ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ২ অক্টোবর ২০১৯

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ১ অক্টোবর ॥ গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি ভার্সিটির ভিসি অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের দ্বাদশ দিনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর ত্রয়োদশ দিনে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা চত্বরে আয়োজিত এক প্রেস-ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি নতুন ভিসি নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিও জানায় শিক্ষার্থীরা। তবে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানায়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ আল গালিব। এ সময় কল্যাণ মিত্র, প্রিয়তা দে, রেহনুমা তাবাসসুম ঐশী, শরীফ আল রাজু, শিকদার মাহবুবসহ বহু শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিল। প্রেস-ব্রিফিংয়ে সরকার ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলে, শুধু ভিসি’র অপসারণ বা পদত্যাগ নয়, গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবি’তে বিদ্যমান সকল দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবিচারের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল দোষী ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, আন্দোলনে বিরোধিতাকারী গোষ্ঠী ও সাবেক ভিসি’র দোসররা যেন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর আর নাশকতা বা হামলার পরিকল্পনা না করতে পারে সেরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সদ্য-বিদায়ী ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার ও অবকাঠামোগত যে ক্ষতি ও ধ্বংস সাধন করে গিয়েছেন, সেগুলোরও দ্রুত পূরণ ও উন্নয়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের এ চলমান আন্দোলনে যারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন, যারা ন্যায়ের পক্ষে কলম ধরেছেন ও কথা বলেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রেস-ব্রিফিংয়ে তারা আরও বলে, দেশের সর্বস্তরে জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়িত হবে। আর এভাবেই বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে এবং বশেমুরবিপ্রবি দেশের একটি শীর্ষ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে। এদিকে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলছে আনন্দের বন্যা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গভীর রাত পর্যন্ত চলে আনন্দ মিছিল। টানা ১২ দিনের ভিসিবিরোধী আন্দোলনের পর মঙ্গলবার ভোর হতে না হতেই শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠে নতুন আমেজে। হাতে মুখে ও শরীরে রং আবির মেখে বাদ্য বাজিয়ে নেচে-গেয়ে তারা শুরু করে আনন্দ-উল্লাস। প্রেস-ব্রিফিং শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় তারা বের করে আনন্দ র‌্যালি। র‌্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে জয় বাংলা চত্বরে এসে শেষ হয়। সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নতুন ভিসির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে বলে শিক্ষার্থীরা আশা ব্যক্ত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী প্রভাষক মোঃ হুমায়ন কবির বলেছেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। আশা করছি পূজার ছুটির পর শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগ দেবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। শিক্ষার সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণার কাজ করবে। বশেমুরবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ নূরউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আন্দোলন স্থগিত হবার পরও শিক্ষার্থীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।
×