ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষসেরার পুরস্কার প্রাপ্য ছিল রোনাল্ডোর!

প্রকাশিত: ১২:২০, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বর্ষসেরার পুরস্কার প্রাপ্য ছিল রোনাল্ডোর!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেকটা বিস্ময় জাগিয়েই এবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব জিতেছেন লিওনেল মেসি। ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো পাবেন না, এটা অনেকটা অনুমিতই ছিল! তবে রেসে এগিয়ে ছিলেন লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইক। কিন্তু সোমবার রাতে ইতালির মিলানে হওয়া অনুষ্ঠানে ষষ্ঠবারের মতো ফিফাসেরা হয়েছেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ভোটাভুটিতে এমন হলেও অনেকের মতে ‘আবেগে’র কারণে সেরা হয়েছেন মেসি। তবে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে জুভেন্টাসের বড় এক কর্মকর্তার কথাতে। ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন এই ক্লাবেই খেলেন রোনাল্ডো। তারা দাবি করেছে, এবার ফিফা সেরা হওয়ার যোগ্য ছিলেন সিআর সেভেনই! জুভেন্টাসের স্পোর্টিং ডিরেক্টর ফ্যাবিও প্যারাটিসি মনে করেন, বিচারকরা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মতে ২০১৯ সালে রোনাল্ডো যা অর্জন করেছেন তাতে পুরস্কারটা তারই প্রাপ্য ছিল। রোনাল্ডোর অর্জন সামনে এনে সাক্ষাতকারে প্যারাটিসি বলেন, এবারের পুরস্কার নিয়ে আমরা হতাশ। মেসির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আমরা মনে করি গত মৌসুমে উয়েফা নেশন্স লীগ, ইতালিয়ান সিরি’এ, ইতালিয়ান সুপার কাপ জয় ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স করায় এই পুরস্কার রোনাল্ডোরই প্রাপ্য ছিল। গত মৌসুমে অনেকটা একক নৈপুণ্যে বার্সিলোনাকে স্প্যানিশ লা লিগা জেতান মেসি। তবে কাতালানদের হয়ে ব্যর্থ ছিলেন অন্যান্য আসরে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে ও কোপা ডেল রে’র ফাইনালে হারে মেসির দল বার্সা। আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকাতেও শিরোপা জিততে পারেননি। তবে বার্সার হয়ে মেসি পুরো মৌসুমে ৫১ ম্যাচে করেন ৫০ গোল। আর ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৮ ম্যাচ খেলে ৫৪ গোল করেন। মূলত র‌্যাঙ্কিং পয়েন্টে পিছিয়ে থাকায় হারতে হয়েছে রোনাল্ডোকে। শুধু তাই নয়, ভার্জিলের পেছনে থেকে তৃতীয় হতে হয় তাকে। জুভেন্টাসের হয়ে গত মৌসুমে ৪৩ ম্যাচে ২৮ গোল করেন রোনাল্ডো। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আগেই অনেকটা আঁচ করা গিয়েছিল এবার সেরা হতে পারছেন না রোনাল্ডো। তাইতো তিনি তুরিনে থাকলেও পাশের শহর মিলানে হওয়া বর্ষসেরা অনুষ্ঠানে যাননি। তবে পর্তুগীজ তারকার এমন হিনম্মন্যতায় চটেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। জানা গেছে, সোমবার বিকেলেও রোনাল্ডো ফিফার কর্মীদের কাছে কথা দিয়েছিলেন তিনি অনুষ্ঠানে আসবেন। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার অনুপস্থিতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মিলান থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে থাকেন রোনাল্ডো। এই বাস্তবতা বিচারে অনুষ্ঠানে তার না থাকা আরও বেশি প্রশ্ন তুলেছে। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানে না গিয়ে ঘরে বসে ইনস্টাগ্রামে রোনাল্ডো নিজের ছবি পোস্ট করেন এবং তাতে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন। সেখানে সিআর সেভেন লিখেছেন, ধৈর্য আর অধ্যবসায় হচ্ছে দুটি জিনিস, যেগুলো পেশাদারকে অপেশাদারের থেকে আলাদা করে। কারও একার পক্ষে সবকিছু করা হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে যা যা দরকার সেগুলো করতেই হবে। এখন যেটি অনেক বড়, সেটি শুরুতে কিন্তু ছোটই ছিল। মনে রাখবেন, রাতের পর সবসময়ই দিন আসে। রোনাল্ডো না আসায় ফিফা সেরা একাদশ ঘোষণার সময় রোনাল্ডোর নাম বলেনি। তবে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনো নিজের অপছন্দের কথা কোনভাবেই গোপন রাখেননি। তিনি স্পষ্টভাবেই মেসিকে পুরস্কারের যোগ্য বলেন। বর্ষসেরা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রোনাল্ডোর না থাকা এই প্রথম নয়। গত বছরও তিনি অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। সেবার ফিফাসেরা হন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মডরিচ।
×