ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

প্রত্নতত্ত্ববিদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়াকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ১১:২২, ২ অক্টোবর ২০১৯

প্রত্নতত্ত্ববিদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়াকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গানের সুরে ও বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হলো প্রতœতত্ত্ববিদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকায়ারিকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রয়াত এই প্রতœতত্ত্ববিদের ১০১তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপিত হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইশরাত জাহান কাকন, সেঁজুতি নওরোজ ও অরুণা সরকার। তাদের কণ্ঠে গীত হয় ‘জগৎ জুড়ে উদার সুরে, আনন্দগান বাজে’, ‘যদি এ আমার হৃদয় দুয়ার বন্ধ রহে’, ‘গানে গানে তব বন্ধন যাক টুটে’সহ কয়েকটি গান। মেয়ে সুফিয়া আতিয়া যাকারিয়া বাবার স্মৃতির উদ্দেশে গেয়ে শোনান ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’ গানটি। মোহাম্মদ যাকারিয়াকে নিবেদিত কথনে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমাদের অনুসরণযোগ্য মানুষের সংখ্যা বিরল। আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। তিনি ছিলেন সহজ-সরল ও সৎ মানুষ। দেশকে, মানুষকে ভালবাসা ছিল তার প্রাণশক্তি। তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে অনুসরণীয় হয়ে থাকবেন। আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার মৃত্যুকে ‘অকালমৃত্যু’ অ্যাখ্যা দিয়ে কমিটির চেয়ারম্যান আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তিনি ছিলেন বিদ্বান, বিচক্ষণ ও সুশিক্ষিত মানুষ। একজন সংস্কৃতিবান মানুষ ছিলেন। একজন সংস্কৃতিবান মানুষকে আমি পরিপূর্ণ মানুষ বলে মনে করি। কিছু মানুষ আছেন যারা যতই দীর্ঘায়ু হন না কেন, তাদের মৃত্যুকে অকালমৃত্যু বলে মনে হয়। সেজন্যই ৯৭ বছর বয়সে মারা গেলেও তার মৃত্যু আমাদের কাছে অকালমৃত্যু। তিনি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে আরও কিছু গবেষণা করতেন, বই লিখতেন ও দিকনির্দেশনা দিতেন। যার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রের পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম উপকৃত হতো। তিনি আরও বলেন, একজন মানুষের জীবনযাপন কতটা সহজ হতে পারে, তা তার জীবনযাপন দেখলে বোঝা যেত। বাংলাদেশের প্রতœতত্ত্ব ও ইতিহাস নিয়ে কাজ করে তিনি মূলত মানবসভ্যতাকে এগিয়ে নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার ছোট ছেলে মারুফ শমসের যাকারিয়া বলেন, আমার বাবা ৯৭ বছরের জীবনে ৯৬ বছরই কর্মক্ষম ছিল। যে বয়সে পিতারা সন্তানদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন, সে সময়েও তিনি কাজ করেছেন নিরলসভাবে। জানার প্রতি তার অসম্ভব আগ্রহ ছিল। জ্ঞানকে ধারণ ও বিতরণেও তার আগ্রহ ছিল। তার এ গুণটি আমার কাছে অসাধারণ লাগে। স্মরণসভার আলোচনা পর্ব শেষে পরিবেশিত হয় যোগীর গান। নাটোরের দিঘাপতিয়া গ্রামের বেলাল প্রামাণিক ও তার দল পরিবেশন করেন যোগীর গান। যাতে গুরু-শিষ্যের আলাপন পরিবেশিত হয়। বেলাল প্রামাণিক ছিলেন গুরুর ভূমিকায়। ভুট্টো দাস হিসেবে বিজয় চন্দ্র হালদার, শ্যামদাস চরিত্রে দেলাল প্রামাণিক এবং যোগীনী হিসেবে অংশ নেন সাজু কবিরাজ। পাইল হিসেবে ছিলেন সিধু কবিরাজ, ইসমাইল প্রামাণিক ও শুভেন্দু হালদার। এসব আয়োজনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে আ ক ম যাকারিয়ার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোকচিত্র এবং তার রচিত গ্রন্থের একটি প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণিল আয়োজনে চ্যানেল আইয়ের জন্মদিন উদ্্যাপন ॥ ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ, প্রবাসেও বাংলাদেশ’ সেøাগানে ১৯৯৯ সালের ১ অক্টোবর পথচলা শুরু করে চ্যানেল আই। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠার গর্বিত একুশ বছরে পদার্পণ করল বেসরকারী টিভি চ্যানেলটি। আনন্দ আয়োজনে উদ্যাপিত হয় টিভি চ্যানেলটির জন্মদিন। এ উপলক্ষে চ্যানেল আইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণী দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে লিখেছেন কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। বরেণ্য লেখক সমরেশ মজুমদার ‘গর্বের একুশ বছরে চ্যানেল আই’ প্রকাশিত গ্রন্থের জন্য একটি বিশেষ লেখা লিখেছেন। ১ অক্টোবর রাত ১২টা ১ মিনিটে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে তৈরি মঞ্চে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে চ্যানেল আই পরিবারের সদস্যরা বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে প্রথম প্রহরের একটি দীর্ঘ কেক কাটেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ মজুমদার, চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্য মুকিত মজুমদার ও জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুনসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বরেণ্য ও গুণীজনরা। সকাল ১১টায় প্রধান অতিথি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুলল্লাহ, বিশিষ্টজন ও চ্যানেল আই-এর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের উপস্থিতিতে কেক কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে ২১ বছরে পর্দাপণের দিনের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর ওয়ার্দা রিহ্যাব নৃত্য পরিবেশন করেন। চ্যানেল আইকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ডিএমপি কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম, র‌্যাব ফোর্সের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, আওয়ামী মীলীগ নেতা ইউসুফ হুমায়ূন, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, নাট্যব্যক্তিত্ব কেরামত মাওলা, আবুল হায়াত, গাজী রাকায়েত, সুবর্ণা মুস্তাফা, আফসানা মিমি, গীতিকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, চিত্রতারকা ইলিয়াস কাঞ্চন, মৌসুমী, ওমর সানী, সিমলা, সঙ্গীতশিল্পী ফকীর আলমগীর, নাট্য পরিচালক সালাহউদ্দিন লাভলু, এসএ হক অলিক, ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ প্রমুখ। প্রবীণদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ মঙ্গলবার ছিল আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস। দিবসটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করে প্রবীণদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গাজীপুরের মনিপুরে অবস্থিত বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে অবস্থানরত দুই শতাধিক প্রবীণের জন্য ্িবকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়্যারম্যান এবং গিভেন্সি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়্যারমেন মোঃ খতিব অবদুল জাহিদ মুকুল। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেছেন একাডেমির ইন্সট্রাক্টর আনিসুর রহমান এবং সমন্বয় সহযোগী ছিলেন আব্দুল্লাহ বিপ্লব।
×