ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় পাসপোর্ট সরবরাহে বিলম্ব ॥ চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বগুড়ায় পাসপোর্ট সরবরাহে বিলম্ব ॥ চরম দুর্ভোগ

মাহমুদুল আলম নয়ন, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়া পাসপোর্ট অফিস থেকে নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পেয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। পাসপোর্ট সরবরাহের নির্ধারিত তারিখ অতিক্রম করে মাস পার হলেও মিলছে না পাসপোর্ট। এমনকি জরুরী পাসপোর্ট মিলছে ঘোষিত সময়মতো। পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত ফি দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দেয়ার পর নির্ধারণ করে দেয়া হয় সরবরাহের তারিখ। তবে নির্ধারিত সময়ে মিলছে না পাসপোর্ট। সরবরাহের জন্য দেয়া নির্ধারিত তারিখ পার হওয়ার পরের দিন থেকে সপ্তাহ এমনকি মাস পেরুলেও ঘুরতে হচ্ছে সাধারণ লোকজনকে। আর সময়মতো পাসপোর্ট সরবরাহ করতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়ছেন বগুড়া আঞ্চিলক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা। পাসপোর্ট অফিস বলছে, প্রধান কার্যালয়ে থেকে প্রিন্টিং জনিত সমস্যার কারণে বিলম্বে পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। তবে একাধিক সূত্র জানায়, পাসপোর্ট বইয়ের সমস্যা থাকায় প্রধান কার্যালয় থেকে ধীরগতিতে সরবরাহ আসায় এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে কোন মন্তব্য করেনি। ধীর গতিতে পাসপোর্ট সরবরাহ দেয়ায় আঞ্চলিক অফিসে প্রতিদিনই পাসপোর্ট করতে আসা লোকজনের ভিড় বাড়ছে। নির্মাণ শ্রমিক মোর্শেদুল দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর পরিবার ও দেশের টানে দু’মাস আগে বাড়ি ফিরেছিলেন। কাতারে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছেন ২ বছর ধরে। বাড়ি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কুন্দগ্রাম এলাকায়। পাসপোর্টের মেয়াদও শেষ পর্যায়ে। ভেবেছিলেন, দেশ থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করে নেবেন। প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন ঠিকই। কিন্তু পাসপোর্ট নবায়নসহ নতুন পাসোপোর্ট করতে গিয়েই বিপত্তিতে পড়েছেন। ৩১ জুলাই প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পাসপোর্ট নবায়ন তথা নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তিনি। তাকে সরবরাহের তারিখ দেয়া হয়েছিলে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে। আর এর পরেই তার ভোগান্তি শুরু। প্রায় প্রতি সপ্তাহে বগুড়া পাসপোর্ট অফিসে আসছেন। প্রতিবারই সরবরাহ কাউন্টার থেকে তাকে বলা হয়েছে আগামী সপ্তাহে আসতে। এদিকে তার ছুটির মেয়াদও শেষ। ফিরতে হবে বিদেশের কর্মস্থলে কিন্তু নবায়ানের জন্য নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেও তা না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনি। এভাবে তিনি চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত পাসপোর্ট অফিসে ধরনা দিয়েছেন। শুধু মোরশেদুল নয়, জয়ন্তি রানী ঘুরছেন তার ক্যান্সার আক্রান্ত পিতার পাসপোর্টের জন্য, চিকিৎসার জন্য যাবেন বিদেশে। সাড়ে ৩ বছরের শিশু পুত্রের চিকিৎসায় ইমার্জেন্সি ফি দিয়ে ছেলের পাসপোর্ট করতে এসে ঘুরছেন বগুড়ার মাঝিড়ার আশরাফুল। এ ধরনের শত শত মানুষ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে সঠিক সময়ে তা না পেয়ে দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, সেপ্টেম্বর থেকে পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় দু’শ পর্যন্ত নতুন আবেদন জমা হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতিদিন প্রধান কার্যালয় থেকে প্রিন্ট হয়ে সরবরাহের জন্য প্রায় ১শ’ পাসপোর্ট আসার কথা। সেখানে প্রিন্ট হয়ে সরবরাহের জন্য সপ্তাহে ১শ’ পাসপোর্ট আসছে। আবার কোন সপ্তাহ থেকে ২/৩শ’ পাসপোর্ট মিলছে। এ কারণে সরবরাহের অপেক্ষায় থাকা পাসপোর্টের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বিলম্বে পাসপোর্ট সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করে বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শলিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এটি সাময়িক সমস্যা, শীঘ্রই ই-পাসপোর্ট চালু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ডাটা ইন্ট্রিগ্রেশনসহ অন্যান্য কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। ই-পাসপোর্ট চালু হলেই সমস্যা থাকবে না।
×