ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোট জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার ফিফার

প্রকাশিত: ১০:১৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 ভোট জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার ফিফার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার নিয়ে একের পর এক ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ উঠেছে ভোট কারচুপি করে লিওনেল মেসিকে বর্ষসেরা করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখন তোলপাড় বিশ্ব ফুটবলাঙ্গন। তবে অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফিফা দাবি করেছে, ভোটাভুটিতে কোন অসচ্ছতা হয়নি। ফিফার একজন মুখপাত্র এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আমরা ভোটিং ডক্যুমেন্টসের সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি। নিকারাগুয়া ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন তাদের কোচ এবং অধিনায়কের স্বাক্ষরিত যে কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা দিয়েছে সেগুলোও দেখেছি। তার সঙ্গে ফলাফলের কোন অমিল পাইনি। তিনি আরও বলেন, ফেডারেশনগুলো যে কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা দিয়েছে তার সঙ্গে ফিফা ডটকমে যে তালিকা আমরা প্রকাশ করেছি সেগুলো আবারও মিলিয়ে দেখেছি আমরা। তাতে নিশ্চিত হয়েছি এখানে কোন কারসাজি করা হয়নি। আমরা নিকারাগুয়া ফুটবল ফেডারেশনকে বলেছি যে, বিষয়টা তারা যেন তদন্ত করে দেখে। তবে নিকারাগুয়ার অধিনায়ক বেরেরা টুইটারে লিখেছেন, ২০১৯ ফিফা দ্য বেস্ট-এ আমি কোন ভোটই দিইনি। আমার সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ হলে সেটা ভুল। তাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, তাহলে কেন তিনি মেসিকে ভোট দিয়েছেন। এবারও অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, আমি মেসিকে ভোট দিইনি। মূলত গত বছর আমি ভোট দিয়েছিলাম। এবার দিইনি। শুধু তাই নয়, সুদান জাতীয় দলের কোচ ড্রাভকো লোগারুসিচের ভোটও পাল্টে দেয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ফিফা বর্ষসেরার এ পুরস্কারে প্রথম পছন্দ হিসেবে ভোট দিয়েছিলেন মিসরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহকে। কিন্তু সুদান কোচ পরে জানতে পারেন, তার ভোটটা পড়েছে মেসির বাক্সে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ভোটের ফরমের ছবিও প্রকাশ করেছেন এই কোচ। এমন সমালোচনার পর অনেকের মতে, ফিফা বেস্টের জন্য একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা বা গাইড লাইন থাকা উচিত। কোনটি মানদন্ডে সেরা হিসেবে নির্বাচিত হবে? ফিফার সদস্য দেশগুলোর কোচ এবং অধিনায়কদের ভোটে সেরা নির্বাচন কখনই সঠিক হবে না। সেখানে ব্যক্তিগত পছন্দ এবং অপছন্দের প্রতিচ্ছবি সুস্পষ্ট। উদাহরণস্বরূপ যদি ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর কথা বলেছেন তারা। আফ্রিকা থেকে মোহাম্মদ সালাহকে সেরা নির্বাচনের যে দাবি এখন উঠেছে এবং ভোট কারচুপির যে অভিযোগ উঠেছে। এটাতো তিনজনের শর্ট লিস্টের পরই ওঠা উচিত ছিল। কারণ সেখানে সালাহ’র নাম ফিফা রাখেনি। তাই এখন সালাকে সেরা ফুটবলার নির্বাচনের যে দাবি মিসর ও আফ্রিকান দেশগুলো করছে এটা কতটা গ্রহণযোগ্য? তাছাড়া ওই ভোট সালাহ পেলে কী সে সেরা হতে পারতো? গত মৌসুমে (২০১৭-১৮) মেসি সেরা তিনেও ছিলেন না। অথচ সে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে উয়েফা গোল্ডেন বুট জয়ী। বার্সিলোনার হয়ে জিতেছিল ডাবলস। অন্যদিকে সালাহ কোন কিছু না জিতেই ফিফা বেস্ট-এ মেসির ওপরে থেকে তৃতীয় হয়। কারণ আফ্রিকার ভোট সালাহ পেয়েছে। একইভাবে ২০১৮-১৯ মৌসুমে রোনাল্ডো উয়েফা নেশন্স কাপ জিতেছেন, ইতালিয়ান লীগ ও সুপার কাপ জিতেছেন। ভার্জিল ভ্যান ডাইক চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছেন। কিন্তু মেসি একমাত্র ফুটবলার হিসেবে গত বছর গোলের হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বোচ্চ গোল করেছেন। ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সে মেসিই ছিলেন সেরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফিফা বেস্ট তখনই সমালোচনামুক্ত হবে যখন পৃথিবীর সেরা ১০ ফুটবল এক্সপার্ট বর্ষসেরা নির্বাচন করবেন, কোচ বা অধিনায়কের ভোটে নয়।
×