত্রুরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। তারা বুঝতে পারল যে গেরিলারা ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। অভিযান শেষ করে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুলতান ওই এলাকার অধিকাংশ গেরিলা গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সমস্যাবলী জেনে হরিণায় গিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেন। ২নং সেক্টরে পাকবাহিনীর একটি শক্তিশালী দল মুক্তিযোদ্ধাদের অনন্তপুর ও ধানীকু-া অগ্রবর্তী অবস্থানের দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনারা ভারি কামান ও মর্টারের সাহায্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ওপর প্রচ- গোলাবর্ষণ করে এবং সেইসঙ্গে পাক পদাতিক বাহিনীও আক্রমণ চালায়। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ৪০-৫০ গজের মধ্যে পৌঁছলে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারদের উপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। এতে ২৫-৩০ পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর কয়েক বীর যোদ্ধা শহীদ হন। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের চাপের মুখে অগ্রবর্তী ঘাঁটি পরিত্যাগ করে মূল ঘাঁটিতে পিছু হটে। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের মূল ঘাঁটির উপরও আক্রমণ চালালে মুক্তিযোদ্ধারা গোলন্দাজ ও মর্টারের গোলার সাহায্যে তাদের প্রতিহত করে। এই আক্রমণে পাকসেনা মুক্তিবাহিনীর চাপের মুখে টিকতে না পেরে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। এতে ৪০-৫০ পাকসেনা হতাহত হয়। ২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী অনন্তপুর ও ধানীকু-ার মধ্যে হানাদার অবস্থানের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ৬০ দখলদার সেনা নিহত এবং অনেকে আহত হয়। একইদিনে তারা একই এলাকায় শত্রু অবস্থানের উপর মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে। এই অপারেশনে তারা ৩০ শত্রু সৈন্য হত্যা এবং শত্রুদের অসংখ্য বাঙ্কার ধ্বংস করে। মুক্তিবাহিনীর একজন বীর যোদ্ধা শহীদ ও ৫ জন আহত হন। টাঙ্গাইলে মুক্তিবাহিনী ধনবাড়ীতে অবস্থানরত পাকসেনাদের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে পাকসেনাদলের অধিকাংশ সৈন্য হতাহত হয়। জামালপুরে মুক্তিবাহিনী কমলাপুর-বকশিগঞ্জ রাস্তার উপর মাইন পেঁতে এ্যামবুশ করে। পাকসেনাদের একটি গাড়ি মাইনের উপর এলে মাইন বিস্ফোরণে গাড়িটি ধ্বংস হয় এবং ৭ পাকসেনা নিহত ও ৬ জন আহত হয়। ময়মনসিংহ জেলার ভালুকার মল্লিকবাড়ী ঘাঁটি থেকে পাক বাহিনীর একটি দল তালাব এলাকায় লুট করার সময় অধিনায়ক আফছার ও কোম্পানি কমান্ডার মোমতাজ উদ্দিন খান একদল মুক্তিসেনাসহ হানাদারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ফলে ৪ পাকসেনা ও ২২ রাজাকার নিহত ও ৩ জন আহত হয়। ৮নং সেক্টরের বানপুর সাবসেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের একটি দলকে গয়েশপুরে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে ৫ পাকসেনা নিহত ও ৪ জন আহত হয়। রায়পুর থানার টিভি সেক্টরে অবস্থানরত পাকসেনাদের ওপর মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল অতর্কিত আক্রমণ চালায়। উভয়পক্ষের মধ্যে ৬ ঘণ্টাব্যাপী তুমুল সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে ৫০ পাকসৈন্য ও ৬০-৭০ রাজাকার নিহত হয় এবং ৩৪ অবাঙালী ইপিআর ও রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। অপরদিকে মুক্তিবাহিনীর ৭ বীর যোদ্ধা শহীদ হন। পাকসেনাদের একটি লঞ্চ, গোলাবারুদ ও রসদ নিয়ে সাইদাবাদ যাওয়ার পথে মুক্তিসেনাদের দ্বারা মলুগ্রামে আক্রান্ত হয়। আক্রমণের ফলে লঞ্চটির গোলাবারুদ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে ডুবে যায়। সেই সঙ্গে ১০ পাকসেনা হতাহত হয়। চার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং দুজন আহত হন। এই খবর পেয়ে পাকসেনাদের একটি শক্তিশালী দল অপর একটি লঞ্চযোগে মুক্তিফৌজের অবস্থানের দিকে অগ্রসর হয়। অগ্রসর হওয়ার পথে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আক্রমণ করেন। প্রায় ২-৩ ঘণ্টা যুদ্ধের পর অসংখ্য পাকসেনা লঞ্চ থেকে ঝাঁপিয়ে পালাবার চেষ্টা করে এবং ডুবে যায়। পাকসেনাদের ৭০-৮০ জন নিহত ও অনেক আহত হয়। লঞ্চটিরও বেশ ক্ষতি হয় এবং বহু কষ্টে বাকি সৈন্যদের নিয়ে লঞ্চটি সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়। ওইদিন বিকেল ৫টায় পাকসেনাদের ২০টি নৌকা ও ৩টি স্পীডবোট মুক্তিসেনাদের দ্বারা কসবার নিকটবর্তী এলাকায় আক্রান্ত হয়। ফলে তৃতীয় পাঞ্জাব রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল জামান ও একজন ক্যাপ্টেনসহ ১২ পাকসেনা নিহত হয় এবং তিন স্পীডবোট ও কয়েকটি নৌকা ডুবে যায়। এর ফলে এই এলাকায় পাকসেনাদের তৎপরতা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এবং তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুক্তিফৌজ ফেনীর কাছাকাছি মুইয়ারি নদী পার হয়ে পরশুরাম এবং অনন্তপুর এ প্রতিরক্ষা অবস্থান গড়ে তোলে। মরিয়া ও বিভ্রান্ত পাকিস্তানী সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানের উপর আক্রমণ করে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দারুণ সমন্বয়ের মধ্যে তীব্র জবাব দেয়া হয় এবং মর্টারসহ ছোট এবং ভারি অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর নিবিড় হামলা চালানো হয়। প্রচ- যুদ্ধের পর শত্রুরা তাদের কমরেডদের ১৯টি মৃতদেহ ফেলে চলে যায়। এই বীরত্বপূর্ণ কাজে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল জোরদার হয়। এই অপারেশনের সময় অন্যত্র তারা শত্রুসৈন্যদের সঙ্গে আরেকটি সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ৪০ শত্রুসৈন্য নিহত হয়। পাকিস্তান সরকার উপ-নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রেসনোট জারি করে। প্রেসনোটে প্রাদেশিক পরিষদের বাকি ৮৮টি শূন্য আসনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন সরকার উদ্বাস্তু পূনর্বাসনের নামে পাকিস্তান সরকারকে ১৫ কোটি ডলার সাহায্য দেয়ার জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান। সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগর্নি এক অনির্ধারিত সংক্ষিপ্ত সফরে নয়াদিল্লী আগমন করেন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে পৃথক আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন। নয়াদিল্লী ত্যাগের আগে তিনি হ্যানয়ের উদ্দেশে বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য বর্তমান রুশ-ভারত সম্পর্কের মনোভাবের ভিত্তিতে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন। ভারতে শরণার্থী ক্যাম্পের প্রতিটি ঘরের চালে ও গাছের ডালে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়ছিল। ক্যাম্পগুলোতে জায়গায় জায়গায় কতগুলো ছেলে তাদের অস্ত্র পরিষ্কার করছে। কেউ কেউ তাদের জুতার কাদা ধুয়ে ফিতে পরাচ্ছে, আবার এক জায়গায় কয়েকজন মিলে জয় বাংলা পত্রিকা পড়ছে। সবার চোখে মুখে যেন একটি ভাষাই সোচ্চার, সবার মনেপ্রাণে একই দৃঢ়তা ও প্রত্যয়। একজনকে জিজ্ঞেস করলেন ‘তোমার নাম কি?’ প্রথমে কোন উত্তর করল না। তার চোখের পলকে প্রতিবেদককে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে। কিছুক্ষণ পর একটু আত্মস্থ হয়ে বলল- ‘নাম? আবার একটু থেমে বলল, ‘আমার নাম জানেন না? আমরা তো আমাদের সবার নাম জানি। আমাদের সবার নামই তো এক-বাঙালী।’ ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত ‘দ্য সানডে স্টার’ এর সংবাদে বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভীতসন্ত্রস্ত শরণার্থীদের প্রথম দলটি আসার ৬ মাস হয়ে গেছে। ছয় মাস পরে, মার্চে ইন্দিরা গান্ধী বলেছিল, ‘তারা ফিরে যাবে, তারা অবশ্যই ফিরে যাবে।’ কিন্তু বাস্তবতা এখন ভিন্ন। ৮৩ লাখ শরণার্থীদের মধ্যে কেউ ফিরে যাচ্ছে না এবং তারা আরও ৬ মাস বা তারও পরে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এমনকি, এখনও অনেকেই সড়ক এবং নদী পথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করছে, যার বর্তমান সংখ্যা প্রতি দিন গড়ে ১৪ হাজার করে অব্যাহত আছে, ক্ষুধা, ভয় এবং গেরিলা যুদ্ধের ভয়াবহতা তাদের এদিকে আসতে বাধ্য করছে। টোকিও থেকে প্রকাশিত মাইনিচি ডেইলি নিউজ ‘জরুরী সমস্যা’ শিরোনামের সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ স্বাভাবিক অবস্থা পূনরুদ্ধার হয়, ততক্ষণ উদ্বাস্তুদের সমস্যার কোন সমাধান হতে পারে না। যুদ্ধের সম্ভবনাও দূর করা যাবে না। ইয়াহিয়া খানের সরকার প্রশাসনে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ পূনরুদ্ধার করার কথা বলছে। কিন্তু বিভ্রান্তি এখনও আছে এবং খাদ্য সঙ্কট আছে। সাহায্যদাতা জাতি জাপান পাকিস্তানে সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে যতক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক অবস্থা পূনরুদ্ধার করা না হয়। আশা করা হচ্ছে পাকিস্তানে রাজনৈতিক নিষ্পত্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে যাতে সাহায্যের প্রবাহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনরায় শুরু করা যায়। পাকিস্তানে উদ্বাস্তুদের দুঃখজনক পরিস্থিতি ও সঙ্কট কোন রাষ্ট্র উপেক্ষা করতে পারবে না। এটা মানবজাতির জন্য চিন্তার বিষয়। মুক্তিফৌজের ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে একজন প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় একজন কমান্ডোর সঙ্গে, কমান্ডো বলল ‘আপনি তো রিপোর্টার।’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ। শুনলাম মুক্তিবাহিনীর মাত্র তেরো গেরিলা যোদ্ধা আড়াই শ’ পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য মেরেছিল। কমান্ডো বললÑ আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। যদি আপনার ইচ্ছা হয়, আমার থেকেও সব বিষয়ে জানতে পারেন।’ সে বলতে থাকে গত পরশু দিন আমাদের মেজর এসে খবর দিলেন পাকিস্তানী বাহিনীর কয়েক ব্যাটেলিয়ন নিয়ে আড়াই শ’ জনের মতো সৈন্য বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চলের অদূরে অধিকৃত এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে। একথা শোনার পর আমরা সবাই তাদের খতম করতে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালাম। হানাদার বাহিনীর সঙ্গে এল-এম-জি, এস-এম-জি প্রভৃতি ছাড়াও তিন ইঞ্চি মর্টার আছে। আমরা সেইভাবে প্রস্তুত হয়ে রওনা দিলাম শত্রুর ঘাঁটির দিকে। যখন সেই জায়গাটায় পৌঁছলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা। ঠিক হলো রাত সাড়ে এগারোটার দিকে আমরা আক্রমণ চালাব। কমান্ডার আমাদের দলের দুজনকে নিয়ে শত্রুক্যাম্পের জায়গাটা পরিদর্শন করতে গেলেন। প্রায় আধঘণ্টা পরে তারা ফিরে এসে আমাদের জানালেন পরিস্থিতি আমাদেরই অনুকূল এবং আমাদের আক্রমণ চালাতে হবে, অ.ই.ঈ এই তিন পদ্ধতিতে। অ ও ই দুই দল খগএ, ঐগএ, ঝগএ সাধারণ রাইফেল নিয়ে দাঁড়াল দুুই টিলার আড়ালে। এখান থেকে শত্রুক্যাম্প মাত্র চার শ’ গজের মতো দূরত্ব। আর ঈ দলের দুইজন রকেট লাঞ্চার নিয়ে আমাদের উল্টো দিকে শত্রু ক্যাম্পকে আমাদের উভয়ের মধ্যে রেখে প্রস্তুত হয়ে রইল। ঠিক সাড়ে এগারোটা বাজতে সে দল বাদে আমাদের সবার অস্ত্র গর্জন করে উঠল। হঠাৎ আক্রমণে শত্রুসৈন্যগুলো কিছু বুঝতে না পেরে ক্যাম্পের ভেতরেই চুপ করে বসে রইল। চারদিকে নীরব। আমাদের অস্ত্রগুলোও তখন নীরব। কারণ আমাদের উপরে কড়া নির্দেশ অযথা গুলি নষ্ট করা যাবে না। হঠাৎ ওদিকে ঈ দলের যারা বসে ছিল তাদের রকেট লাঞ্চার গর্জন করে উঠল ও একসঙ্গে বহু মর্মান্তিক আর্তরব সেই ভয়াল নীরবতাকে খান খান করে তুলল। তাদের পরিকল্পনা ছিল নিঃশব্দে ক্যাম্পের পেছন দিক দিয়ে আমাদের অস্ত্রের রেঞ্জের বাইরে চলে যাবে ও সেখান থেকে দূরপাল্লার রকেট ও মর্টারের সাহায্যে আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দেবে। যখন তারা আমাদের সেই দুজনের রকেট লাঞ্চারের রেঞ্জে এসে পড়ল অমনি আমাদের পক্ষের রকেট লাঞ্চার গর্জন করে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা এগারোজন ছত্রভঙ্গ ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় শত্রুসৈন্যের উপর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের কোণঠাসা করে আনলাম। অল্পক্ষণ পরেই আমাদের কমান্ডারের আদেশে শত্রুসৈন্যরা অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করল। গুণে দেখলাম চল্লিশ জন। মৃতের সংখ্যা ২১০ জন। আর গুনিনি বলে একটু হেসে আমার দিকে তাকাল। কিন্তু লক্ষ্য করে দেখলাম সেই হাসিতে কী এক বিষন্নতার ছাপ, যেন একটু ভিজে ভিজে। পরে একটু থেমে আবার বলল, ‘না গুনে ভালই করেছিলাম। কারণ মৃতের সংখ্যা একটু বেশিই ছিল। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×