ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ জিততে হলে সবার আগে চাই আত্মবিশ্বাস, তারপর শারীরিক সক্ষমতা, তারপর দক্ষতা। এই তিনটির কোন কমতি নেই বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৮ জাতীয় ফুটবল দলের। এই অস্ত্রগুলো নিয়েই আজ তারা চূড়ান্ত ধাপে উপনীত হবার আগের ধাপটি পেরোতে চায়। সাফ অনুর্ধ-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার জন্য আজ শুক্রবার তাদের হারাতে হবে ভুটানকে। নেপালের কাঠমান্ডুর এপিএফ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হবে ম্যাচটি। একই ভেনুতে দ্বিতীয় সেমির ম্যাচটি হবে দুপুর সাড়ে ৩টায়। যাতে ২০১৫ আসরের রানার্সআপ ভারত মোকাবেলা করবে মালদ্বীপকে। সেমির ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ দলের কোচ এ্যান্ড্রু পিটার টার্নার বলেন, ‘আমরা সেমির ম্যাচে ইতিবাচক খেলাই খেলব। আমাদের প্রস্ততি-অনুশীলন খুব ভাল হয়েছে। ফাইনালে উঠতে আমি খুবই আশাবাদী। দলের খেলোয়াড়দের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে।’ এই আসরে আগে ভুটানের বিরুদ্ধে দু’বার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। জিতেছে প্রতিটিতেই। ২০১৭ আসরে ২৭ সেপ্টেম্বর লীগপর্বে বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-০ গোলে। এছাড়া ২০১৫ আসরে ২২ আগস্ট গ্রুপপর্বেও তারা জয় কুড়িয়ে নিয়েছিল ২-০ গোলে। তার মানে বাংলাদেশ ভুটানের কাছে এখন পর্যন্ত যেমন হারেনি, তেমনি গোলও হজম করেনি। মজার ব্যাপারÑ আজ ভুটানের বিরুদ্ধে সেই ২৭ সেপ্টেম্বরই আবারও মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের যুব ফুটবলারদের রুটিনটা ছিল অনেকটা এ রকম : সকাল ৮টায় তারা প্রাতরাশ সারে। তারপর চলে যায় হোটেলের পাশেই বুদ্ধি বিকাশ ট্রেনিং গ্রাউন্ডে। সেখানে তারা সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুশীলন করে। তারপর পুরো দল হোটেলে ফিরে আসে। লাঞ্চ সেরে হোটেলের সুইমিং পুলে খেলোয়াড়রা সবাই অংশ নেয় রিকভারি সেশনে। বিকেলে অনুশীলন পর্ব রাখা হয়নি। এ সময়টায় ফুটবলাররা বিশ্রাম নেয়। তারপর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত তারা টেকনিক্যাল ট্রেনিং ক্লাস করে। ২০১৫ সালে নেপালে বসেছিল সাফ অনুর্ধ-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর। সেবার সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু এএফসির টুর্নামেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করতেই ২০১৭ সালে অনুর্ধ-১৯ টুর্নামেন্টটি হয়ে যায় অনুর্ধ-১৮। ভুটানে অনুষ্ঠিত পাঁচ দেশের অংশ্রগহণে অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টের ফাইনালে নেপালের কাছে হেরে রানার্সআপ ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরে বাংলাদেশ। দু’বছর বাদে অনুষ্ঠিতব্য এবারের টুর্নামেন্টে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ছয় দেশ অংশ নেয়। নাম প্রত্যাহার করে নেয় পাকিস্তান। গ্রুপ ‘এ’তে ছিল নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ। গ্রুপ ‘বি’তে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা। এই আসরে বাংলাদেশের যুব ফুটবলাররা এক ম্যাচ হাতে রেখেই শেষ চারে নাম লেখানো নিশ্চিত করে ফেলেছিল। বাকি ছিল গ্রুপসেরা হওয়ার বিষয়টি। এক্ষেত্রে ‘বি’ গ্রুপের দল বাংলাদেশ তাকিয়েছিল ভারত-শ্রীলঙ্কার ম্যাচের দিকে। আগেই জানা ছিল এই ম্যাচে গ্রুপসেরা হতে হলে ভারতকে জিততে হবে চার গোলের ব্যবধানে। অনুষ্ঠিত এই গ্রুপের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দিলে সমস্যা তৈরি হয়। কারণ তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের গোলগড় (+৩) ও পয়েন্ট (৪) সমান। ফলে বাইলজ অনুযায়ী বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে বেছে নেয়া হয় গ্রুপসেরা ও গ্রুপ রানার্সআপকে। এতে জয়ী হয় ভারত। সেখানে তারা জিতে সেমিতে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় মালদ্বীপকে। আর গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে বাংলাদেশ শেষ চারে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় ভুটানকে। ‘এ’ গ্রুপে প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র করে স্বাগতিক নেপাল। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ভুটানের কাছে ৩-০ গোলের হারে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় এই আসরের দুইবারের শিরোপাধারীদের। তারা তাকিয়ে ছিল গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভুটানও মালদ্বীপের ফলের দিকে। মঙ্গলবার ওই ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হওয়াতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয় ভুটান। দুই ম্যাচে ড্র করেও ২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় মালদ্বীপের। অন্যদিকে গ্রুপ ‘বি’তে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। এরপর ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে মোট ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান নেয়। এই গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিতই ছিল ভারত ও বাংলাদেশের। তবে গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন আর রানার্সআপ কে হবে এর জন্য অপেক্ষা ছিল। অপেক্ষা ছিল ভারত বনাম শ্রীলঙ্কার ম্যাচের ফলের দিকে। তারপর কি হয়েছে তা সবারই জানা। এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে ঘরের মাটিতে প্রায় তিন সপ্তাহ অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। দলে ডাক পাওয়া বেশিরভাগ খেলোয়াড় প্রিমিয়ার লীগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। এখন দেখার বিষয় দুই বছর আগের এই দিনের মতো আজও সেই একই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে নাম লেখাতে পারে কি না বাংলাদেশ যুব ফুটবলাররা।
×