ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভুটানকে বিধ্বস্ত করে আবারও ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 ভুটানকে বিধ্বস্ত করে আবারও ফাইনালে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ ‘গোলমুখে আমাদের ফিনিশিং ভাল হয়েছে। দল ভাল খেলেছে। সুশৃঙ্খলভাবে খেলেছে ছেলেরা। এখন আমরা ফাইনালে উঠেছি। কিছুটা ক্লান্তির কারণেই হয়ত দ্বিতীয়ার্ধে গোল বেশি হয়নি।’ বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ এ্যান্ড্রু পিটার টার্নারের মন্তব্য এটি। তার কথা শুনে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সাফ অনুর্ধ-১৮ চাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার তারা কাঠমান্ডুর এপিএফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমির ম্যাচে ভুটানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে এই কৃতিত্ব দেখায়। এই আসরে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠলো লাল-সবুজরা। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত, যারা শুক্রবার একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় সেমির ম্যাচে ৪-০ গোলে হারায় মালদ্বীপকে। দলের এই পারফর্মেন্স ফাইনালেও দেখতে চান অধিনায়ক ইয়াছিন আরাফাত, ‘আজ সবাই ভাল খেলেছে। কোচের নির্দেশনায় সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে। এমন পারফর্মেন্স ধরে রাখতে চাই। ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য আমাদের।’ ভুটানের বিপক্ষে প্রথম গোল করা তানবীর বলেন, ‘এই ম্যাচে গোল করতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। ফাইনালেও গোল পেতে চাই, যেন দল জিততে পারে।’ শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরতে দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন মোহাম্মদ হৃদয়, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে ফাইনালে উঠেছি। এখন ট্রফি জিততে চাই। সবাই দোয়া চাইবেন যেন শিরোপা জিতে দেশে ফিরতে পারি।’ ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখটি বেশ অদ্ভুত বাংলাদেশ এবং ভুটানের যুব ফুটবলারদের জন্য। সাফ অনুর্ধ-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে গিয়ে এই তারিখে দু’বার দল দু’টি মুখোমুখি হয়েছে। দু’বারই জিতেছে বাংলাদেশ। তবে এখানে দুটি বৈসাদৃশ্য আছে। প্রথমবার জিতেছিল ২০১৭ সালে লীগপর্বের ম্যাচে ভুটানের মাটিতে ৩-০ গোলে। দু’বছর পর শুক্রবার আবারও জিতলো সেমিফাইনালে নেপালের মাটিতে, তবে এবার ৪-০ গোলে। শুক্রবারের জয়ের মাধ্যমে ভুটানের বিরুদ্ধে খেলা প্রতিটি ম্যাচেই শতভাগ জয়ের রেকর্ডের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোন গোল হজম না করার কৃতিত্বও ধরে রাখলো বাংলাদেশ। ২০১৫ আসরেও (২২ আগস্ট) গ্রুপপর্বেও লাল-সবুজরা জয় কুড়িয়ে নিয়েছিল ২-০ গোলে। শুক্রবার ভুটানকে গোলবন্যায় ভাসানোর ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের যুব ফুটবলারদের কাছে। দুই উইং ব্যবহার করে বারবার আক্রমণ শানায় ভুটানের রক্ষণভাগে। গোল করেন ম্যাচের ১৬ মিনিটে তানবীর হোসেন, ২৭ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, ৩২ মিনিটে মিরাজ হোসেন এবং ইনজুরি সময়ে (৯০+৩ মিনিটে) দীপক রায়। চলতি আসরে গ্রুপ ‘এ’তে ছিল নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ। গ্রুপ ‘বি’তে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ‘এ’ গ্রুপে ভুটান ৩-০ গোলে নেপালকে হারায় ও মালদ্বীপের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপসেরা হয়ে সেমিতে যায়। অন্যদিকে গ্রুপ ‘বি’তে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। এরপর ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিতে যায়। ২০১৫ সালে নেপালে বসেছিল সাফ অনুর্ধ-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর। সেবার সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু এএফসির টুর্নামেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করতেই ২০১৭ সালে অনুর্ধ-১৯ টুর্নামেন্টটি হয়ে যায় অনুর্ধ-১৮। ভুটানে অনুষ্ঠিত পাঁচ দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেপালের কাছে হেরে রানার্সআপ ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরে বাংলাদেশ। দু’বছর বাদে অনুষ্ঠিতব্য এবারের টুর্নামেন্টে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ছয় দেশ অংশ নেয়। নাম প্রত্যাহার করে নেয় পাকিস্তান। এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে ঘরের মাটিতে প্রায় তিন সপ্তাহ অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। দলে ডাক পাওয়া বেশিরভাগ খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লীগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। এখন দেখার বিষয় দুই বছর আগের ফাইনালে হারের ব্যর্থতা কাটিয়ে এবারের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপার মধুর স্বাদ পায় কি না বাংলাদেশ।
×