ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ক্রিকেট লীগ শুরু ১০ অক্টোবর

প্রকাশিত: ১২:১২, ১ অক্টোবর ২০১৯

জাতীয় ক্রিকেট লীগ শুরু ১০ অক্টোবর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের অন্যতম প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট আসর জাতীয় ক্রিকেট লীগ (এনসিএল) আগামী ১০ অক্টোবর শুরু হবে। সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) টুর্নামেন্ট কমিটির এক সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি আরও জানিয়েছেন এবার দেশের ৪ ভেন্যুতে এনসিএলের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবার এনসিএল শুরুর আগে থেকেই ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। জাতীয় দলের নির্বাচকরা ক্রিকেটারদের বিপ টেস্টের লেভেল অন্তত ‘১১’ না হলে খেলতে দেয়া হবে না এমন কথা ছড়িয়ে পড়ার পরই পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক তৈরি হয়। তবে নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন, বিপ টেস্টের বিষয়টি নির্বাচকরা কঠোরভাবেই দেখছেন এবং তারা চাইলে হয়ত শিথিল করতে পারেন। আর টুর্নামেন্ট কমিটি থেকে দাবি করা হয়েছে এভাবে কোন লেভেল নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। আজ সেই বিপ টেস্ট সারা দেশব্যাপীই অনুষ্ঠিত হবে। বিসিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত স্ট্রেন্থ এ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচেরা (ট্রেনার) ক্রিকেটারদের বিপ টেস্ট নেবেন। বেশ আগেই এনসিএলের ৮ দল তাদের ৩০ জনের প্রাথমিক দল জমা দিয়েছে বিসিবির কাছে। ফিটনেস টেস্টের পরই চূড়ান্ত করা হবে স্কোয়াড। অনেক আগে থেকে যারা ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে তাদের অবস্থানে এখনও পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট। তবে বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে সবসময়ই বাংলাদেশ দলকে প্রশংসা করা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেরা অবস্থানে যেতে পারেনি। গড়পড়তা পারফর্মেন্সের পেছনে অনেকেই ক্রিকেটারদের ফিটনেস ঘাটতিকে একটি কারণ হিসেবে দেখছেন। কারণ বিশ্বের সেরা দলগুলোর ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য এমনকি বিপ টেস্টে ১৪ পর্যন্ত লেভেল ধার্য করে দেয়া হয়। এবার তাই শোনা যায়, এনসিএলে ক্রিকেটারদের বিপ টেস্টে অন্তত ১১ পেতে হবে। ১১ না পেলে কোন ক্রিকেটারকে খেলার যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে না। এ বিষয়ে সোমবার বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির এক কর্মকর্তা বললেন, ‘এমন কোন লেভেল স্থির করে দেয়া হয়নি। তবে ফিটনেসের মান যাদের সেরা অবস্থানে আছে তারাই অগ্রাধিকার পাবে। নির্বাচকরা যদি চান অনেক তারকা ক্রিকেটারকে বিপ টেস্টে কম পেলেও খেলার সুযোগ দিতে পারেন।’ পরে তিনি জানান, আগামীতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য নির্বাচকরা বিপ টেস্টের লেভেল ঠিক করে দিয়েছেন ‘১২’! আর সেজন্যই বিসিবি চাইছে ঘরোয়া পর্যায়েই যেন ক্রিকেটাররা একটা ভাল মানের ফিটনেস নিয়ে উঠে আসেন। এই বিপ টেস্ট নিয়ে কয়েকজন অভিজ্ঞ ও বয়সী ক্রিকেটার গত কয়েকদিন তাদের বক্তব্য রেখেছেন। তাতে দাবি করা হয়েছে বিপ টেস্টে ১১/১২ পেলেও তার পারফর্মেন্স ম্যাচে যে অনেক ভাল থাকবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। অনেকে ৬/৭ স্কোর করেও অতীতে মাঠে গিয়ে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। আর সে কারণেই টুর্নামেন্ট কমিটির দাবি, বিপ টেস্টের স্কোর ১১ নির্ধারণ করে দেয়নি কেউ, তবে ভাল ফিটনেসের জন্য জোর দেয়া হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত কত স্কোর হলে ক্রিকেটারদের খেলতে দেয়া হবে তা পরবর্তীতেই নির্ধারণ হবে। আজ ঢাকাসহ সারাদেশেই বিপ টেস্ট দেবেন বাছাই করা ক্রিকেটাররা। এর মধ্যে মিরপুরে বিপ টেস্ট দেবেন ঢাকা বিভাগ ও ঢাকা মেট্রোপলিসের ক্রিকেটাররা। বাকি ৬ দলের তালিকাভুক্ত ক্রিকেটাররা নিজ নিজ বিভাগীয় একাডেমিতে বিপ টেস্ট দেবেন। একযোগে একদিনেই বিপ টেস্ট শেষ করার কথা বলা হয়েছে বিসিবি থেকে। নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন, বিপ টেস্টের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে সবাইকে। এ বিষয়ে তাগাদার অন্যতম কারণ হচ্ছে, ক্রিকেটাররা যখন কোন আসর শেষে বিশ্রামে যান তখনও যেন নিজের ফিটনেস ঠিক রাখতে সচেতন থাকেন। নিজামউদ্দিন বলেন,‘আমি আগেই বলেছি, একটা মান নির্ধারণ করা হয়েছে। তারপরও যদি নির্বাচকরা মনে করেন যে কাউকে নির্বাচন করবেন, তাহলে তা তাদের এখতিয়ারের মধ্যেই থাকবে। টার্গেট দেয়া হয়েছে বিপ টেস্টে ১১। আমরা ফিটনেসের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। এখন নির্বাচকরা যদি কাউকে অন্যভাবে বিবেচনা করেন, তাহলে করতে পারেন। ফিটনেস নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হচ্ছে। এটি প্লেয়ারদের পারফর্মেন্সে অন্যতম ভূমিকা পালন করে। কোচরাও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন।’ সোমবার টুর্নামেন্ট কমিটির সভা শেষে সিইও নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন ১০ অক্টোবর মাঠে গড়াবে এবারের এনসিএল। এবার খেলা হবে ৪ ভেন্যুÑ মিরপুর, ফতুল্লা, রাজশাহী ও খুলনায়। উইকেট তৈরির ক্ষেত্রেও কিছু স্পিন সুবিধার এবং কিছু পেসারদের জন্য সহায়ক করে গড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে বাজে বল সরবরাহ করা হয় এনসিএলসহ ঘরোয়া আসরগুলোয় কয়েকজন ক্রিকেটারের এমন দাবিও টুর্নামেন্ট কমিটি নাকচ করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছেন প্রথম দুই রাউন্ডে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলবেন। এরপর আগামী মাসে ভারত সফরের জন্য জাতীয় দলের ক্যাম্প হবে। তখন আর তারা এনসিএলে খেলতে পারবেন না। এ কারণে প্রথম দুই রাউন্ডে খেলা সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলবেন না। তিনি বর্তমানে ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লীগ (সিপিএল) টি২০ খেলছেন এবং সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কিছুদিন ছুটি কাটাবেন। এছাড়া সিপিএলে যাওয়া লিটন কুমার দাসেরও প্রথম রাউন্ড খেলা নিয়ে আছে সংশয়।
×