ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রেনের আসন ও টিকেট নিয়ে যাত্রী দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৯:১২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ট্রেনের আসন ও টিকেট  নিয়ে যাত্রী দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ জেলা শহর নীলফামারী রেলস্টেশনে ঢাকাগামী আন্তঃনগর নীলসাগর ও রাজশাহীগামী আন্তঃনগর বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকেট পাওয়া যাচ্ছেনা। একদিকে টিকেট সঙ্কট অন্যদিকে ওই দুই ট্রেনে নীলফামারীর জন্য বরাদ্দ বগি নেই। ফলে যাত্রীদের আসন নম্বর ছাড়াই স্ট্যান্ডিং টিকিট ক্রয় করতে হচ্ছে। দীর্ঘপথ যাত্রীদের দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। জেলা শহরবাসী নীলফামারী হতে সকল ট্রেনের আসন সংখ্যা ও ট্রেনের কোচ সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করেছে। নীলফামারী থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে রাতে ঢাকাগামী নীলসাগর, সকালে রাজশাহীগামী বরেন্দ্র ও খুলনাগামী রূপসা, বিকেলে রাজশাহীগামী তিতুমির ও সন্ধ্যায় খুলনাগামী সীমান্ত ট্রেন চলাচল করছে। মঙ্গলবার রেলস্টেশন মাস্টার ওবায়দুর রহমান জানান, ঢাকাগামী নীলসাগর ট্রেনে শোভন কোচের ‘ঞ’ বগিতে ২১টি ও ‘ঘ’ বগিতে ৭০টি আসন এবং এসি চেয়ার ৫টি ও এসি বার্থ ২টি রয়েছে। এর মধ্যে শোভন শ্রেণীর ‘ঞ’ বগিটি ট্রেনে নেই। এটি গত ১১ সেপ্টেম্বর মূল ট্রেন হতে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। বগিটি ড্যামেজ হয়েছে। ঠিক একইভাবে ১১ সেপ্টেম্বর রাজশাহীগামী বরেন্দ্র ট্রেনের ‘ঙ’ বগিটি বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। এখানেও বলা হয় বগিটি ড্যামেজ। বরেন্দ্র ট্রেনের নীলফামারী থেকে রাজশাহীর শোভন শ্রেণীর আসন সংখ্যা মাত্র ১৯টি। প্রথম শ্রেণীর ২টি। নীলসাগর ও বরেন্দ্র ট্রেন হতে নীলফামারীর বরাদ্দ আসনের কোচ ড্যামেজ দেখিয়ে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হলেও সেখানে নতুন কোন বগি সংযুক্ত করা হয়নি। একাধিক যাত্রী জানায়, স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি চলছে উভয় দিক থেকেই। এতে ওই ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া খুলনাগামী রূপসায় ১৫টি ও সীমান্তে ১৯টি শোভন শ্রেণীর টিকেট বরাদ্দ রয়েছে। বিকেলে রাজশাহীগামী তিতুমির এক্সপ্রেসে শোভন শ্রেণীতে টিকেট রয়েছে ১০৪টি। এইগুলোতেও চাহিদা অনুযায়ী টিকেট পাওয়া যায়না। অথচ নীলফামারীর টিকেট পার্বতীপুরে কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে নীলফামারী থেকে ঢাকা ও রাজশাহীগামী একাধিক যাত্রী জানায়, নীলফামারী জেলা শহর। এ জেলায় সকল সরকারী ও বেসরকারী দফতর রয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অনেকে নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ট্রেনকে বেছে নিয়েছে। সেখানে জেলা শহরের নীলফামারী রেলস্টেশনের হাল বড়ই করুণ। অনেক যাত্রী অভিযোগ করে জানায়, ঢাকাগামী নীলসাগর ট্রেনে আগে ইন্দোনেশিয়ার কোচ ছিল। সেই ট্রেনটি পরিবর্তন করে পঞ্চগড় ঢাকা পথে নিয়ে যাওয়া হয়। আর নীলসাগরে দেয়া হয় পুরনো কোচের রেক। তার ওপর বগিগুলো নড়বড়ে। রেলের একটি সূত্র জানায়, চিলাহাটি, ডোমার, নীলফামারী ও সৈয়দপুর হতে প্রতিদিন ঢাকাগামী যাত্রী প্রায় ছয়শত থেকে সাতশত। ঢাকা থেকেও ঠিক একই যাত্রী হয়। নীলসাগর ট্রেনটি সপ্তাহে রবিবার ও ঢাকা থেকে সোমবার বন্ধ থাকে। নীলফামারী রুটে যাত্রীর সংখ্যা ও চাপ সব সময় বেশি। অথচ পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে সকালে ও রাতে একতা এবং দ্রুতযান আন্তঃনগর ট্রেন থাকার পরেও পঞ্চগড় থেকে দুপুরে ও ঢাকা থেকে রাত ১২টা ১০ মিনিটে সেমি বিরতিহীন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস চালু করা হয়েছে। পঞ্চগড় এক্সপ্রেসটি শুরু পর থেকে লোকসানে পড়েছে। প্রতিদিন ট্রেনটি ৫ লাখ টাকা করে লোকসান গুনছে। নীলফামারী উন্নয়ন ফোরামের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ সরকার জানান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ করে যদি নীলফামারী রুটে নীলফামারী এক্সপ্রেস নামে চালানো হয় তাহলে লোকসান গুনতে হতো না। কারণ এই রুটে উভয় দিকে প্রচ- যাত্রীর চাপ। অথচ লাভজনক রুটে সেমিবিরতীহীন ট্রেন চালু করা হচ্ছেনা। নীলফামারী চেম্বারের সভাপতি মারুফ জামান বলেন, এসব ট্রেনে যাত্রী সাধারণের জন্য এক সময় পর্যাপ্ত কোচ ছিল। এখন সব কটি ট্রেনে কোচ সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে অব্যবস্থাপনা হতবাক করেছে নীলফামারী জেলা শহরের যাত্রীদের। নীলফামারী থেকে বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের ট্রেনের টিকেট ও আসন পেতে চরম দুর্ভোগ পেতে হচ্ছে। আমরা এই দুর্ভোগ হতে পরিত্রাণ পেতে ট্রেনের কোচ ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করেছি।
×