আগাছা, পরগাছামুক্ত আওয়ামী লীগ গড়তে হবে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চলমান শুদ্ধি অভিযানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের ক্লিন ইমেজ গড়ে তুলতে হবে। ক্লিন ইমেজ করতে হলে আমাদেরকে আগাছা, পরগাছামুক্ত আওয়ামী লীগ গড়ে তুলতে হবে। সেটাই বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার স্বপ্নের আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতাকর্মীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমি আপনাদের আহ্বান জানাব, আওয়ামী লীগকে বিশুদ্ধ করুন। আওয়ামী লীগ থেকে দূষিত রক্ত বের করে দিন, বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করুন। এটাই আজকে সময়ের আহ্বান। সেটাই আমাদের নেত্রীর (শেখ হাসিনা) চাওয়া। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সোমবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় দলের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটি কর্তৃক প্রকাশিত ‘শুভ জন্মদিন : অভিবাদন জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে অপকর্ম, দুর্নীতি, লুটপাট, ভূমি দখল করবে তারা আওয়ামী লীগের লোক হতে পারে না। এসকল অপকর্মের পৃষ্ঠপোষক হোক, গডফাদার হোক কিংবা মদদদাতাই হোক; দলের হলেও কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে আপোসের প্রশ্নই ওঠে না। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আজকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। দুঃসময়ের কর্মীরা আওয়ামী লীগে কোনঠাসা, সেই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের লোকের অভাব নেই, খারাপ লোকের দরকার নেই। ভাল লোকদের জন্য দরজা খুলে দিন। শেখ হাসিনা দরজা খুলে দিয়েছেন। ভাল লোকদের জন্য রাজনীতির দুয়ার খুলে দিতে হবে। আওয়ামী লীগের দরজা খুলে দিতে হবে। গুটিকয় দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজের জন্য গোটা দল (আওয়ামী লীগ) দুর্নামের ভাগীদার হতে পারে না। দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন, অনেক খেলা আছে এদেশে, অনেক চক্রান্ত আছে। এ পর্যন্ত ২০ বার নেত্রীর ওপর হামলা হয়েছে। তাকে সরিয়ে দেয়ারও চক্রান্ত আছে। কাজেই যে কোন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ শত্রুতার সমুচিত জবাব দিতে পারবে। তবে আপন ঘরে যেন শত্রু না হয়। আপন ঘরে যার শত্রু, তার শত্রুতা করার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার নেই। তাই আপন ঘরে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকার গড়ে তুলতে। জাতীয় সরকারের দাবি মামাবাড়ির আবদার। আগে বলতেন অনুমতি মেলে না। এখন অনুমতি পেয়েই রঙিন খোয়াব দেখছেন। বিএনপি নেতাদের এই ক্ষমতার রঙিন খোয়াব অচিরেই কর্পূরের মতে উবে যাবে। আওয়ামী লীগকে চিনেন না। আন্দোলন কত প্রকার ও কি কি আওয়ামী লীগ অতীতে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে করলে সেটা রাজনীতি দিয়েই মোকাবেলা করব। আর আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি সহিংসতার কোন উপাদান যুক্ত করে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমুচিত জবাব দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকট আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেন ও সহপ্রচার সম্পাদক মামুনুর রশীদ শুভ্র। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা খলিলুর রহমান।