ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বুকের হাড় ও পা না কেটে প্রথমবারের মতো অপারেশন করলো হৃদরোগ ইনস্টিটিউট

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বুকের হাড় ও পা না কেটে প্রথমবারের মতো অপারেশন করলো হৃদরোগ ইনস্টিটিউট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বুকের হাড় এবং পা না কেটে বাংলাদেশে এই প্রথম বাইপাস সার্জারী করা হলো জাতীয় হৃদরোগ ইনষ্টিটিউট ও হাসপাতালে। মো: আলামিন, ৫০ বৎসর বয়স, ধামরাই ঢাকা থেকে গত ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ হার্টের দুইটি ব্লক নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক ডা: আশ্রাফুল হক সিয়ামের অধীনে সার্জারী বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে গত ২৫শে সেপ্টেম্বর,২০১৯ বুধবার জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ডা: আশ্রাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে একদল তরুণ চিকিৎসক এই প্রথম বুকের হাড় এবং পা না কেটে বাইপাস সার্জারী করতে সক্ষম হয়েছেন। সাধারণত বাইপাস সার্জারীতে বাইপাস করার জন্য পা কেটে শিরা নেওয়া হয় এবং তা বুক কেটে হার্টে গ্রাফট দেওয়া হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে বুকের হাড় এবং পা না কেটে ঐ পদ্ধতিতে এই কাজটি করা হয়েছে। ডা: আশ্রাফুল হক সিয়াম বলেন, এমআইসিএস-সিএবিজি গ্যাস ইভি ঐ দুইটি আলাদা আলাদা পদ্ধতি। সাধারণত বাইপাস সার্জারীতে পায়ের গোড়ালী থেকে থাই পর্যন্ত পা কেটে শিরা নিয়ে বাইপাস করা হয়। কিন্তু ঊঠঐ এর মাধ্যমে পা না কেটে ছোট একটা ছিদ্র করে এন্ডোসকপির মাধ্যমে এই শিরা তুলা হয়। এটা একটি নতুন পদ্ধতি এর ফলে পায়ের কাটা ছিড়া কম হয়, ব্যাথা কম থাকে, ক্ষত স্থানে দাগ থাকে না, ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং রোগী দ্রুত হাটা চলা করতে পারে। এমআইসিএস-সিএবিজি মাধ্যমে বুকের হাড় না কেটে বাইপাস সার্জারী করার ফলে রোগীর হাড় জোড়া লাগার কোন ব্যাপার থাকে না, রক্তক্ষরণ কম হয়, ব্যাথা কম হয়, ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে, আইসিইইউ এবং হাসপাতালে থাকার সময় কমে যায় এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ীতে যেতে পারে এবং খরচও কমে যায়। এর আগেও -সিএবিজি গ্যাস ইভি পদ্ধতিতে ডা: সিয়াম এই হাসপাতালে বুকের হাড় না কেটে কিন্তু পা কেটে বাইপাস সার্জারী করেছেন। কিন্তু এই প্রথম বুক এবং পা দুটিই না কেটে ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে বাইপাস করা হলো। ডা: সিয়াম বলেন, রোগী আলামিন বর্তমানে সুস্থ আছেন, আজকে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করেছেন, ব্যাথাও কম আছে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শনিবার তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হবে। ডা: সিয়াম প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যার স্পেশাল বরাদ্দের জন্য এই যন্ত্রপাতি ক্রয় করা সম্ভব হয়েছে এবং গরীব রোগীদের সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। এই অপারেশন সম্পর্কে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা: রামপদ সরকার বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশে এ ধরনের অপারেশন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসাপাতালে সরকারী ব্যবস্থাপনায় হলো। এটা কার্ডিয়াক সার্জারীর জন্য অত্যন্ত সুসংবাদ। এর ফলে এ দেশের রোগীদের বিদেশে যাওয়া প্রবণতা কমবে। উল্লেখ্য, জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে গত ২৫শে আগষ্ট, ২০১৯ বুকের হাড় না কেটে প্রথম ওপেন হার্ট সার্জারী করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বুকের হাড় এবং পা না কেটে বাংলাদেশে এই প্রথম বাইপাস সার্জারী করা সম্ভব হলো।
×