ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আরও সাফল্য চান রশিদ খান

প্রকাশিত: ১২:২১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আরও সাফল্য চান রশিদ খান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে রশিদ খানের শুরুটা হয়েছে স্বপ্নের মতো। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেয় আফগানরা। ত্রিদেশীয় টি২০’র ফাইনালের পথে আরও একবার স্বাগতিকদের ধরাশায়ী করে রশিদবাহিনী। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন ২১ বছর বয়সী সেনসেশনাল এ লেগস্পিনার। কিন্তু শিরোপার ফয়সালা হয়নি। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে মিরপুরের বহু প্রতীক্ষার ফাইনাল। যেখানে প্রথমবারের মতো কেন ত্রিদেশীয় টি২০’র ট্রফির জন্য দু’দলই উন্মুখ হয়ে ছিল। স্বভাবতই হতাশা ঝরেছে রশিদের কণ্ঠে। বাংলাদেশের সঙ্গে আরও বেশি করে টেস্ট-ওয়ানডে খেলার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। কথা বলেছেন, বল হাতে নিজের সাফল্যের রহস্য, আইডল আর স্বপ্ন নিয়ে। রশিদ খান বলেন, ‘ড্রেসিং রুমে আমরা এটা নিয়েই আলোচনা করছিলাম যে রিজার্ভ ডে থাকলে কতই না ভাল হতো। ফাইনালের মতো বড় ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যেতে দেখাটা বেশ হতাশার। আশাকরি ভবিষ্যতে রিজার্ভ ডে থাকবে।’ ক্রিকেটে ছোট দেশের বড় তারকা রশিদ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের লঙ্গার ভার্সনের সিরিজগুলো হওয়া উচিত। এতে ৫০ ওভার অথবা টেস্ট ম্যাচেই বেশি ফোকাস থাকা উচিত।’ এবার মাত্র একটি টেস্ট খেলতে পেরেছে আফগানরা। তিনি মনে করেন লঙ্গার ভার্সনের ক্রিকেট নিয়মিত খেললে উপকৃত হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দু’দলই, ‘ক্রিকেট বোর্ডের এ বিষয়গুলো নিয়ে ভাবা উচিত। এটা তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হতে পারতো। তাতে করে শেখার আরও পরিধি বাড়তো, একই সঙ্গে অভিজ্ঞতা। আমার মনে হয় ৫০ ওভারের ক্রিকেট ও টেস্ট ম্যাচ খেললে দু’দলই উপকৃত হবে।’ ছোট দলগুলোর বিপক্ষে খেললে কোয়ালিটি ফাস্ট বোলিংয়ের ধারটা পাওয়া যায় না বলেই আক্ষেপটা বেশি রশিদ খানের। বিশেষ করে আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মতো দেশের বিপক্ষে। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে টি২০’র জায়গায় বেশি বেশি ওয়ানডে, টেস্ট খেলতে আগ্রহী, আফগান অধিনায়ক, ‘আমরা শেষ ৫ বছরে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র দুবার খেলেছি। তাদের বিপক্ষে আরও বেশি খেলতে পারলে তাদের শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা সম্পর্কে ধারণা হতো। এর ভাল উদাহরণ বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনেকবার ওরা খেলেছে বলেই বিশ্বকাপে এমন দারুণ কিছু উপহার দিতে পেরেছে।’ বল হাতে নিজের পারফর্মেন্সে খুশি রশিদ খান আরও বলেন, ‘আমি আমার বোলিংয়ে কোন পরিবর্তন আনতে চাই না। সবসময় নিজের যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে সেটা দিয়ে বল করার চেষ্টা করি। সেটা যে ফরমেটেই হোক না কেন। বোলিংয়ে পরিবর্তন আনতে গেলেই তা বোলিংয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে।’ তিনি বলেন, আপনাকে যে কোন পরিস্থিতির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। যেমন টেস্ট ম্যাচে ২০ ঘণ্টায় এক উইকেট নেব কিংবা কখন দুই ঘণ্টায় তিন উইকেট কিংবা এক ঘণ্টায় দুই উইকেট নেব। কিন্তু আমি যদি চিন্তা করি, আমিতো ভাল বোলার কেন আমি এক ঘণ্টায় দুই উইকেট নেব। আমি পাঁচ-ছয়টা উইকেট নেব নিজেকে চাপ দেই, তবে ভাল বল করা সম্ভব নয়।’ তুখোড় রশিদ খান জানান, বোলিংয়ের জন্য তিনি মুরলিধরন ও ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মুরলিধরন এবং ওয়ার্নকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, টেস্টের জন্য বল করতে হলে কিভাবে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। তারা দু’জনই আমাকে একটাই পরামর্শ দিয়েছেন যে, নিজেকে কখনও পরিবর্তন করো না। সবধরনের পরিস্থিতিতেই শান্ত থাকবে। শুধু সঠিক এরিয়াতে লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করাতে মনোযোগ দেবে, এখানেই তোমাকে উন্নতি করতে হবে। ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে, লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে বল করবে। আমার মনের মধ্যে বিষয়টি গেঁথে গেছে এবং আমি এটার ওপরেই জোর দেই।’ আইপিএলের সুবাদে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখার আগেই তারকায় পরিণত হওয়া রশিদের ঝলক অব্যাহত থাকে জাতীয় দলের জার্সিতেও। আফগানিস্তানের হয়ে মাত্র ৬৮ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ১৩১ উইকেট। ৪২ টি২০তে ৮১। তিন টেস্টে তার ঝুলিতে শিকার সংখ্যা ২০।
×